Green Kali: বাঁশির সুরে সন্তুষ্ট হন হরিপালের সবুজ কালী! শক্তি আরাধনায় রয়েছে বৈষ্ণব যোগ
Green Kali: হরিপালের শ্রীপতিপুর পশ্চিম গ্রামে প্রায় ৭০ বছর ধরে দেবী পূজিত হয়ে আসছেন এই রূপেই। এই পুজো ঘিরে রয়েছে আরও নানা সব অদ্ভুত রীতিনীতি।
‘শ্যামা মা কি আমার কালী রে?’কোথাও তিনি পূজিত হন শশ্মানবাসিনী শ্যামবর্ণা রূপে, আবার কোথাও তাঁর গায়ের রং নীল। কিন্তু কখনও শুনেছেন মা কালীর গায়ের নাম সবুজ? হ্যাঁ অবাক লাগলেও সত্যি। ব্যাতিক্রমী ‘সবুজ কালী’র পুজো হয় কলকাতার কাছেই হুগলীর হরিপালে। হরিপালের শ্রীপতিপুর পশ্চিম গ্রামে প্রায় ৭০ বছর ধরে দেবী পূজিত হয়ে আসছেন এই রূপেই। এই পুজো ঘিরে রয়েছে আরও নানা সব অদ্ভুত রীতিনীতি।
গরিব বৈষ্ণব পরিবারের সন্তান বটকৃষ্ণ অধিকারী। মাঠেঘাটে ঘুড়ে বেড়াতে ভালবাসতেন। রাখালরাজার মতোই তাঁরও সঙ্গী ছিল গরু। আর সঙ্গে থাকত সাধের আড়বাঁশিটি। এমনি একদিন নিজের গরুটিকে নিয়ে চড়তে বেড়িয়ে ছিলেন, হঠাৎই দেখা দেন এক সন্ন্যাসি। মধ্যরাতে গভীর জঙ্গলে, পর্ণ কুটিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। গুরুবিদ্যা লাভ করেন, বটকৃষ্ণ অধিকারী। গোঁড়া বৈষ্ণব অধিকারী মশাই হয়ে উঠলেন শক্তি সাধক। স্বপ্নাদেশ পেয়ে প্রতিষ্ঠা করেন মায়ের মন্দির। কিন্তু মায়ের মন্দির করব বললেই তো আর হল না। বৈষ্ণব বাড়িতে শক্তি সাধনা? এ যে ঘোর অনর্থ! কিন্তু মায়ের ডাক এলে কী আর তা ফেরানো যায়? বাড়িতেই ঘট স্থাপন করে শুরু হল পুজো।
আবার স্বপ্নে এলেন মা। কিন্তু একী রূপ! শ্যাম বর্ণ ছেড়ে দেবী, সবুজ রং ধারণ করেছেন। একই সঙ্গে ধারণ করেছেন খড়্গ ও ত্রিশূল। মায়ের ইশারা বুঝে এই রূপেই রটন্তী কালী পুজোর দিনে বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করলেন মাতৃ মূর্তি। মিলে মিশে একাকার হয়ে গেল শাক্ত-বৈষ্ণব। একই অঙ্গে যেন দুই রূপ।
এই খবরটিও পড়ুন
এই পুজোর সবচেয়ে অবাক করা নিয়ম হল বাঁশি। কথিত বটকৃষ্ণের আড় বাঁশি শুনে মুগ্ধ হয়ে ধরা দিয়েছিলন দেবী। তাই আজও নিত্যদিন পুজোর সময় বাঁশি বাজিয়ে শোনাতে হয় মাকে। অধিকারী বংশের উত্তরসুরীরা আজ তিন পুরুষ ধরে পালন করে আসছে এই প্রথার। রোজ বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গেই শ্যামা পুজোর দিন রাতেম দ্বিতীয় প্রহরে মা’কে বাঁশি বাজিয়ে শোনানো হয়। রাত ন’টা থেকে ১২’টা অবধি অবিচ্ছিন্ন বাঁশি বাজে।
দেবীর অঙ্গরাগ হয় দূর্বাঘাসের ভিতরের কচি সবুজ পাতার রং মিশিয়ে। দীপান্বিতা শ্যামা পুজোর দিন মায়ের বিশেষ ষোড়শ উপাচারে পূজা আরতি আমিষ ভোগ ও হোম নিবেদন হয়। শ্যামা পুজোর দিন নিবেদন করা হয় মায়ের প্রিয় ভোগ ইলিশ মাছ আর প্রিয় পুষ্পার্ঘ্য জুঁই।