AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

TV9 Bangla Explained: ‘Share Pump and Dump Case’ কী? কীভাবে শেয়ার মার্কেটে পাতা হয় ফাঁদ?

Share Pump and Dump Case : বিগত সপ্তাহ থেকে পাম্প অ্যান্ড ডাম্প কেস নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে শেয়ার মার্কেটে। বিপাকে পড়েছেন বিখ্যাত বলিউড স্টার আরশাদ ওয়ারসি।

TV9 Bangla Explained: ‘Share Pump and Dump Case’ কী? কীভাবে শেয়ার মার্কেটে পাতা হয় ফাঁদ?
কীভাবে লুঠ হতে পারে আপনার সর্বস্ব?
| Updated on: Mar 10, 2023 | 9:40 PM
Share

বন্ধ হয়েছে শেয়ার মার্কেটের (Share Market) দরজা। গত সপ্তাহ থেকেই চাপে বিখ্যাত বলিউড স্টার আরশাদ ওয়ারসি (Arshad Warsi)। প্রায় ৪৫টি ইউটিউব চ্যানেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া বা সেবি (SEBI)। আরশাদ সহ এদের সকলের বিরুদ্ধে শেয়ারে পাম্প অ্যান্ড ডাম্প কেসের অভিযোগ রয়েছে। যদিও শেয়ার মার্কেটে এই কেস নতুন নয়। কিন্তু, আরশাদ ওয়ারসির কেস সামনে আসার পর তা নিয়ে ফের নতুন করে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে নানা মহলে। কিন্তু কী এই শেয়ার অ্যান্ড ডাম্প কেস?

কী এই ‘শেয়ার পাম্প অ্যান্ড ডাম্প কেস’?  

বিগত সপ্তাহ থেকে পাম্প অ্যান্ড ডাম্প কেস নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে শেয়ার মার্কেটে। ‘শেয়ার পাম্প অ্যান্ড ডাম্প’কে বর্তমানে শেয়ারের আর্থিক জালিয়াতির ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। এতে নাম জড়ালে জেল-জরিমানা এমনকী শেয়ার মার্কেটের দরজা চিরদিনের জন্য বন্ধ পর্যন্ত হতে পারে। সহজ কথায় এর নামের সঙ্গেই এর গতি প্রকৃতি খানিকটা অনুমান করা যায়। কোনও নির্দিষ্ট শেয়ারের দামকে ঘুরপথে, বেআইনি পথে ‘পাম্প’ করে বা বলা ভাল অনৈতিক পদ্ধতিতে ঠেলা দিয়ে বাড়িয়ে দেওয়া হয় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। জোর করে, ভুল বুঝিয়ে, ভুল পথে চালিত করে টেনে আনা হয় বিনিয়োগকারীদের। যে বা যে সংস্থা এই কাজ করছে তার ফলে তাঁরা অল্প সময়েই এই জালিয়াতি করে বড় লাভ করে তুলতে পারেন। তবে অতীত রেকর্ড ঘাঁটলে দেখা গিয়েছে সমাজে পরিচিতি রয়েছে, যাঁদের মানুষ ভরসা করেন এরকম মানুষেরাই এই কাজ বেশি করেছেন। তাঁদের প্রভাবে কাজে লাগিয়েই বাড়িয়ে নিয়েছেন সম্পদ।  

কীভাবে পাতা হয় ফাঁদ ? 

আরও সহজ করে বলে পাম্প অ্যান্ড ডাম্পের মাধ্যমে শেয়ার বাজারকে ভুল পথে চালানো করা যায়। কোনও নির্দিষ্ট সংস্থা বা স্টক সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের দেওয়া হয় ভুল তথ্য। এ কাজ করেই বড় লাভের দরজা খুলে দেওয়া হয় ওই সংশ্লিষ্ট সংস্থার জন্য। ওই স্টকের শ্রীবৃদ্ধির উপরেও সরাসরি প্রভাব পড়ে এর ফলে। কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তি ইউটউবে তাঁদের চ্যানেলের মাধ্যমে একটি স্টকের লাগাতার প্রচার করতে থাকেন। বিনিয়োগকারীরা তাঁকে বিশ্বাস করে সেই স্টকে বিনিয়োগ শুরু করেন। অল্প সময়ের জন্য চড়চড় বাড়তে থাকে ওই নির্দিষ্ট শেয়ারের দাম। এদিকে ততক্ষণে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি বা সংস্থা বড় মাত্রায় ওই স্টক কিনে রেখে দেয়। ভ্যালু বাড়লে স্টকটি বিক্রি করে দেন সুযোগ বুঝে। পকেটে ঢুকে যায় বড় লাভ। এভাবেই বড় লাভ খরে তোলেন তিনি। এই অভিযোগই উঠেছে আরশাদ সহ আরও ৩৫টি ইউটিউব চ্যানেলের মালিকের বিরুদ্ধে। 

কীভাবে চলে গোটা প্রক্রিয়া? 

