ISF in Bhangar : উত্তপ্ত আইএসএফ কর্মীদের ‘শেল্টার’ জমি ও জীবিকা বাঁচাও কমিটির, পঞ্চায়েত ভোটের আগে নয়া সমীকরণ আরাবুল গড়ে?

ISF in Bhangar : বর্তমানে মাছিভাঙা গ্রামে আত্মগোপন করে রয়েছেন বহু আইএসএফ কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূলের অত্যাচারেই তাঁরা বর্তমানে বাড়ি ছাড়া।

ISF in Bhangar : উত্তপ্ত আইএসএফ কর্মীদের ‘শেল্টার’ জমি ও জীবিকা বাঁচাও কমিটির, পঞ্চায়েত ভোটের আগে নয়া সমীকরণ আরাবুল গড়ে?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 22, 2023 | 3:54 PM

কলকাতা : ধর্মতলা কাণ্ডের পরেই গ্রেফতার হয়েছেন বহু আইএসএফ (ISF) কর্মী। থমথমে পরিস্থিতি গোটা ভাঙড়েই। এদিকে রবিবার সকালেই আবার ভাঙড়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের (Trinamool Leader Arabul Islam) বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার হয়েছে বোমা-অস্ত্র। গ্রেফতার হয়েছেন আরও তিন আইএসএফ কর্মী। যা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। আইএসএফ অভিযোগ করছে, আরাবুল বাহিনীর ভয়ে ঘর ছাড়া তাদের বহু কর্মী। আশ্রয় নিয়েছেন ভাঙড়ের জমি ও জীবিকা বাঁচাও কমিটির ছাতার তলায়। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড বা পাওয়ার স্টেশন তৈরির সময় এই জমি ও জীবিকা বাঁচাও কমিটির নেতৃত্বে আন্দোলন বারে বারে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল। এই কমিটিই পরবর্তীতে তৃণমূলের খাস তালুকে আরাবুল বাহিনীকে রীতিমতো পর্যুদস্ত করে ছেড়েছিল। বর্তমানে এই কমিটির সঙ্গে আইএসএফের ওঠাবসা নিয়ে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের গন্ধ পাচ্ছে পঞ্চায়েত ভোটের আগে। এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের।  

‘আরাবুলের ভয়ে ঘর ছাড়া’

বর্তমানে মাছিভাঙা গ্রামে আত্মগোপন করে রয়েছেন বহু আইএসএফ কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূলের অত্যাচারেই তাঁরা বর্তমানে বাড়ি ছাড়া। এমনকী আরাবুল বাহিনীকে মদত দিচ্ছে খোদ পুলিশ-প্রশাসন। এদিন সকালে যে বোমা-বন্দুক উদ্ধার হয়েছে তা সবই আরাবুলের বলে দাবি তাঁদের। এই শিবিরেই আত্মগোপন করে রয়েছেন আইএসএফ কর্মী আবু হোসেন। তিনি বলেন, “এখানে এসেছি আত্মগোপন করার জন্য। ওরা এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। পুলিশ অত্যাচার করছে। বাইরের লোকজন এসেও তাণ্ডব চালাচ্ছে।” রবি সকালে আরাবুলের বাড়ির কাছের জমি থেকে উদ্ধার হওয়া বোমা-অস্ত্র আইএসএফ কর্মীদের বলে দাবি করেছে তৃণমূল। দাবি করেছেন খোদ আরাবুলের ছেলে হাকিবুল ইসলাম। তবে তৃণমূলের দাবি মানতে নারাজ আইএসএফ কর্মীরা। আবু হোসেনের স্পষ্ট দাবি, “সবাই জানে বোমা মানেই আরাবুল। আমাদের হাতে বোমা-মেশিন কোনওদিনই দেখবেন না।”

একই সুর আর এক ঘর ছাড়া আইএসএফ কর্মী মোক্তার আলি মোল্লার গলাতেও। তিনি আবার এক সময় আরাবুল শিবিরেই ছিলেন। কিন্তু, নওশাদের হাত ধরে বদলেছেন জার্সি। এদিন তিনি বলেন, “প্রাণের দায়ে এখনে এসে আছি। গেলেই তো পুলিশ দিয়ে মার খাওয়াবে। আগে আরাবুল গোষ্ঠীর ছিলাম। এখন ভাইজানের দলে আছি। গরিব মানুষ ঘর পায় না, সুবিধা পায় না। সে কারণেই আমরা তৃণমূল ছেড়েছি। আরাবুলের সঙ্গে লড়াই করতে গেলে জমি কমিটিকে পাশে দরকার। তাই আমরা এখন জমি কমিটির আশ্রয়ে রয়েছি।” যদিও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, “এটা তো দাদাগিরির জায়গা নয়। মানুষের আশীর্বাদ না পেয়ে গাজোয়ারি করে দখল করতে যাওয়া ওগুলো চলবে না। মানুষের প্রতিরোধ হবে। তার পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।” 

পঞ্চায়েত ভোটের আগে নয়া রাজনৈতিক সমীকরণের গন্ধ? 

আইএসএফ কর্মীদের আশ্রয় দিলেও খাতায়-কলমে ‘ভাইজানের’ দলের সঙ্গে জোট নেই বলে জানাচ্ছেন জমি ও জীবিকা বাঁচাও কমিটির নেতারা। তবে তলায় তলায় তৃণমূল বিরোধী শক্তি হিসাবে একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে ভাঙড়ের ছোট ছোট রাজনৈতিক শক্তিগুলি। আর তাতেই অস্বস্তি বাড়ছে শাসক শিবিরের। এদিনের সামগ্রিক চিত্র দেখে এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের। জমি ও জীবিকা বাঁচাও কমিটির নেতা মহম্মদ নিজামউদ্দিন মোল্লা বলেন, “আরাবুলের হার্মাদ বাহিনী গোটা এলাকার মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ শানাচ্ছে। আগে আইএসএফ এখানে ছিল না। জমি কমিটি ২০১৭ সাল থেকে এখানে ছিল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। পঞ্চায়েত ভোটেও আমাদের লড়াইয়ের প্রভাব দেখা যাবে।”