IND vs AUS ICC WC Match Preview: বিশ্বকাপে ‘শুভ’ সূচনার অপেক্ষায় বিরাটদের সামনে ‘৮৭’ বনাম ‘১১’
India vs Australia ICC world Cup 2023: চেন্নাইয়ে ম্যাচ। চিপকে স্পিনসহায়ক পিচে তিন স্পিনার খেলানোর সম্ভাবনাও রয়েছে ভারতের। বরং বলা ভালো, রোহিত কার্যত সেটাই নিশ্চিত করেছেন। রবীন্দ্র জাডেজা, কুলদীপ যাদবের পাশাপাশি অভিজ্ঞ রবিচন্দ্রন অশ্বিন। শেষ মুহূর্তে টিমে এন্ট্রি হয়েছে অশ্বিনের। প্রথম ম্যাচই তাঁর নিজের শহরে। চিপকের পিচ এবং কন্ডিশনকে অশ্বিনের চেয়ে ভালো বোধ হয় কিউরেটরও চেনেন না।
সহজ করে লেখা যেত, আজ ভারতের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু। সামনে এমন একটা দল, যাদের কাছে বিশ্বকাপ জেতা নেহাৎই ছেলেখেলা! এত জটিল করে লেখার নানা কারণ। বলা যায়, ভারতের বিশ্বকাপ অভিযান শুরুর আগে স্থান-কাল-পাত্র নিয়েও আলোচনা করা উচিত। এক যুগ পর ভারতের মাটিতে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। আর বিশ্বসেরা হওয়ার মধ্যে ফারাকটাও এই এক যুগের। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে শেষ বার ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। তা হলে হঠাৎ এই ৮৭ কেন? এরও কারণ রয়েছে। শুভ সূচনা কেন? প্রতিটা টুর্নামেন্টেই শুরুটা ভালো হওয়া জরুরি। সব সময় পরবর্তী সুযোগগুলোতে একইরকম আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামা যায় না। শুভ-সূচনা, ৮৭ বনাম ১১, সব নিয়ে একটু আলোচনা হোক TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে?
এই প্রজন্মের সকলেরই হয়তো ‘১১’ জানা। দীর্ঘ ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান হয়েছিল। ১৯৮৩ সালে কপিল দেবের টিমের সৌজন্যে যে স্বপ্ন দেখার শুরু, একটা ধাপ ছিল ২০১১ সালের বিশ্বকাপ। ৮৩-এর বিশ্বকাপ দেখে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন সচিন তেন্ডুলকরের মতো কিংবদন্তি। তার পরের বিশ্বকাপ? সেখানেই এই ‘স্থান-কাল-পাত্র’ চলে আসে।
তেইশের বিশ্বকাপে আজ অভিযান শুরু করছে। সামনে অস্ট্রেলিয়া। যাদের বিরুদ্ধে সদ্য তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজ জিতেছে ভারত। কিন্তু বড় মঞ্চে অস্ট্রেলিয়া কেমন দল, সেটা আর নতুন করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ১৯৮৭ সালে প্রথম বার ইংল্যান্ডের বাইরে আয়োজিত হয় বিশ্বকাপ। অন্যতম প্রধান আয়োজক ছিল ভারত। ৯ অক্টোবর চেন্নাইতেই ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারতের প্রথম ম্যাচ। প্রতিপক্ষ, অস্ট্রেলিয়া। আজ যদিও অক্টোবরের ৮ তারিখ। ভারতের প্রতিপক্ষ কিন্তু অস্ট্রেলিয়া। আর স্থান, চেন্নাই। ৮৭-এর প্রথম ম্যাচে মাত্র ১ রানে হেরেছিল ভারত। সে বারের বিশ্বকাপের আন্ডারডগ অস্ট্রেলিয়া হারিয়েছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারতকে। চেন্নাইয়ের সেই জয় থেকেই অস্ট্রেলিয়ার যাত্রা শুরু এবং প্রথম বার বিশ্ব জয়ের স্বাদ পেয়েছিল।
তার পরবর্তী ঘটনা! অস্ট্রেলিয়া ওয়ান ডে ফরম্যাটে পাঁচ বার বিশ্বকাপ জিতেছে। ভারত সব মিলিয়ে দু-বার। প্রথম ম্যাচের আগে ভারতের সামনে যেমন ২০১১ বিশ্বকাপের উদাহরণ রয়েছে, তেমনই ৮৭-রও। প্রতিপক্ষ এক, প্রজন্ম আলাদা। ভারতের সূচনা শুভ হবে কিনা, সেটা সময় বলবে। ম্যাচের আগে একটা অস্বস্তি রয়েছে। শুভমন গিলকে ঘিরে। টিম ইন্ডিয়ার এই তরুণ ওপেনার এ বছর স্বপ্নের ফর্মে। বিশেষ করে দেশের মাটিতে আরও বিধ্বংসী মেজাজে। ফরম্যাট যাই হোক। এ বছর ওয়ান ডে ফরম্যাটে ইতিমধ্যেই তাঁর নামের পাশে ১২৩০ রান! তাঁকে কি প্রথম ম্যাচে আদৌ পাওয়া যাবে?
