AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Jamaisasthi 2022: জামাইষষ্ঠীর আরেক নাম ‘অরণ্যষষ্ঠী’! বাংলার প্রাচীন ব্রত পালনের প্রতিটি নিয়ম জানা আছে?

Bengali Rituals: ঘর ও মন্দিরের বাইরে বট, করমচার ডাল পুঁতে প্রতীকী অর্থে অরণ্য রচনা করে এই পুজো করা হয়। এই জন্য জামাই ষষ্ঠীকে অরণ্য ষষ্ঠীও বলা হয়।

Jamaisasthi 2022: জামাইষষ্ঠীর আরেক নাম 'অরণ্যষষ্ঠী'! বাংলার প্রাচীন ব্রত পালনের প্রতিটি নিয়ম জানা আছে?
| Edited By: | Updated on: Jun 05, 2022 | 6:10 AM
Share

হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে পালন করা হয় জামাইষষ্ঠী (Jamaisasthi 2022)। এ বছর আগামী ৫ জুন, ২১ জ্যৈষ্ঠ, রবিবার পালিত হবে এই শুভ অনুষ্ঠান (Hindu Ritual)। জামাইষষ্ঠী মানে শুধু খাওয়া-দাওয়া, মজা-হুল্লোড় নয়। বাংলার তেরো পার্বণের মধ্যে অন্যতম একটি লোকায়ত প্রথাও বটে। বাংলার প্রাচীন ব্রতগুলির মধ্যে একটি। হিন্দু মতে, ষষ্ঠী (Devi Sasthi) হলেন সন্তানাদির দেবী। তিনি গর্ভবতী হওয়ার আশীর্বাদ দেন। জামাইষষ্ঠীর মুখ্য উদ্দেশ্য হল, মাতৃত্ব, বংশবৃদ্ধি । সাধারণত, জ্যৈষ্ঠ, ভাদ্র, অশ্বিন, অগ্রহায়ন, মাঘ ও চৈত্র মাসের শুক্লা ষষ্ঠী তিথিতে এই দেবীর পূজা হয়। তবে, মাস ভেদে একই দেবীর বিভিন্ন নাম ও বিভিন্ন পূজা বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে জ্যৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠী, যা “জামাইষষ্ঠী” নামে অধুনা বেশি পরিচিত।

‘অরণ্যষষ্ঠী’

বাংলার লোকসংস্কৃতিতে মায়েরা জামাই ষষ্ঠী বা অরণ্যষষ্ঠী-র ভোরে তাল পাতার পাখা, আম, কলা, খেজুর ছড়া, করমচা, জামরুল, ইত্যাদি ফল, বিশেষ ভাবে তৈরি দূর্বা ও বাঁশ পাতা, জলের ঘটি ইত্যাদি নিয়ে নিকটবর্তী জলাশয় বা নদীতে যায় স্নান করতে যাওয়ার নিয়ম। অনেকে বলে “পাখা ধোয়া”। অঞ্চল ও পরিবার ভেদে ফলের সংখ্যা ও দূর্বার গাছা তৈরিতে কিছু তারতম্য দেখা যায়। তবে এখন পুকুর না নদীতে যাওয়ার সময় বা নিকটে তার অবস্থান না থাকায় বাড়ির মধ্যে কৃত্রিম পুকুর বানিয়ে এই রীতি পালনের রেওয়াজ রয়েছে।

