AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Ranna Puja 2022: কেন ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতেই হয় রান্না পুজো, জানেন?

Arandhan 2022: গ্রাম বাংলার যে কোনও পুজোর সঙ্গেই যোগ রয়েছে কৃষিকাজের। তা সে নবান্ন হোক বা রান্নাপুজো...

Ranna Puja 2022: কেন ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতেই হয় রান্না পুজো, জানেন?
বিশ্বকর্মর সঙ্গেও এই পুজোর বিশেষ যোগ রয়েছে
| Edited By: | Updated on: Sep 17, 2022 | 2:45 PM
Share

সকাল থেকেই আজ দিকে দিকে ঢাকের আওয়াজ, ঘন্টাধ্বনি। কারণ বিশ্বকর্মা পুজো। তবে আকাশের সেই মুখভার। সারাজিন ধরেই চলছে বৃষ্টি। তবে আজ রাঢ় বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বাড়িতে বাড়িতে চলছে রান্নাপুজোর আয়োজন। এই পুজোর নিয়ম হল ভাদ্রে রান্না, আশ্বিনে খাওয়া। যদিও আজ সংক্রান্তি। শুক্রবার সারা রাত জেগে হয়েছে রান্না। আজ উনুন বন্ধ। এমনকী বঁটি, বাটখারা সবই আজ তেল-সিঁদুরে পুজো করা হয়। এই সংক্রান্তিতে কচু, ইলিশ, চিংড়ি রান্না হবেই। এই খাবার প্রথমে মনসাকে নিবেদন করে তারপর বাড়ির সকলে একসঙ্গে বসে সেই খাবার খাবেন।

এদিন বাড়িজুড়ে চলে উৎসব। বাড়িতে এদিন আর কোনও রান্না হয় না। এই রান্নাপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মনসা পুজো। বর্ষায় বাড়ে সাপের উপদ্রব। আর তাই গোটা মাস জুড়ে মনসার পুজো এবং ভাসানগান হয়। এই ভাদ্র সংক্রান্তিতে তাই মনসারই পুজো করা হয়। ভাদ্রের প্রতি শনিবারে মনসার পুজো করেন। গ্রাম বাংলার অনেক ঘরেই এখনও বাস্তুসাপের প্রতি একটা বিশ্বাস রয়েছে। মনে করা প্রতিটি বাড়িতেই বাস্তুসাপ থাকে এবং তা পবিত্র। মনসার প্রতীক হিসেবে সেই সাপেরই পুজো করা হয়। এমনও সোনা যায় যখন পুজোর আয়োজন চলে, কাটাকুটি হয়, তখন নাকি পাশ থেকে সাপের হিসহিস শব্দও সোনা যায়। বাস্তুসাপকে সন্তুষ্ট করতেই এদিন উনুনের পাশে, গোয়ালঘরে সিঁদুর ফেলে রাখার রীতি রয়েছে।

গ্রাম বাংলার যে কোনও পুজোর সঙ্গেই যোগ রয়েছে কৃষিকাজের। তা সে নবান্ন হোক বা রান্নাপুজো। আদিম শস্য উৎসবের স্মৃতি ফিরিয়ে দেয় এই পুজো। এছাড়াও অনেকে মনে করেন মনসা ছাড়াও এই উৎসবের সঙ্গে যোগ রয়েছে বিশ্বকর্মার। বিশ্বকর্মাকে কৃষির দেবতাও বলা হয়। বৃহৎসংহিতা অনুযায়ী, গ্রীষ্মের শেষে মেঘকে ডেকে বৃষ্টি নামিয়ে শুকনো খটখটে জমিকে শস্য শ্যামলা করেছিলেন তিনিই। শস্য উৎপাদনের সঙ্গে যিনি জড়িয়ে শস্যের উৎসবের সঙ্গেও যে তিনি জড়িয়ে থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। তাই বিশ্বকর্মা পুজোর দিন বৃষ্টি অবধারিত। এদিন কিন্তু আকাশে রঙিন ঘুড়ির ছড়াছড়ি থাকে।

রোজ রান্না হয় যে উনুনে তাও আজ সেজে ওঠে। সকালে স্নান করে পরিষ্কার কাপড়ে রান্নাঘর নিকিয়ে সুন্দর করে আলপনা দেওয়া হয়। একপাশে রেখে দেওয়া হয় শালুক বা ফণীমনসার ডাল। সেখানেই বসানো হয় মনসার ঘট। আগের দিনে রাঁধা বাসী খাবার এবং জল ঢালা ভাত পরিবেশন করা হয় দেবীকে। রান্নাপুজো শহরে গ্রামে তিন ভাবে হয়। কারোও বাড়িতে হয় ইচ্ছেরান্না, কারো ধরাটে রান্না আবার কারোও ক্ষেত্রে তা আটাশে রান্না হিসেবে পরিচিত। গ্রাম, শহরের বিভিন্ন জলাশয়ে এদিন মাছ ধরার প্রতিযোগিতাও হয়। দুর্গাপুজোর আগে এটাই বাঙালিদের শেষ বড় পুজো। তাই মনসার রূপে একাধারে দুর্গারই পুজো হয় বলে কেউ কেউ মনে করেন।