India vs New Zealand: শ্রেয়সের অভিষেক সেঞ্চুরিকে ম্লান করে দিচ্ছেন ইয়ং-ল্যাথাম জুটি
লাঞ্চের একটু পরেই রাহুল দ্রাবিড়ের টিম শেষ হয়ে যাওয়ায় একটাই প্রশ্ন, কানপুর টেস্টে কি জিততে পারবে ভারত? নাকি ৩৩ বছরের খরা কাটিয়ে ফেলবেন কিউয়িরা? তৃতীয় দিনের প্রথম দুটো সেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে গ্রিন পার্কে।
ভারত ৩৪৫ নিউজিল্যান্ড ১২৯-০
(গতকালের ২৫৮-৪ এর পর)
কলকাতা: বল ঘুরছে। নীচুও হচ্ছে। মন্থর হয়ে আসছে পিচ। ছোবলও মারতে শুরু করেছে। কানপুরের গ্রিন পার্ক যাঁরা চেনেন, খুব ভালো করে জানেন, যত সময় যাবে, তত কঠিন হয়ে যাবে ব্যাটারের পরীক্ষা। ভুল হোক আর না-ই হোক, আচমকা উইকেট কেড়ে নিতে পারে গ্রিন পার্ক।
সহজ করে যতই বোঝানো হোক না কেন, সব সময় সহজ হয় না। পিচের বিরুদ্ধে গিয়েও কেউ কেউ সাফল্য পান। আপাতত সেই তালিকায় রাখতে হবে নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনারকে। ‘উইল’ থাকলে যে ‘ইয়ং’ও দুরন্ত হয়ে উঠতে পারেন! সঙ্গী টম ল্যাথাম হলে তো কথাই নেই! দ্বিতীয় দিনের শেষ কিউয়ি ওপেনারদের নির্যাস ১২৯-০। ভারতীয় স্পিনার ত্রয়ী— রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাডেজা, অক্ষর প্যাটেলরা ৪১ ওভার বল করেছেন সব মিলিয়ে। কিন্তু উইকেটের অ্যাকাউন্ট শূন্য। ইয়ং-ল্যাথামকে টলানো যায়নি এখনও। ২৯ বছরের উইল ইয়ং ৭৫ করে ক্রিজে। ল্যাথাম বরাবরের মতো ধীরস্থির। দিনের শেষে হাফসেঞ্চুরিটা শুধু ছুঁয়েছেন।
যতই কেন উইলিয়ামসনরা বিশ্বের সেরা টেস্ট টিম হোক, গ্রিন পার্কে ৩৩ বছরে কোনও টেস্ট ম্যাচ জিততে পারেনি কিউয়িরা। দ্বিতীয় দিনের শেষে ২১৬ রানে পিছিয়ে থাকা নিউজিল্যান্ড তৃতীয় দিনের দখল যদি নিতে পারে, তা হলে কিন্তু স্বপ্নপূরণের রুপোলি রেখা দেখতে পাবেন উইলিয়ামসন-টিম সাউদিরা।
প্রথম দিনের ২৫৮-৪ নিয়ে নামা অজিঙ্কা রাহানের টিম যে দিনের শেষে চাপে পড়ে যাবে, তা বোঝা যায়নি। সকালটা ছিল শ্রেয়স আইয়ারের। আগের দিন ৭৫ রান নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। দু’বছর আগে টেস্ট টিমে সুযোগ পেলেও অভিষেক হয়নি তাঁর। সেই শ্রেয়স অভিষেকেই সেঞ্চুরি করে রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিলেন। মহম্মদ আজহারউদ্দিন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো আত্মপ্রকাশেই শতরানের বিরল কৃতিত্ব গড়ে ফেললেন। কিন্তু ১৭১ বল খেলে ১০৫ করে আউট হতেই ধস নামে ভারতীয় ইনিংসে। মাত্র ৮৭ রানে ছ’উইকেট পড়ে যায় ভারতের। আগের দিন হাফসেঞ্চুরি করা রবীন্দ্র জাডেজা ওই ৫০-এই থামেন। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৩৮ করে আউট। অক্ষর প্যাটেল (৩) উমেশ যাদব (নট আউট ১০) ইশান্ত শর্মারা (০) ফিরে যেতেই ভারতের প্রথম ইনিংস শেষ। ঋষভ পন্থকে বিশ্রাম দেওয়ায় বাংলার কিপার ঋদ্ধিমান সাহা টিমে সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু ব্যাট হাতে আরও একবার ব্যর্থ তিনি। মাত্র ১ করে সাউদির বলে আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।
ভারতের মিডল অর্ডার ভাঙলেন নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞ বোলার টিম সাউদি। প্রথম দিন তাঁর ঝুলিতে ছিল চেতেশ্বর পূজারার উইকেট। দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই জাডেজাকে বোল্ড করেন। শ্রেয়স, ঋদ্ধিমান, অক্ষরকেও ফেরত পাঠান তিনি। এই রকম ম্যাচে কী ভাবে ফাঁদে ফেলতে হয় ব্যাটারদের, খুব ভালো করে জানেন তিনি। ট্রেন্ট বোল্ট টেস্ট সিরিজে না থাকায় পেস বোলিংয়ের দায়িত্বটা নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে ৬৯ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন। মুম্বইজাত স্পিনার আজাজ প্যাটেলের ঝুলিতে ২ উইকেট।
লাঞ্চের একটু পরেই রাহুল দ্রাবিড়ের টিম শেষ হয়ে যাওয়ায় একটাই প্রশ্ন, কানপুর টেস্টে কি জিততে পারবে ভারত? নাকি ৩৩ বছরের খরা কাটিয়ে ফেলবেন কিউয়িরা? তৃতীয় দিনের প্রথম দুটো সেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে গ্রিন পার্কে। অশ্বিন-জাডেজা-অক্ষররা যদি শুক্রবার সকাল থেকেই ছোবল মারতে শুরু করেন, তা হলে স্বপ্ন অধরাই থাকবে নিউজিল্যান্ডের। আর যদি ল্যাথাম-ইয়ং জুটি দ্বিতীয় দিনের মতো সে সব সামলে দেন?
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ৩৪৫ (শ্রেয়স ১০৫, জাডেজা ৫০, অশ্বিন ৩৮, সাউদি ৫-৬৯, জেমিসন ৩-৯১, আজাজ ২-৯০)। নিউজিল্যান্ড ১২৯-০ (ইয়ং নট আউট ৭৫, ল্যাথাম নট আউট ৫০)।