Indian Railway: ৪৬ কিলোমিটার যেতে সময় লাগে ৫ ঘণ্টা, দেশের সবচেয়ে ধীরগতির ট্রেনের যাত্রাপথ কেমন?
India’s Slowest Running Train: কচ্ছপের গতিতে চলা এই ট্রেনে চাপলে মনে হবে, সাইকেলও আপনি এর চাইতে জোরে চালান। মাত্র ৪৬ কিলোমিটারের পথ প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে যায় ওই ট্রেন।
এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে ভারতীয় রেলের সাহায্য নেন দেশের অধিকাংশের চেয়ে বেশি মানুষ। কম খরচে এবং কম সময়ের মধ্যে যাতায়াত করার জন্য ভারতীয় রেলই সেরা। তাই ভারতীয় রেলকে লাইফলাইনও বলা হয়ে থাকে। এমন কিছু ট্রেন রয়েছে যার গতি শুনে অনেকেই অবাক হন। আবার গন্তব্য পৌঁছানোর জন্য এক্সপ্রেস ট্রেন বেছে নিন। প্রতি ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটারেরও বেশি অতিক্রম করে এমনও ট্রেন রয়েছে ভারতীয় রেলে। কিন্তু ৪৬ কিলোমিটারের পথ ৫ ঘণ্টা ধরে অতিক্রম করে, এমন ট্রেনে কখনও চেপেছেন? আমরা কথা বলছি, ভারতের সবচেয়ে ধীরগতির ট্রেনের।
ভারতে যেমন দ্রুতগতির ট্রেন রয়েছে, তেমনই রয়েছে ধীরগতির ট্রেনও। কচ্ছপের গতিতে চলা এই ট্রেনে চাপলে মনে হবে, সাইকেলও আপনি এর চাইতে জোরে চালান। মাত্র ৪৬ কিলোমিটারের পথ প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে যায় ওই ট্রেন। কিন্তু এই ট্রেন একটি রুটে প্রতিদিনই যাতায়াত করে। সেখানে যাত্রীসংখ্যাও বেশ ভাল। কী নাম এই ট্রেনের, কোন রুটে চলাচল করে, চলুন জেনে নেওয়া যাক…
তামিলনাড়ুর একটি রুটে চলাচল করে নীলগিরি মাউন্টেন রেলওয়ে। একে নীলগিরি প্যাসেঞ্জারও বলা হয়ে থাকে। তামিলনাড়ুর মেট্টুপালায়ম থেকে উটি পর্যন্ত যায় এই নীলগিরি প্যাসেঞ্জার। সিমলা বা দার্জিলিংয়ের টয়ট্রেনের মতোই জনপ্রিয় নীলগিরি প্যাসেঞ্জার। তামিলনাড়ুর মেট্টুপালায়ম থেকে উটি পর্যন্ত এই রুটটি মাত্র ৪৬ কিলোমিটারের। সেই রুটেই নীলগিরি প্যাসেঞ্জার যেতে সময় নেয় পাঁচ ঘণ্টা। ১,০৬৯ ফুট থেকে ৭,২২৮ ফুট উচ্চতায় ওঠে নীলগিরি মাউন্টেন রেলওয়ে। যে কারণে ধীরগতিতেই চালাতে হয় ট্রেন।
নীলগিরি প্যাসেঞ্জার ঘণ্টায় মাত্র ১০ কিলোমিটার গতিবেগে চলে। কিন্তু এই ট্রেনের যাত্রাপথ অন্যান্য সব ট্রেনের রুটের চাইতে সুন্দর। তামিলনাড়ুর মেট্টুপালায়ম থেকে উটি পর্যন্ত যাত্রাপথ জুড়ে রয়েছে দুর্গম পাহাড়। মূলত দুর্গম পাহাড়ি এলাকা দিয়ে চলাচলের জন্য ট্রেনটি যতটা সম্ভব ধীরগতিতে চালানো হয়। কিন্তু এই ধীরগতির মধ্যেই নয়নাভিরাম নৈস্বর্গিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। আর এটাই পর্যটকদের মন কেড়ে নেয়।
মাত্র ১২ কিলোমিটার বেগে এই ট্রেনটি ৪,৩৬৩ ফুট উচ্চতায় ওঠে। নীলগিরির পাহাড়ি ঢাল, ঘন সবুজ জঙ্গল, অন্ধকার ট্যানেল, সবুজ চা বাগান সব কিছুর মধ্য দিয়ে নীলগিরি মাউন্টেন রেলওয়ে মেট্টুপালায়ম থেকে উটি পৌঁছায়। এই ট্রেনের যাত্রাপথে পরে কুনুর, ওয়েলিংটন, লাভডেল এবং ওটাকামুন্ডের মতো দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। পশ্চিমঘাটের কুয়াশা ভেদ করে নিজ গতিতে এই ট্রেন এগিয়ে চলে উটির দিকে।
নীলগিরি প্যাসেঞ্জারের ইতিহাস ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত। ১৮৫৪ সালে এই ট্রেন চালানোর কথা ভাবা হয়। ১৮৯১ সাল থেকে শুরু হয় এই রুট তৈরির কাজ। এরপর ১৯০৮ সালে প্রথম নীলগিরি প্যাসেঞ্জার চালানো হয়। বর্তমানে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমা পেয়েছে নীলগিরি প্যাসেঞ্জার।