CWG 2022 : গ্রামে মুরগী, ছাগল পুরস্কার পেতেন, সেই মেয়েই দেশের হয়ে ব্রোঞ্জ জিতলেন

Commonwealth Games 2022: সালিমাদের বার্ষিক আয় ছিল খুব বেশি হলে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো। বাবা-মা, আরও পাঁচ ভাই-বোন। ৮ জনের সংসারে এই টাকা সামান্যই।

CWG 2022 : গ্রামে মুরগী, ছাগল পুরস্কার পেতেন, সেই মেয়েই দেশের হয়ে ব্রোঞ্জ জিতলেন
গোলের পর মধ্যমণি সালিমা। Image Credit source: PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 07, 2022 | 3:39 PM

নয়াদিল্লি : টোকিও অলিম্পিক হোক কিংবা কমনওয়েলথ গেমস (Commonwealth Games 2022)। ভারতীয় মহিলা হকি দলের মিডফিল্ডে অন্যতম ভরসা সালিমা টেটে। যারা গোল করেন, তাঁদের নিয়ে আলোচনা বেশি হয়। সেটাই স্বাভাবিক। নীরবে খেলা তৈরি করা মিডফিল্ড কিংবা ডিফেন্সের অনেক অবদানই ঢাকা পড়ে যায়। টোকিও অলিম্পিকে অল্পের জন্য পদক জেতা হয়নি। বলা ভালো, ইতিহাস গড়া হয়নি ভারতীয় হকি (Hockey) দলের। কমনওয়েলথ গেমসের সেমিফাইনালে রেফারিং ঠিক হলে, ভারতীয় মহিলা হকি দল হয়তো সোনা-রুপোর ম্যাচ খেলত। ব্রোঞ্জ পদকের ম্যাচে পেনাল্টি শুটআউটে নিউজিল্যান্ডকে ২-১ হারাল ভারত (Team India)। নির্ধারিত সময়ের মাত্র ১৮ সেকেন্ড আগে গোল না খেলে, এত কঠিন হত না ভারতের ব্রোঞ্জ। ম্যাচে আলাদা করে বলতে হয় মিডফিল্ডার সালিমা টেটের কথা। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে গোল করে তিনিই দলকে এগিয়ে দেন। টোকিও অলিম্পিকের হতাশা ভুলে কমনওয়েলথ গেমসে পদক।

সালিমা টেটে। ঝাড়খণ্ডের সিমডেগা জেলার গ্রামের মেয়ে। হকিতে ছোট থেকেই তারকা। সে সময় তাঁর ‘স্টারডম’ শুধুমাত্র আশেপাশের গ্রামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। বাবা সুলক্ষণের সঙ্গে সালিমাও গ্রামের হকি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে, সালিমা দ্বিতীয় কণিষ্ঠ। হকিতে প্রথম প্রতিযোগিতায় নামা ২০১০-এ। তখন সালিমার বয়স ৯-১০ বছর। গ্রামের প্রায় ৪০ জন তিনটি দল গড়েছিল। সালিমা সে সময় রক্ষণে খেলেন। কখনও মাস প্রায় ১০ টি প্রতিযোগিতাতেও অংশ নিয়েছেন। এমনই এক প্রতিযোগিতা থেকে সিমডেগা হকি সংস্থার সভাপতি মনোজ কোনডেগির নজরে পড়েন সালিমা। গ্রামে হকি টার্ফ ছিল না। ঘাসের মাঠেই অনবদ্য পারফরম্যান্স করেন সালিমা। সিমডেগায় ঝাড়খণ্ড সরকারের হকি অ্যাকাডেমিতে প্রায় ৫০০ জন অংশ নিয়েছিল সেই প্রতিযোগিতায়। বয়সে অনেক বড় হকি খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে রক্ষণ সামলাতে হয়েছিল সালিমাকে। মনোজ কোনডেগি চেয়েছিলেন সালিমা ট্রায়ালে নামুক। কিন্তু সালিমার বাবা সুলক্ষণ সে সময় রাজী হননি। তিনি চেয়েছিলেন, মেয়ে আরও অন্তত দু বছর পড়াশুনা করবে। অবশেষে ২০১৩-তে ট্রায়ালে অংশ নেন সালিমা। বাকিটা ইতিহাস।

সালিমাদের বার্ষিক আয় ছিল খুব বেশি হলে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো। বাবা-মা, আরও পাঁচ ভাই-বোন। ৮ জনের সংসারে এই টাকা সামান্যই। সাত একর জমি থাকলেও ঝাড়ঘণ্ডের পাথুরে জমিতে ফসল ফলানো খুবই কঠিন কাজ ছিল। কিছু মরসুমী ফসল চাষ করতেন। টাকার জন্য হকি খেলতেন কিংবা মেয়েকে হকি খেলার প্রতি উৎসাহ দিয়েছিলেন তা নয়। সুলক্ষণের কথায়- সালিমার জন্যই গ্রামের খেলায় তাদের দল বেশিরভাগ সময় জিতত। পুরস্কার হিসেবে পেতেন মুরগী, ছাগল। সেগুলো সকলে ভাগ করে খেতেন।