পরিস্থিতি এবং বাস্তব বলছে ‘না’। বিশ্বকাপ অভিযান শুরুর দু-দিন আগে কোচ রাহুল দ্রাবিড়ও আশার বার্তা দিয়েছেন। ম্যাচের আগের দিন অধিনায়ক রোহিত শর্মাও জানিয়েছেন, শুভমন সুস্থ নয়, তবে এই ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছে এখনই বলা যাবে না। যদিও অনুশীলনে শুভমনের অনুপস্থিতি এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিই বলে দিচ্ছে, শুভমন এই ম্যাচে নেই। রোহিতের ওপেনিং সঙ্গী হতে পারেন বাঁ হাতি ব্যাটার ঈশান কিষাণ।
চেন্নাইয়ে ম্যাচ। চিপকে স্পিনসহায়ক পিচে তিন স্পিনার খেলানোর সম্ভাবনা ভারতের। বরং বলা ভালো, রোহিত কার্যত সেটাই নিশ্চিত করেছেন। রবীন্দ্র জাডেজা, কুলদীপ যাদবের সঙ্গে অভিজ্ঞ রবিচন্দ্রন অশ্বিন। শেষ মুহূর্তে টিমে এন্ট্রি হয়েছে অশ্বিনের। প্রথম ম্যাচই তাঁর নিজের শহরে। চিপকের পিচ এবং কন্ডিশনকে অশ্বিনের চেয়ে ভালো বোধ হয় কিউরেটরও চেনেন না।
ব্যাটিং আক্রমণের দিক থেকে ভারত-অস্ট্রেলিয়া দু-দলই সমানে সমানে। বোলিংয়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে ভারত। জসপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ রয়েছেন। পেস বোলিংয়ে তাঁদের সঙ্গী হার্দিক পান্ডিয়া। আর তিন স্পিনার খেলালে, কারও দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তোলার জায়গা নেই। অস্ট্রেলিয়া এখানেই কিছুটা পিছিয়ে। অন্তত এই ম্যাচটায়। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ স্কোয়াডে মাত্র একজন স্পেশালিস্ট স্পিনার, অ্যাডাম জাম্পা। ভারতীয় ব্যাটারদের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে বিরাট কোহলির সঙ্গে তাঁর দ্বৈরথ বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম উপভোগ্য বিষয়। লেগ স্পিনারের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্য়াটারদের কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে। তা নতুন নয়। তাঁকে উইকেট না দিলে! স্পিন বোলিংয়ে আর এক বিকল্প গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। বিশ্বকাপের আগে ওয়ান ডে সিরিজের শেষ ম্যাচে ম্যাক্সওয়েল খুবই ভালো বোলিং করেছেন। অজি শিবিরে ভরসা হয়ে উঠেছেন ‘ম্যাক্সি’।
ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আবারও সেই প্রসঙ্গ। শুভমন গিল। তাঁকে যদি পাওয়া যায়, নিঃসন্দেহে টিম ইন্ডিয়ার জন্য বিরাট প্রাপ্তি। না হলে ওপেনিং জুটি নিয়ে একটু হলেও চিন্তা থাকবে। গত বিশ্বকাপের পর থেকে রোহিত শর্মা অতি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছেন। উল্টোদিকে ইনিংস অ্যাঙ্কর করার জন্য কাউকে চাই। তাই ওপেনিং জুটি দীর্ঘস্থায়ী না হলে কোহলির কাঁধে বিরাট দায়িত্ব।
টিম ইন্ডিয়ায় এই বিশ্বকাপ যেন দু-জনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক কিং কোহলি, দুই প্রিন্স অফ ক্রিকেট। আর দু-জনের ব্যাট যদি এক সঙ্গে ‘প্রতিযোগিতা’য় নামে, বিশ্বজয়ের অপেক্ষা হয়তো এ বারই মিটবে। সবার আগে নজরে, অনবদ্য একটা ‘শুরু’। যেমন প্রথমেই বলা হয়েছিল, ‘শুভ’ সূচনা।