Primary Recruitment: ‘বীরভূমে পেটো বাঁধলে কত নম্বর পাওয়া যেত?’ জানতে চাইলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
Primary Recruitment Case: অভিযোগ, কনফিডেন্স সেকশনের নামে বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে আজব নম্বর বন্টন করা হয়েছে। ইন্টারভিউয়ের ফুল মার্কস ৫, প্রাপ্ত নম্বর দেখানো হয়েছে ৫-এর বেশি।
কলকাতা : নিয়োগ মামলার পরতে পরতে নতুন অভিযোগ। ওমআর বিকৃতি, টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগের পর এবার সামনে এল নম্বর বিতর্ক। প্রাথমিকের নিয়োগে বরাদ্দ নম্বরের থেকে বেশি পেয়েছেন চাকরি প্রার্থী। এমন অভিযোগ শুনে কার্যত বিস্মিত বিচারপতি। কোথাও ৫ নম্বর বরাদ্দ থাকলেও প্রার্থী পেয়েছেন ৭। কারও ক্ষেত্রে আবার ‘এক্সট্রা ক্যারিকুলার অ্যাকটিভিটি’-র খাতে কোনও নম্বরই দেওয়া হয়নি। এইভাবে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে ছিল সেই মামলার শুনানি। নম্বর বিভাজনের অভিযোগ দেখে বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘বোমা বাঁধতে পারলে কি বাড়তি নম্বর পাওয়া যেত? বীরভূমে পেটো বাঁধলে কত নম্বর পাওয়া যেত?’ প্রাথমিক নিয়োগের সেই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল আদালত।
তদন্ত করবে ইডি-সিবিআই
২০১৪ টেটের ভিত্তিতে ২০২০ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। সেই নিয়োগের মামলায় আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে তদন্ত করবে ইডি-ও। ২০ এপ্রিল এই মামলায় প্রাথমিক রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কী অভিযোগ?
২০২০ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেই প্যানেলে একাধিক অসঙ্গতি আছে এই অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হন একাধিক চাকরিপ্রার্থী।
অভিযোগ, কনফিডেন্স সেকশনের নামে বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে আজব নম্বর বন্টন করা হয়েছে। ইন্টারভিউয়ের ফুল মার্কস ৫, প্রাপ্ত নম্বর দেখানো হয়েছে ৫-এর বেশি। মাধ্যমিকের জন্য বরাদ্দ ৫, কেউ কেউ পেয়েছেন ৭। ‘এক্সট্রা ক্যারিকুলার অ্যাকটিভিটি’ কলাম ফাঁকা কেন? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, ‘অন্য ক্ষেত্রে তো বরাদ্দের থেকে বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে। এখানে নম্বর দেওয়া হয়নি কেন? বোমা বাঁধতে পারলে কি বাড়তি নম্বর পাওয়া যেত? বীরভূমে পেটো বাঁধলে কত নম্বর পাওয়া যেত?’
মানিক সহ বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ
৪৮ ঘন্টার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করার নির্দেশও দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতির মন্তব্য, ‘মানিক ভট্টাচার্য বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি তৃণমূলের বিধায়কও। যদিও তিনি হেফাজতে, তাও বিধায়ক আছেন। রাজ্যের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এগুলো সব তাঁর জানাই ছিল। তাই সিবিআই এই মামলার তদন্ত করবে।’
বেসরকারি সংস্থাকে কেন দায়িত্ব?
বিচারপতির প্রশ্ন, কীভাবে পর্ষদের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজের দ্বায়িত্ব এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানিকে দেওয়া হল? সেটাই খতিয়ে দেখবে সিবিআই ও ইডি। নতুন এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে এই নম্বর দেওয়া হল? একটা বহিরাগত সংস্থা কীভাবে এই কাজ করতে পারল? যদি কোন বেনিয়ম পাওয়া যায়, তাহলে তৎকালীন অ্যাড হক কমিটির সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে বলে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। প্রয়োজনে মানিক সহ বাকিদেরও হেফাজতে নেওয়ার কথা বলেছে আদালত। শুধু বয়স ৮০-র বেশি হয়ে যাওয়ায় ওই কমিটিতে থাকা সিস্টার এমিলিকে হেফাজতে নেওয়া যাবে না।