Buddha Purnima 2022: বুদ্ধ পূর্ণিমায় রয়েছে বিশেষ যোগ! শুভ তিথি ও গুরুত্ব বুঝে নিন

Significance of Buddha Purnima: বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বৈশাখ মাসের এই পূর্ণিমা দিবসে মহামানব বুদ্ধের জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল বলে দিনটি ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ নামে খ্যাত।

Buddha Purnima 2022: বুদ্ধ পূর্ণিমায় রয়েছে বিশেষ যোগ! শুভ তিথি ও গুরুত্ব বুঝে নিন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 08, 2022 | 9:48 AM

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের (Buddhism) সবচেয়ে বড় ও পবিত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান হল এই বৈশাখী পূর্ণিমা বা বুদ্ধ পূর্ণিমা (Buddha Purnima)। আগামী ১৬ মে,এই পুণ্যোৎসব বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয় বলে একে বৈশাখী পূর্ণিমাও বলা হয়। এই পবিত্র তিথিতে গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম (Gautam Buddha Birt Anniversary), বোধি বা সিদ্ধিলাভ ও মহাপরিনির্বাণ লাভ করেছিলেন। ত্রিস্মৃতি বিজরিত দিনটি বৌদ্ধ ও হিন্দুদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। বৌদ্ধ ধর্মে বলা হয়েছে, বর্তমান নেপালের লুম্বিনিতে, খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন। ৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই দিনে গৌতম বুদ্ধ সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। পাশাপাশি ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই একই দিনে তিনি মহানির্বাণ লাভ করেছিলেন। সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্বলাভের মধ্য দিয়েই জগতে বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তিত হয়। বুদ্ধ পূর্ণিমাকে আবার বুদ্ধ জয়ন্তী (Buddha Jayanti 2022) নামেও পরিচিত।

শুভতিথি

বৈশাখ পূর্ণিমা পালিত হবে আগামী ১৬ মে, সোমবার।

পূর্ণিমার তিথির শুরু- ১৫ মে, দুপুর ১২.৪৫ মিনিট পূর্ণিমা তিথির সমাপ্তি- ১৬ মে সোমবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিট।

কাহিনি

বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বৈশাখ মাসের এই পূর্ণিমা দিবসে মহামানব বুদ্ধের জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল বলে দিনটি ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ নামে খ্যাত। বৌদ্ধ সাহিত্য থেকে জানা যায় যে, পূর্বজন্মে বোধিসত্ত্ব সকল পারমি পূরণ করে সন্তোষকুমার নামে যখন স্বর্গে অবস্থান করছিলেন, তখন দেবগণ তাঁকে জগতের মুক্তি এবং দেবতা ও মানুষের নির্বাণ পথের সন্ধান দানের জন্য মনুষ্যকুলে জন্ম নিতে অনুরোধ করেন। দেবতাদের অনুরোধে বোধিসত্ত্ব সর্বদিক বিবেচনাপূর্বক এক আষাঢ়ী পূর্ণিমায় স্বপ্নযোগে মাতৃকুক্ষিতে প্রতিসন্ধি গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী এক শুভ বৈশাখী পূর্ণিমায় জন্মলাভ করেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল লুম্বিনী কাননের শালবৃক্ষ ছায়ায় উন্মুক্ত আকাশতলে। তাঁর নিকট জাতি, শ্রেণি ও গোত্রের কোনো ভেদাভেদ ছিল না। তিনি মানুষকে মানুষ এবং প্রাণীকে প্রাণিরূপেই জানতেন এবং সব প্রাণসত্তার মধ্যেই যে কষ্টবোধ আছে তা তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতেন। তাই তিনি বলেছিলেন ‘সবেব সত্তা ভবন্তু সুখীতত্তা’ জগতের সব প্রাণী সুখী হোক। এই মর্মচেতনা জাগ্রত করা এবং এই পরম সত্য জানার জন্য তিনি ২৯ বছর বয়সে সংসার ত্যাগ করেন। সত্যের সন্ধানে পরিভ্রমণ করতে করতে এক সময় তিনি গয়ার উরুবেলায় (বুদ্ধগয়া) গিয়ে নিবিষ্টচিত্তে সাধনামগ্ন হন। দীর্ঘ ছয় বছর অবিরাম সাধনায় তিনি লাভ করেন সম্যক সম্বুদ্ধ বা বুদ্ধত্ব। সেদিনও ছিল বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথি।

বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনে বৌদ্ধরা বুদ্ধপূজাসহ পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ, সমবেত প্রার্থনা এবং নানাবিধ মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তারা বুদ্ধানুস্মৃতি ও সংঘানুস্মৃতি ভাবনা করে। বিবিধ পূজা ও আচার-অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিবিধ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। বৌদ্ধ বিহারগুলিতে বুদ্ধের মহাজীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনাসহ ধর্মীয় সভার আয়োজন করা হয়। শিশু-কিশোরদের মধ্যেও নানা উৎসবমুখর আনুষ্ঠানিকতার ধুম পড়ে যায়। এই পূর্ণিমাকে ঘিরে অনেক বৌদ্ধবিহারে চলে তিনদিনব্যাপী নানামুখী অনুষ্ঠান। বৌদ্ধধর্মীয় পর্ব হিসেবে এ দিনে সাধারণ সরকারি ছুটি থাকে। রেডিও, টেলিভিশনে প্রচার করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠান। দৈনিক সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ সংখ্যা কিংবা ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়। বিভিন্ন বিহার ও সংগঠন কর্তৃক স্মরণিকা, ম্যাগাজিন ও স্মারকগ্রন্থও প্রকাশ করা হয়। বিভিন্ন গ্রামে ও বিহারে এদিন মেলা বসে। তন্মধ্যে চট্টগ্রামের বৈদ্যপাড়া গ্রামের বোধিদ্রুম মেলা বিখ্যাত।