ভুলের খেসারত দিয়ে তৃতীয় টি-২০তে হার বিরাটদের

শেষ টি-২০ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার। তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ জিতল টিম ইন্ডিয়া। সিরিজ সেরা হার্দিক পাণ্ডিয়া।

ভুলের খেসারত দিয়ে তৃতীয় টি-২০তে হার বিরাটদের
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজ জয়ের পর ভারতীয় দল। ছবি সৌজন্যে - টুইটার (মায়াঙ্ক আগরওয়াল)
Follow Us:
| Updated on: Dec 08, 2020 | 7:30 PM

TV9 বাংলা ডিজিটাল

অস্ট্রেলিয়া ১৮৬-৫ (২০ ওভারে) ভারত ১৭৪-৭ (২০ ওভারে)

একটা ভুল আর একটা ক্যাচ মিসের খেসারত দিতে হল বিরাট কোহলিদের (Virat Kohli)। অস্ট্রেলিয়ার (Australia) মাটিতে টি-টোয়েন্টি(T20) সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করা হল না ভারতের। প্রথম দুটো ম্যাচ জেতায় ২-১ সিরিজ জিতলেন বিরাটরা।

তৃতীয় ম্যাচটাও জিততে পারত ভারত (India)। যদি ভুলের খেসারত দিতে না হত। ১১ ওভারে টি নটরাজনের চতুর্থ বল সরাসরি গিয়ে লাগে ম্যাথু ওয়েডের প্যাডে। ক্যাপ্টেন বিরাট ফিল্ডিং করছিলেন বাউন্ডারিতে। আম্পায়ার প্রথম এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দেননি। বিরাট ছুটে এসে আলোচনা করেন কিপার লোকেশ রাহুল ও বোলার নটরাজনের সঙ্গে। তার পর ডিআরএস নেন। কিন্তু দেখা যায় ততক্ষণে মাঠের জায়েন্ট স্ক্রিনেও ওই আউটের রিপ্লে দেখানো হচ্ছে। বিরাট তখন আবেদন করায় ডিআরএস গ্রাহ্য হয়নি। আবেদনের জন্য নির্ধারিত ১৫ সেকেন্ডের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে।

মাঠের দুই আম্পায়ারের সঙ্গে এ নিয়ে ঝামেলায় জড়ান বিরাট। প্রতিবাদ করেন জোরাল। কিন্তু তা ধোপে টেকেনি। ওই সময় ৫১ রানে ব্যাট করছিলেন ওয়েড। তিনি শেষ পর্যন্ত করে যান ৮০ রান। যদি আউট হয়ে যেতেন, তা হলে ম্যাচে ফিরতে পারতেন বিরাটরা।

এখানেই শেষ নয়, ভুল এর পরেও করেছে ভারতীয় টিম। ম্যাক্সওয়েল যখন ১৯ রানে ব্যাট করছিলেন, যুজবেন্দ্র চাহলের বলে ক্যাচ গলান কিপার রাহুল। ৩৮ রানে ফের ক্যাচ পড়ে তাঁর। ম্যাক্সিও ৫৪ করেন।মূলত এই দুই ব্যাটসম্যানই টানল অস্ট্রেলিয়াকে। তা না হলে কখনওই ১৮৬-৫ পৌঁছতে পারত না অ্যারন ফিঞ্চের টিম। আগের ম্যাচেও ওয়েড হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। এই ম্যাচেও চমৎকার ব্যাটিং করেন। ৫৩ বলে ৮০ করার পথে মেরেছেন ৭টা চার ও ২টো ছয়। ম্যাক্সওয়েলও ৩৬ বলে ৫৪ করে যান। এ ছাড়া কিছুটা রান পেয়েছেন স্মিথ (২৪)।

আরও পড়ুন – অনুশীলন ম্যাচে ঋদ্ধির ব্যাটে মান বাঁচাল ভারত

ভারতীয় বোলাররা অবশ্য কেউই সেই অর্থে ভালো বোলিং করেননি। ওয়াশিংটন সুন্দর ৩৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। ১টা করে উইকেট নটরাজন ও শার্দূল ঠাকুরের। আগের ম্যাচে ১৯৫ তাড়া করে জেতা ভারত এই ম্যাচেও জেতার লক্ষ্য নিয়েই নেমেছিল। বিরাট একটা ওয়ান ডে ম্যাচে কিছুটা রান পেয়েছেন। এই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তাঁর ব্যাটে ফের রান। ৬১ বলে ৮৫ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন। কোনও অজি বোলারই থামাতে পারেরনি তাঁকে। মেরেছেন ৪টে চার ও ৩টে ছয়। বিরাট যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, মনে হচ্ছিল ভারত হয়তো ম্যাচটা জিতেই যাবে। কিন্তু ১৮তম ওভারে ভারতীয় ক্যাপ্টেন আউট হতেই ম্যাচ কার্যত শেষ।

বিরাটকে বাদ দিলে আর কেউই টানতে পারেননি টিমকে। ওপেনার শিখর করেন ২৮ রান। লোকেশ রাহুল ফের ব্যর্থ। ০ করে ম্যাক্সওয়েলের বলে আউট হয়ে ফেরেন। সঞ্জু স্যামসন আরও একবার নিজেকে প্রমাণ করতে পারলেন না। আগামী প্রজন্মের ক্রিকেটার হিসেবে সঞ্জুর নাম বারবার বলা হচ্ছে। মুশকিল হচ্ছে, সুযোগ ঘুরে ফিরে পেলেও তিনি বড় রান করতে পারছেন না। সঞ্জুকেও বুঝতে হবে, রোজ কিন্তু তিনি এমন সুযোগ পাবেন না। রান পাননি শ্রেয়স আয়ারও (০)।

আরও পড়ুন – একটা কিডনি নিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদক অঞ্জু ববি জর্জের !

আঘের ম্যাচে অবিশ্বাস্য ব্যাট করে একাই জিতিয়েছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। ফিনিশার হিসেবে ক্রমশ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন নিজেকে। এই ম্যাচেও ভালো শুরু করেছিলেন। কিন্তু ২০ রান করে অ্যাডাম জাম্পার বলে ফিঞ্চের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এই প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল ভারত। তৃতীয় ম্যাচে হারলেও যা মানসিক ভাবে অনেকটাই এগিয়ে রাখবে ভারতকে। তবে ওয়ান ডে বা টি-টোয়েন্টি সিরিজ নয়, আসল লড়াই হচ্ছে টেস্ট সিরিজ। লাল বলের ক্রিকেটেই এ বার চোখ বিরাটদের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: অস্ট্রেলিয়া ১৮৬-৫ (ওয়েড ৮০, ম্যাক্সওয়েল ৫৪, স্মিথ ২৪, সুন্দর ২-৩৪, নটরাজন ১-৩৩)। ভারত ১৭৪-৭ (বিরাট ৮৫, শিখর ২৮, হার্দিক ২০, সোয়েপসন ৩-২৩, ম্যাক্সওয়েল ১-২০)।