Narasimha Jayanti 2022: নরসিংহ জয়ন্তী পালন করার এত ফল আগে জানতেন কি?

Narasimha Jayanti: হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, অশুভর উপর সবসময় শুভর জয় হয়। একথা বোঝাতেই নরসিংহ অবতারের আবির্ভাব হয়েছিল। তাই নরসিংহ জয়ন্তীতে উপোস ও পুজো করলে জীবন থেকে দুঃখ, কষ্ট ও ব্যর্থতার মতো অশুভ প্রভাব কেটে যায়।

Narasimha Jayanti 2022: নরসিংহ জয়ন্তী পালন করার এত ফল আগে জানতেন কি?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 08, 2022 | 6:20 AM

শ্রীবিষ্ণুর (Hari Vishnu) অন্যতম অবতার হলেন নরসিংহ (Narasimha)। প্রবল অত্যাচারী হিরণ্যকশিপুকে বধ করতে মর্তে শ্রীবিষ্ণু প্রকট হন মানব শরীর ও সিংহের মাথা নিয়ে। যে দিনে শ্রীবিষ্ণু নরসিংহ অবতারে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন, ওই দিনটিকে নরসিংহ জয়ন্তী হিসেবে মান্য করা হয়। হিন্দু পঞ্চাঙ্গ অনুসারে বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষের চতুর্দশীতে পালন করা হয় নরসিংহ জয়ন্তী। সাধারণত এপ্রিল বা মে-এর মধ্যে কোনও একটি মাসে ওই তারিখটি স্থির হয়। চলতি বছরে নরসিংহ জয়ন্তী বা চতুর্দশী তিথি শুরু হচ্ছে মে মাসের ১৪ তারিখে বেলা ৩টা বেজে ২২ মিনিট থেকে। শেষ হবে পরের দিন অর্থাৎ ১৫ এপ্রিল বেলা ১২ টা ৪৫-এ। এই সময়েই পুজো করতে হবে নরসিংহ অবতারের।

নরসিংহ জয়ন্তী পালনের আচার-নিয়ম

• সূর্যোদয়ের আগে স্নান সেরে নিন। কাচা ও পরিষ্কার পোশাক পরুন।

• নরসিংহ জয়ন্তীর দিন লক্ষ্মীমাতা ও নরসিংহ মূর্তির পূজা করা উচিত। একই সঙ্গে করতে হবে নিবিষ্ট মনে প্রার্থনা।

• পুজো শেষ হলে, মাতা লক্ষ্মী ও নরসিংহদেবকে দিন নারকেল, মিষ্টি, ফল, কেশরের নৈবদ্য।

• অবশ্যই উপোস করবেন। এই উপোস নরসিংহ জয়ন্তীতে শুরু হয়ে পরের দিন সকালে সূর্য ওঠা হওয়া অবধি চলে।

• উপোস চলাকালীন সময়ে দানাশস্য, গমের খাদ্য খাবেন না।

• সর্বদা নরসিংহদেবের বন্দনা হেতু মন্ত্রোচ্চারণ করুন।

• দুঃস্থ ব্যক্তিকে তিল, পোশাক, খাদ্য, দামি ধাতু দান করলে তা অত্যন্ত পবিত্র ফল প্রদান করে।

নরসিংহ জয়ন্তীর তাৎপর্য

হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, অশুভর উপর সবসময় শুভর জয় হয়। একথা বোঝাতেই নরসিংহ অবতারের আবির্ভাব হয়েছিল। তাই নরসিংহ জয়ন্তীতে উপোস ও পুজো করলে জীবন থেকে দুঃখ, কষ্ট ও ব্যর্থতার মতো অশুভ প্রভাব কেটে যায়।

কাহিনি

ঋষি কাশ্যপ এবং তাঁর স্ত্রী দিতির দুই সন্তান হল। তাদের নাম হিরণ্যকশিপু ও হিরণ্যাক্ষ। দুই ভাইই ভগবান ব্রহ্মাকে সন্তুষ্ট করার জন্য কঠোর তপস্যা করেন। ব্রহ্মা তুষ্ট হন ও তাদের এমন বর দেন যে দেখা যায়, পৃথিবীর প্রায় কোনও জীব এবং অস্ত্র এমনকী দেবতারাও তাদের হত্যা করতে পারবে না! এই বর পেয়ে দুই ভাই মিলে ব্রহ্মাণ্ড দাপিয়ে বেড়াতে লাগল। যুদ্ধ ও নির্বিচারে হত্যা করে দখল করতে থাকল ব্রহ্মার সকল সৃষ্টি। এমনকী স্বর্গের দিকেও নজর গেল তাদের। অবশেষে শ্রীবিষ্ণু বরাহ অবতার ধারণ করে হিরণ্যাক্ষকে হত্যা করেন।

অন্যদিকে হিরণ্যকশিপুর একটি সন্তান হয় যার নাম ছিল প্রহ্লাদ। প্রহ্লাদ ছিল শ্রীবিষ্ণুর পরম ভক্ত। ফলে হিরণ্যকশিপু আপন সন্তানের প্রতি প্রবল ক্রুদ্ধ হন ও তাকে হত্যা করতে উদ্যত হন। নানাভাবে প্রহ্লাদের জীবন শেষ করার চেষ্টা করা হয়। তবে প্রতিবারই ভগবান শ্রীবিষ্ণুর নাম জপ করার কারণে আশ্চর্যরকমভাবে প্রহ্লাদের প্রাণ বেঁচে যায়। হিরণ্যকশিপু এমনকী তার শিশু সন্তানকে জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করে। সেবারেও রক্ষা পায় প্রহ্লাদ। হিরণ্যকশিপু ক্রোধে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে। সে প্রহ্লাদকে বলে ভগবান শ্রীবিষ্ণুর অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে। প্রহ্লাদ জানায়, ভগবান বিষ্ণু সর্বত্র বিরাজমান, এমনকী রাজপ্রাসাদের স্তম্ভেও তিনি উপস্থিত রয়েছেন! হিরণ্যকশিপু অত্যন্ত অহঙ্কার ও রাগের বশবর্তী হয়ে একটি স্তম্ভকে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে সেই থাম ভেঙে প্রকট হন ভয়ঙ্কর দর্শন নরসিংহ অবতার! আপন নখর দিয়ে হিরণ্যকশিপুকে বধ করেন তিনি! পৃথিবীতে আবার শান্তি নেমে আসে। নরসিংহ অবতারে ভগবানের আবির্ভাবের ওই দিনটিকেই নরসিংহ জয়ন্তী হিসেবে পালন করা হয়।