Jadavpur University: সেদিন রাতে ঠিক কী ঘটেছিল? কেন তালা দেওয়া হয়েছিল যাদবপুরের হস্টেলের গেটে? কী নিয়ে হচ্ছিল জিবি?
Jadavpur University: ৯ অগস্ট ছাত্রের পড়ে যাওয়া, ভোররাতে হাসপাতালে মৃত বলে ঘোষণা করা। এই কয়েক ঘণ্টা সময়ের ব্যবধানের দিকেই আপাতত নজর তদন্তকারীদের।
কলকাতা: অভিশপ্ত রাতের ছ’দিন পার। এখনও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) প্রথম বর্ষের নাবালক পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুর প্রাথমিক কারণটুকু জানাতে পারেনি পুলিশ। তিনজন গ্রেফতার, জিজ্ঞাসাবাদ, তদন্ত চলছে তদন্তের গতিতেই। ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা? ঠেলে ফেলে দেওয়ায় মৃত্যু? র্যাগিংয়ের কারণেই মৃত্যু? এই কতগুলো কমন প্রশ্নরই উত্তর হাতড়াচ্ছেন তদন্তকারীরা। আর সেই উত্তর পেতে যে ক্লু-গুলির পরপর জোড়া লাগা প্রয়োজন, তদন্তে বাধ সাধছে তেমনই কয়েকটি মিসিং লিঙ্ক। যাদবপুর মেইন হস্টেলের ব্লক A 2 এর সেকেন্ড ফ্লোরে মানে তিন তলা থেকে পড়েছিল পড়ুয়া। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী- বিবস্ত্র এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় ট্যাক্সি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই ছাত্রকে। পুলিশ ছুটে এল, কিন্তু ঢুকতে পারল না। কারণ? কারণ ট্যাক্সি আহত পড়ুয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেই, মেইন হস্টেলের গেট তালাবন্ধ করে পড়ুয়ারা জেনারেল বডি মিটিং বা জিবি করছিলেন। যেখানে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে অনেক কিছু প্রমাণ পেতে পারত পুলিশ, সেখানে তারা ঢুকতেই পারল না! তাও কী কারণে? জিবি? জিবিটা কী কারণে? সূত্রের খবর, পনেরোই অগাস্ট ফুটবল খেলা নিয়ে মিটিং হচ্ছিল ওই জিবিতে। একজন পড়ুয়া তিন তলা থেকে পড়ে যাওয়ার পরেই, জিবি হল, তাও ফুটবল খেলা নিয়ে! এই জিবি কি পুলিশ যাতে প্রমাণ না পায় তার জন্যই ছিল? উঠছে সেই প্রশ্নও। জিবির ডাক দিয়েছিলেন কারা তা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা।
৯ অগস্ট বুধবার ছাত্রের পড়ে যাওয়া, ভোররাতে হাসপাতালে মৃত বলে ঘোষণা করা। এই কয়েক ঘণ্টা সময়ের ব্যবধানের দিকেই আপাতত নজর তদন্তকারীদের। কারণ এই কয়েক ঘণ্টাতেই বহু তথ্যপ্রমাণ লোপাট হয়েছে বলে আপাতত অনুমান করা হচ্ছে। সেদিন রাতে ঠিক কী ঘটেছিল? প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান এবং সূত্র মারফত পাওয়া তথ্যগুলো এক করলে ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে ঠিক এরকম-
রাত ৯টা: শুরু হয় র্যাগিং। মনোতোষ, দীপশেখর, সৌরভ উপস্থিত। তিনজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাত ৯টা ৪০: প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়াকে এক চিঠিতে সই করতে জোর।
রাত সাড়ে ১০টা: বাড়িতে ফোন প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার।
রাত ১০টা ৪৩: ডিনের কাছে ফোন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক পড়ুয়ার।
রাত সাড়ে ১১টা: বিবস্ত্র করে পাঁচিলে হাঁটতে বাধ্য করা হয় পড়ুয়াকে।
রাত ১১টা ৪৫: পাঁচিল থেকে পড়ে যায় পড়ুয়া। (কীভাবে পড়ল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে)
রাত ১১টা ৫৩: যাদবপুরের অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারের কাছে পৌঁছয় খবর।
রাত ১২টা ০৫: ট্যাক্সিতে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় গুরুতর আহত ওই পড়ুয়াকে।
খবর পেয়েই পুলিশ দ্রুত পৌঁছায়। কিন্তু ট্যাক্সি বের হতেই গেটে তালা দেওয়া হয় ভিতর থেকে। সূত্রের খবর, পুলিশ ভিতরে ঢুকতে না পেরে, ট্যাক্সির পিছু পিছু হাসপাতালে পৌঁছায়। কেন গেটে তালা দেওয়া হল তড়িঘড়ি, পুলিশ আটকাতেই এই তালা? পুলিশ ভিতরে ঢুকলে অনেক প্রমাণ হাতেনাতে পেয়ে যেত? এই প্রশ্নগুলিই এখন ঘুরছে নানা মহলে।