লৌকিক আচার

জামাই ষষ্ঠীর দিন জামাইকে ঘিরে শাশুরিদের এই অনুষ্ঠান বর্তমানে এক উত্‍সবের আকার ধারণ করেছে। ষষ্ঠীকে সন্তান-সন্ততি দেবী বা দেব বহির্ভূত লৌকিক দেবী ও বলা হয়। ঘর ও মন্দিরের বাইরে বট, করমচার ডাল পুঁতে প্রতীকী অর্থে অরণ্য রচনা করে এই পুজো করা হয়। এই জন্য জামাই ষষ্ঠীকে অরণ্য ষষ্ঠীও বলা হয়। ষষ্ঠীর উদ্দেশ্যে ঘট স্থাপন করা হয়। প্রত্যেকের দূর্বাগাছা থেকে বারোটা দূর্বা পূজার ঘটে দেওয়া হয় । ঐ ঘট থেকে অন্যের দেওয়া বারোটি দূর্বা নিয়ে নিজের দূর্বাগাছায় বাঁধা হয়। এরপর ছেলে মেয়েদের ” ষাটের জল” দিয়ে ও হাতে হলুদ সুতো বেঁধে দেওয়া হয়। বর্তমানে, নতুন বস্ত্র, উপহার, ফল- ফলাদি, পান-সুপারি, ধান- দূর্বা, বাঁশের করুল, তালের পাখা, করমচা দিয়ে শাশুড়ি মায়েরা উদযাপন করেন জামাইষষ্ঠী।

জামাইষষ্ঠী কেন পালন করা হয়

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে একসময় রীতি বা প্রথা ছিল যে যতনদিন না কন্যার কোনও সন্তান হচ্ছে, ততদিন বাপের বাড়ি থেকে কেউ অর্থাত বাবা-মা কন্যার শ্বশুড়িবাড়িতে পা দেবেন না। এদিকে, আগেকার দিনে অল্পবয়সে গর্ভবতী হয়ে যাওয়াতে নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিত, অপুষ্টির কারণে সন্তানধারণে সমস্যা ও সন্তানের মৃত্যুর ফলে বাড়ির মেয়ের আর বাড়িতে আসা হত না। এদিকে মেয়ের চিন্তাতে ঘুম উড়ে যেত বাবা-মায়ের। দীর্ঘদিনের অপেক্ষাতে মন বসত না মেয়ের বাবা-মায়ের। তাই মেয়ের মুখ দেখতে জামাই আদরের পরিকল্পনা করা হলে জ্যৈষ্ঠামাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে জামাইষষ্ঠী হিসেবে পালন করা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কারগুলির ভোল বদলেছে। কন্যার মুখ দেখার জন্য এই নিয়ম পালিত হলেও. বর্তমান দিনে সংস্কারের মূল্য বিশেষ গুরুত্ব পায় না। তবে মেয়ে-জামাইকে নিমন্ত্রণ করে বিশাল আয়োজন করে পালন করা হয় এই ষষ্ঠী।

পৌরাণিক ইতিহাস

কথিত আছে, বেড়াল হল ষষ্ঠীর বাহন। একটি পরিবারে দুটি বউ ছিল। লোভী ছোট বউ বাড়িতে যেদিন যেদিন মাছ ও ভাল ভাল খাবার রান্না করা হত, সেদিন সে লুকিয়ে লুকিয়ে খেয়ে নিত আর দোষ দিত বাড়ির বিড়ালের উপর। এমন অভিযোগ শোনামাত্রই দেবী ষষ্ঠী রেগে যান। যার কারণে ছোট বউয়ের সাত পুত্র ও এক কন্যার প্রাণ হরণ করেছিলেন দেবী। জঘন্য অপরাধের জেরে তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলে মনের দুঃখে ছোট বউ কাঁদতে থাকে। ষষ্ঠী এক বৃদ্ধার বেশে তাঁর কাছে গেলে সে কান্নায় ভেঙে পড়ে ও তাঁর পূর্বের আচরণের কথা স্মরণ করিয়ে নিজের রূপ ধারণ করেন দেবী ষষ্ঠী। ক্ষমা চাইলে তাঁকে ক্রমে ক্রমে সন্তান ফিরিয়ে দেন তিনি। এর পর থেকেই ষষ্ঠী পুজোর মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়ে।

Disclaimer: এখানে উপলব্ধ তথ্য শুধুমাত্র বিশ্বাস এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে টিভিনাইন বাংলা কোনও বিশ্বাস বা তথ্য নিশ্চিত করে না। কোনও তথ্য বা বিশ্বাস অনুশীলন করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।