শেয়ার পাম্প অ্যান্ড ডাম্প কেসে সাধারণত এক বা দুজন নয়। কাজ করে একটা গোষ্ঠী। সেখানে কাজ করতে পারেন শতাধিক মানুষ। কেন গোষ্ঠীবদ্ধভাবে করা হয় কাজ? কারণ কোনও ব্যক্তি যদি কোনও সংস্থার ১ শতাংশ শেয়ার হোল্ড করেন তাহলে তাঁর বিনিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় খুঁটিনাটিতে বিশেষ নজর থাকে সেবির। মানতে হয় একগুচ্ছ নিয়ম। এই ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতেই দলবদ্ধভাবে করা হয় শেয়ার পাম্পিংয়ের কাজ। ধরা যাক, একটি সংস্থার ১০০টি শেয়ার রয়েছে। তাঁর মধ্যে ৩০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রোমোটার বিনিয়োগকারীদের হাতে, বাকি ৭০ শতাংশ রয়েছে রিটেল বিনিয়োগকারীদের হাতে। পাম্প অ্যান্ড ডাম্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা শুরুতেই পড়ে থাকা ৭০ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে ৬০ শতাংশ নিজেদের পকেটে ঢুকিয়ে নেন। তাতেই চড়চড়িয়ে বাড়তে থাকে শেয়ারের দাম। উদ্দেশ্য একটাই বাকি থাকা ১০ শতাংশ শেয়ারে আরও বিনিয়োগ টানা। তাঁদের মনোবল বাড়াতে পাম্পিং দল সে সময় আগের বিনিয়োগ ও তা থেকে মুনাফার তথ্য সামনে এনে লাগাতার সংশ্লিষ্ট সংস্থা, গ্রুপ ও নিজেদের অধীনে থাকা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে লাগাতার বিজ্ঞাপন চালাতে থাকেন। যে শেয়ারকে টার্গেট করে বিনিয়োগ টানার চেষ্টা হতে থাকে ততক্ষণে তার গ্রাফেও দেখা যেতে শুরু করে ঊর্ধ্বগতি। ফলে খানিক সময়ের মধ্যেই শেয়ারদর বাড়তে থাকে হু হু করে। তবে গোটা প্রক্রিয়াটা রাতারাতি হয়ে য়ায় না। এর জন্য ধরতে হয় বেশ কিছুটা সময়। মার্কেটের গ্রাফ, সংস্থার অতীত রেকর্ড, ভাবমূর্তি তৈরি, বিনিয়োগকারীদের ভরসা জুগিয়ে বিনিয়োগে আকর্ষিত করা সবই জড়িয়ে রয়েছে এর মধ্যে।   

সবথেকে বেশি ক্ষতির মুখে খুচরো বিনিয়োগকারীরা

শেয়ার পাম্প ও ডাম্পের জেরে অল্প সময়ে বড় লাভের মুখ দেখতে গিয়ে সবথেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েন খুচরো বিনিয়োগকারীরা।  মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, বা ব্যাপকভাবে অতিরঞ্জিত তথ্যের কারণে অচিরেই ভুল পথে চালিত হন তাঁরা। খুইয়ে বসেন সর্বস্ব। সেবি এই ধরনের কাজকে সরাসরি প্রতারণা বলেই উল্লেখ করছে। সর্বত্র সেবি অভিযোগ করেছে, আরশাদ ওয়ারসি ও আরও ৪৫টি ইউটিউব চ্যানেল দুটি নির্দিষ্ট সংস্থার শেয়ারের সপক্ষে লাগাতার ভুল তথ্য সামনে এনেছেন। ইউটিউবে আপলোড হয়েছে বেশ কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য়। ওই ভিডিও-র মাধ্যমেই দুই সংস্থায় বিনিয়োগের বিষয়ে খুচরো বিনিয়োগকারীদের মনোবল আরও বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তাঁদের খপ্পরে পড়েই ভুল পথে চালিত হয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। যার ফলে গত বছর এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে দুই সংস্থার শেয়ারদরই চড়চড় করে বেড়ে গিয়েছিল। 

বিঃ দ্রঃ – এটি একটি শেয়ার বাজার এবং মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ সম্পর্কিত শিক্ষামূলক প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য কখনই বিনিয়োগে উৎসাহিত করা বা মুনাফা কামানোর সহজ উপায় খুঁজে দেওয়া নয়। শেয়ার বাজারের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানানোই এই প্রতিবেদনের অন্যতম লক্ষ্য।  উল্লেখ্য, শেয়ার বাজারের বিনিয়োগ সর্বদাই ঝুঁকিুপূর্ণ।