‘সিমপ্যাথি ভোট’ চায় বিজেপি,কালাচাঁদ খুনের মামলায় তৃণমূল-বিজেপি তরজা তুঙ্গে
বুধবার কোচবিহারের (Coach Bihar) তুফানগঞ্জের (Tufanganj)শিকারপুরে ওই বিজেপি নেতাকে বাঁশ, লাঠি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের(TMC) বিরুদ্ধে।
TV9বাংলা ডিজিটাল: স্বামীজি সংঘ ও নেতাজি সংঘ। দুটি ক্লাবের কালীপুজোর বিসর্জন নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে প্রাণ হারালেন বিজেপি (BJP) বুথ কমিটির সম্পাদক কালাচাঁদ কর্মকার। বুধবার কোচবিহারের (Coach Bihar) তুফানগঞ্জের (Tufanganj)শিকারপুরে ওই বিজেপি নেতাকে বাঁশ, লাঠি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের(TMC) বিরুদ্ধে। মৃত বিজেপি (BJP) নেতা একটি ক্লাবের পুজোর আয়োজক ছিলেন। ধৃতরা তৃণমূলের দলের লোক এমনটাই অভিযোগ মৃতের পরিবারের।
পুলিস সূত্রের খবর,কালাচাঁদ খুনের মামলায় কমল বর্মণ নামে অভিযুক্ত একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। দুই ক্লাবের রেষারেষির থেকেই এই খুন এমনটাই অনুমান পুলিসের। বৃহস্পতিবার বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে দফায় দফায় পুলিসকে বিক্ষোভ দেখায় গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন: ‘ভলিয়্যুম’ কমে গিয়েছে কেষ্টর, এবার স্পিকারটাও বন্ধ হবে’ অনুব্রতকে পাল্টা দিলীপ
স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর দুই আগেও মিলেমিশে একসঙ্গে কালীপুজো করত স্বামীজি সংঘ ও নেতাজি সংঘ। মতবিরোধের কারণে এখন আলাদা ভাবেই পুজো হয়। এবারেও তুফানগঞ্জ(Tufanganj) থানার অনুমতি নিয়ে আলাদা আলাদা পুজো করে দুটি ক্লাব। কিন্তু মঙ্গলবার রাত থেকে বিসর্জনকে কেন্দ্র করে পুরোনো মতবিরোধ নিয়ে দুই ক্লাবের মধ্যে বচসা শুরু হয়। বুধবার সকালেও সে বচসা অনেকদূর গড়াতে এগিয়ে যান ক্লাবের সদস্য তথা বিজেপি বুথ কমিটির সম্পাদক কালাচাঁদ। নেতাজি ক্লাবের সদস্যরা তাঁকে হাতের কাছে পেয়ে মাটিতে ফেলে পেটাতে শুরু করে। প্রথমে লাঠি ও বাঁশ দিয়ে পরে মাটিতে ফেলে ঘুষি ও লাথি। ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান কালাচাঁদ। তাঁকে বাড়ির সামনে ফেলে দিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
মৃতের স্ত্রী শেফালি কর্মকারের দাবি এর আগেও তৃণমূলের লোকেরা মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছে। ক্লাবের গন্ডগোল থামাতে গিয়েই খুন হতে হয়েছে কালাচাঁদকে। দোষীদের যোগ্য শাস্তি হোক।
কালাচাঁদ খুনের মামলায় প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দেয় গেরুয়া শিবির। বক্সিরহাট হাইস্কুল থেকে থানা পর্যন্ত ধিক্কার মিছিল চলে বিজেপির। থানার সামনেও প্রায় ঘণ্টাদুয়েক চলে বিজেপির বিক্ষোভ। মোতায়েন করা হয় পুলিস। তুফানগঞ্জের ঘটনা সামনে আসতেই রাজনীতির পারদ চড়তে শুরু করেছে পদ্ম শিবিরে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়(Babul Supriyo)। টুইট করে জানান, “কালাচাঁদকে পিটিয়ে মেরেছে তৃণমূলের গুন্ডা। প্রশাসন চোখ বুজে আছে। দিন আসছে। জনগণ এই অহংকারী সরকারকে শিক্ষা দেবে।”
কোচবিহারে বিজেপির বুথ সম্পাদক কালাচাঁদ কর্মকারকে তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনী পিটিয়ে হত্যা করেছে, কিন্তু প্রশাসন চোখে কাপড় বেঁধে রেখেছে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে। খুব শীঘ্রই মানুষ এর জবাব দেবে এই ‘অহংকারী’ সরকারকে।
#FaltuMamatarPaltuPolice #MamataMuktBengal https://t.co/Dm7uWMYwZJ
— Babul Supriyo (@SuPriyoBabul) November 18, 2020
যদিও বিজেপির এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসকদল। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঘটনায় রাজনৈতিক রঙ লাগাচ্ছে বিজেপি। ‘সহানুভূতির ভোট’চাইছে তারা। এমনটাই দাবি তৃণমূলের তুফানগঞ্জ টাউন ব্লকের সভাপতি তথা জেলা কমিটির মুখপাত্র শিবদাস পালের।
শনিবার,মৃত কালাচাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রথীন্দ্রনাথ বসু (Rathindranath Basu)এবং আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ জন বার্লা। ওইদিন মৃতের বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার (Coach Bihar) জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা রায় সহ রাজ্যস্তরের বিজেপি নেতারা। ওইদিনই রথীন্দ্রনাথ বলেন, “রাজ্যে পুলিসের ভূমিকা নেই বললেই চলে। প্রশাসন এখন সরকারের আঙুলে নাচে। মানুষের সুবিচার এখন একটা প্রহসন।”