India vs Pakistan: বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতীয় টিমের পাক-বধের ধারাবাহিক কাহিনি
T20 World Cup: রবিবার ফের ভারত-পাক। কী হতে পারে ম্যাচের ফল? ফেভারিট বিরাট কোহলির টিম। কিন্তু বাবর আজমের পাকিস্তানও খুব বেশি পিছিয়ে নেই। আবেগ আর উত্তেজনার বিস্ফোরণের অপেক্ষায় ওয়াঘার এপার-ওপার।
অভিষেক সেনগুপ্ত
২৮ বছর আগে প্রথমবার মুখোমুখি নেমেছিল দুই টিম। তার অনেক আগে, সেই দেশভাগের সময় থেকেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানে উত্তেজনা চরমে। ওয়াঘার এপার-ওপারে আবেগের বিস্ফোরণ। কথার যুদ্ধ। বাইশ গজের মহারণ। ১৯৯২ সালে প্রথম ভারত-পাক ম্যাচ থেকে ধরলে আজ পর্যন্ত পাকিস্তান কখনও বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতকে হারাতে পারেনি। রবিবার দুবাইতে কি ইতিহাসের গতিমুখ ঘোরাতে পারবে বাবর আজমের টিম? নাকি, বিরাট কোহলিদের দখলেই থেকে যাবে রেকর্ড?
স্মৃতির ভাণ্ডারে উৎসবের কোলাজ মিশে রয়েছে। সচিন তেন্ডুলকর থেকে ভেঙ্কটেশ প্রসাদ, কপিল দেব থেকে মহেন্দ্র সিং ধোনি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রাচুর্যের ভাঁড়ারে চোখ রাখলে সুখের খোঁজ মিলবে। তারই কিছু ঝলক তুলে ধরল টিভি নাইন বাংলা…
ওয়ান ডে ইতিহাস
১৯৯২ সাল
বিশ্বকাপের সে বারই প্রথম দেখা ভারত-পাকিস্তানের। সিডনিতে ভারতের ২১৬-৭ তাড়া করতে নেমে ১৭৩ রানে শেষ ইমরান খানের টিম। ওই ম্যাচে সচিন দুরন্ত পারফর্ম করে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন। ব্যাট হাতে ৫৪ রানের ইনিংসের পাশাপাশি বল হাতে ওপেনার আমির সোহেলের উইকেট নিয়েছিলেন। যার পর ভারতের মুঠোয় চলে আসে ম্যাচ।
১৯৯৬ সালে
এখনও কেউ ফিরে দেখলে বলেন, আমির সোহেল যদি ভেঙ্কটেশ প্রসাদকে ‘বলটা বাউন্ডারি থেকে কুড়িয়ে নিয়ে এসো’ না বলতেন, তা হলে ম্যাচটা জিততেও পারত পাকিস্তান। যে বলে চার খেয়েছিলেন, তার পরের বলেই সোহেলকে বোল্ড করেছিলেন প্রসাদ। ভারত-পাক ম্যাচের সেই ক্লিপিংস আজও অমর।
১৯৯৯ সাল
ম্যাঞ্চেস্টারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২২৭-৬ তুলেছিল ভারত। সচিন হাফসেঞ্চুরি মিস করলেও আজহারউদ্দিন ও দ্রাবিড় হাফসেঞ্চুরি করে টেনেছিলেন টিমকে। বাকি কাজটা শেষ করেছিলেন প্রসাদ ও শ্রীনাথ। প্রসাদ নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট, শ্রীনাথের ছিল ৩ উইকেট। ওই ম্যাচে ৪৭ হেরে বিশ্বকাপে হারের হ্যাটট্রিক করেছিল পাকিস্তান।
২০০৩ সাল
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে সইদ আনোয়ার সেঞ্চুরি করেন। পাকিস্তান ২৭৩-৭ তোলে। কিন্তু সচিন তেন্ডুলকর একাই ঘুরিয়ে দেন খেলা। ৭৫ বলে ৯৮ রানের ইনিংস খেলে যান। যুবরাজ হাফসেঞ্চুরি করেন।
২০১১ সাল
