রাজ্যের রেহাই, পশ্চিমবাংলায় হচ্ছে না ইয়াসের ল্যান্ডফল
রবিবার দিঘা থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ। ওমান যার নাম রেখেছে ইয়াস (Yaas)। আরবি শব্দ ইয়াসের অর্থ ধংস। শুধু অভিধানিক অর্থই নয়, এই ঘূর্ণিঝড় যে প্রকৃতপক্ষেই দুঃখ বয়ে নিয়ে আসছে, তার ইঙ্গিত দিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর (India Meteorological Department)।
ইয়াসের ল্যান্ডফল কোথায়?
রবিবার দিঘা থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ। ওমান যার নাম রেখেছে ইয়াস। আরবি শব্দ ইয়াসের অর্থ দুঃখ। শুধু অভিধানিক অর্থই নয়, এই ঘূর্ণিঝড় যে প্রকৃতপক্ষেই দুঃখ বয়ে নিয়ে আসছে, তার ইঙ্গিত দিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা সোমবার আরও শক্তি সঞ্চয় করে প্রবল থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে ইয়াস। শুধু তাই নয়, এখনও পর্যন্ত ইয়াসের ল্যান্ডফল নিয়ে যে সময়সূচির কথা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, তাও অনেকটা এগিয়ে আসতে পারে বলে আশঙ্কা।
বুধবার বিকেল কিংবা সন্ধ্যায় নয়, বঙ্গোপসাগরীয় উপকূলবর্তী অঞ্চলে ইয়াস আছড়ে পড়তে পারে বুধবার দুপুরেই। ঠিক কোথায় হবে ইয়াসের ল্যান্ডফল? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ওড়িশার বালেশ্বরে হবে ইয়াসের ল্যান্ডফল। এখনও পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের যে অভিমুখ বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণে এসেছে, তাতে অল্পের জন্য রক্ষা পাবে পশ্চিমবাংলা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়ার মতো জেলায় ভারী বারিধারা নামলেও কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং মুর্শিদাবাদে প্রভাব তুলনামূলক কম থাকবে বলেই পূর্বাভাস। যদিও বুধবারে ইয়াসের ল্যান্ডফলে বিজ্ঞানীদের বাড়তি চিন্তা বাড়িয়েছে পূর্ণিমা।
ভরা কোটালে ভয়াবহ হতে পারে ইয়াস!
আবাহবিদদের আশঙ্কা গতি বাড়িয়ে ইয়াস পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগেই স্থলভাগে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হবে। বুধবার সকাল ৯টা সাড়ে ৯টা থেকেই পূর্ণিমা। তখন সমুদ্র প্রাকৃতিক নিয়মেই উত্তাল থাকে। এরপর ঘূর্ণিঝড়ের সংযুক্তিকরণ ঘটলে পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে চলে যাবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ঠিক ১২ বছর আগে এই একই কারণে আয়লার তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গিয়েছিল গ্রামের পর গ্রাম।
ঝুঁকি নেবেন না, ধৈর্য ধরুন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশঙ্কা ইয়াসের প্রভাব পড়বে রাজ্যের ২০ জেলায়। আমফানের থেকেও বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি। রাজ্যবাসীর কাছে তাঁর অনুরোধ, ‘জীবন আগে। নিজে না বাঁচলে পরিবার বাঁচবে না। তাই কোনও রকম ঝুঁকি নেবন না। ৭২ ঘণ্টা ধৈর্য ধরুন।’ বিপর্যয় মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই তৎপর হয়েছে নবান্ন।
বিপর্য মোকবিলায় কী কী প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য?
* ইয়াস পরবর্তী বিপর্যয় মোকাবিলায় এক হাজার বিশেষ টিম গঠন
* টেলিকম পরিষেবাকে সচল রাখতে কাজ করবে ৫০০টি বিশেষ টিম
* ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জেলায় তৈরি করা হয়েছে ৪০০০ রিলিফ সেন্টার
* বিপদসীমার কাছাকাছি থাকা প্রায় ১০ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে
* সিইএসসি-কে আগাম প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ
* নবান্ন এবং উপান্ন ভবনে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম, থাকবেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
♦♦♦ ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় নবান্নের তরফে প্রকাশ করা হল হেল্পলাইন নম্বর। ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে যে কোনও বিপদে পড়লে ফোন করুন এই নম্বরগুলিতে ১০৭০ এবং ০৩৩-২২১৪৩৫২৬।