Sunday Special Trip: গন্তব্য হোক বেলপাহাড়ির কোলে ঢাঙিকুসুম! একবেলা কাটিয়ে আসুন বাংলার সবুজে ঘেরা জঙ্গলে
Belpahari: একটা সময় ছিল যখন এই ঢাঙিকুসুম পৌঁছানোর জন্য বেশ কসরত করতে হত। তাছাড়া মাওবাদীদের ভয়ে কেউ আসতেও চাইত না এখানে। কিন্তু সে সব এখন অতীত।
গত কয়েক বছরে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal Tourism) বিভিন্ন জেলার মধ্যে লুকিয়ে থাকা গ্রামগুলোতে ভিড় বেড়েছে পর্যটকদের। এমনই একটি গ্রাম হল ঢাঙিকুসুম। ঝাড়গ্রামে (Jhargram) বেলপাহাড়ির (Belpahari) কোলে লুকিয়ে থাকা এক অজানা আস্তানা। এক সময় মাওবাদীদের ডেরা ছিল এই অঞ্চল। সেই সুবাদে অনেকেই নাম শুনে থাকতে পারেন ঢাঙিকুসুমের। কিন্তু আজ জঙ্গলমহলের (JungleMahals) ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এই গ্রাম হয়ে উঠেছে এক অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।
কয়েক বছর আগের ছবিটাও যদি কল্পনা করা হয়, তা হলে উঠে আসবে এক অন্য দৃশ্য। রাজকুমার রাও অভিনীত ‘নিউটন’ সিনেমার সেই দৃশ্যের কথা মনে আছে? যেখানে ভোটের সময় হেলিকপ্টারে করে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ছত্তিশগড়ের কোনও অজানা গ্রামে। এক সময় ঠিক এই অবস্থাই ছিল ঢাঙিকুসুমে। একটা সময় ছিল যখন এই ঢাঙিকুসুম পৌঁছানোর জন্য বেশ কসরত করতে হত। পাহাড় টোপকে পৌঁছাতে হত বেলপাহাড়ির কোলে ঢাঙিকুসুমে। তখন মাওবাদীদের ভয়ে কেউ আসতেও চাইত না এখানে। কিন্তু সে সব এখন অতীত। এখন পরিবেশ একদম অন্যরকম। এখন বেলপাহাড়ি থেকে সহজেই পৌঁছানো যায় ঢাঙিকুসুমে। বেশ কিছু বছর হল চিড়াকুটি মোড় থেকে ঢাঙিকুসুম পর্যন্ত পাহাড় কেটে পিচ রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।
পাহাড়ের কোলে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে বসে রয়েছে ঢাঙিকুসুম। ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া ঢাঙিকুসুম অবস্থিত বেলপাহাড়ির কোলে। বেলপাহাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে সবুজে ঘেরা ছোট্ট গ্রাম। সবুজ পাহাড় আর জঙ্গলে ঘেরা ঢাঙিকুসুমের পথ। দু’পাশে ঘন সবুজ জঙ্গল। এর মাঝে উঁচু-নিচু পথ। টিলার উৎরাই-চড়াইও রয়েছে। তবে প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে এখানে মন্দ লাগবে না।
ঢাঙিকুসুমে বাস আদিবাসীদের। এখানের বেশির ভাগ মানুষই পাথর কেটে থালা-বাটি-বাসন এবং আরও নানা জিনিসপত্র তৈরি করেন। গ্রাম থেকে জঙ্গলের পথ একটু ঘন। আর এই নিস্তব্ধ জঙ্গলের পথ ধরে হেঁটে গেলে কানে আসবে জলপ্রপাতের শব্দ। কাছে গেলেই চোখে পড়বে ডুংরি ফলসের। এছাড়াও এখানে রয়েছে হদহদি ঝর্না। যদিও এই সব ছাড়া সেই অর্থে এখানে কিছু দেখার নেই। ঝাড়গ্রাম বেড়াতে গেলে একদিনের সফরে অনায়াসে ঘুরে নেওয়া যায় ঢাঙিকুসুম। আর যদি দুটো দিন প্রকৃতির কোলে বিশ্রাম নিতে আসেন, তাহলে সেরা ঠিকানা হতে পারে বেলপাহাড়ি ঢাঙিকুসুম।
কীভাবে যাবেন-
হাওড়া থেকে ট্রেনে ঝাড়গ্রাম পৌঁছে যান। সেখান থেকে ঝাড়খণ্ড সীমানায় অবস্থিত ঢাঙিকুসুমের দূরত্ব ৫২ কিলোমিটার। আপনাকে যেতে হবে বেলপাহাড়ি হয়ে। চাইলে ঝাড়গ্রাম থেকে গাড়ি ভাড়া করে নিতে পারেন। কিংবা ঝাড়গ্রাম থেকে বাসে করে চলে আসুন ৩৭ কিলোমিটার দূরের বেলপাহাড়ি থেকে। এখান থেকেও গাড়ি ভাড়া করে নিতে পারেন।
কোথায় থাকবেন-
ঝাড়গ্রাম ট্যুরের সঙ্গে যদি ঢাঙিকুসুমকে যুক্ত করে নেন, তাহলে ঝাড়গ্রামেই রাত কাটাতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে একাধিক হোটেল-রিসর্ট পেয়ে যাবেন এছাড়াও বেলপাহাড়িতেও রাত কাটাতে পারেন। এখানেও থাকার জন্য গেস্ট হাউস, কটেজ রয়েছে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন বিভাগের আবাস রয়েছে।