আবার পাকিস্তান বনাম সচিন ম্য়াচ। মোহালিতে ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন সচিন। ভারতের ২৬০-৯-এর জবাবে পাকিস্তান শেষ হয়ে যায় ২৩১ রানে। ভারতীয় বোলারদের ধারাবাহিকতাই ওই বিশ্বকাপে আর এগোতে দেয়নি মিসবা উল হকের টিমকে।
২০১৫ সাল
অ্যাডিলেডের ম্যাচে ভারতীয় টিম কোনও বিভাগেই মাথা তুলতে দেয়নি পাকিস্তানকে। আগে ব্যাট করে ৩০০ করে ভারত। বিরাটের সেঞ্চুরির পাশাপাশি শিখর ৭৩ করেন। রায়না আবার ঝোড়ো ৭৪ করে যান। সোহেল খানের ৫ উইকেট কাজে লাগেনি। শাহজাদ কিংবা মিসবারা কিছুটা চেষ্টা করলেও পাক ব্যাটসম্যানরা খেলা ধরতেই পারেননি। ৭৬ রানে ধোনির টিমের কাছে হেরে যায় পাকিস্তান।
২০১৯ সাল
ইংল্যান্ডের মাটিতে আরও একবার পাকিস্তানের বিপর্যয়। রোহিত শর্মার ১১৩ বলে ১৪০ রানের ইনিংসটাই ফারাক গড়ে দিয়েছিল। সেই সঙ্গে কোহলি করে যান ৭৭ রান। ফখর জামান, বাবর আজম চেষ্টা করলেও ভারতের ৩৪০ রানের জবাবে ৮৯ রানে হেরে যায় ভারত।
টি-টোয়েন্টি ইতিহাস
২০০৭ সাল, গ্রুপ লিগের ম্যাচ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যাত্রা শুরুতেই স্মরণীয় হয়ে আছে ভারত-পাক দ্বৈরথ। ডারবানে গ্রুপ লিগের ম্যাচ সুপার ওভারে গড়িয়েছিল। ওটাই ছিল কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে প্রথম বোল-আউট। আর তাতেই জয় ধোনির টিমের।
২০০৭ সাল, ফাইনাল
বিশ্বকাপের কোনও ফাইনালে ওই প্রথম দেখা ভারত-পাকিস্তানের। আর তাতেই হিরো হয়ে আছেন ভারতের দু’জন। প্রথম জন বোলার যোগিন্দর শর্মা। আর দ্বিতীয় জন, শান্তাকুমারন শ্রীসন্থ। আছেন আরও একজন, তিনি অবশ্য ভিলেন হয়ে রয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেটে। যোগিন্দরের বলে স্কুপ শট খেলতে গিয়ে শ্রীসন্থের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন মিসবা উল হক। ধোনির টিম প্রথম বিশ্বকাপ জিতে হইচই ফেলে দিয়েছিল।
২০১২ সাল
বোলার বিরাট কোহলির এক স্মরণীয় ম্যাচ বলা যেতে পারে। পাকিস্তান ১২৮ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল। একতরফা ম্যাচে ভারতীয় বোলাররাই শেষ করে পাকিস্তান ব্যাটিং লাইনআপকে। ৩ ওভার বল করে হাফিজের উইকেট নিয়েছিলেন বিরাট।
২০১৪ সাল
ঢাকায় আরও একবার একতরফা ভারত-পাক ম্যাচ হয়। আগে ব্যাট করে ১৩০ রান করে পাকিস্তান। বিরাট, শিখর, রায়নারা সহজেই তুলে দিয়েছিলেন সেই রান।
২০১৬ সাল
ইডেনের এই ম্য়াচেও বিরাট কোহলির প্রধান্য। ১১৮-৫ রানে শেষ হয়ে যায় পাকিস্তান। মহম্মদ আমির আর মহম্মদ সামি পাল্টা লড়াই চালালেও বিরাটকে থামাতে পারেননি। ৫৫ নট আউট করে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।
রবিবার ফের ভারত-পাক। কী হতে পারে ম্যাচের ফল? ফেভারিট বিরাট কোহলির টিম। কিন্তু বাবর আজমের পাকিস্তানও খুব বেশি পিছিয়ে নেই। আবেগ আর উত্তেজনার বিস্ফোরণের অপেক্ষায় ওয়াঘার এপার-ওপার।