Ravindra Jadeja: একেই বলে কর্মফল! ম্যাচ জিতিয়ে ধোনির কোলে জাডেজা

IPL 2023 Final Chennai Super Kings Vs Gujarat Titans : ক্রিকেট কখনও ঝুট-ঝামেলা মনে রাখে না। ক্রিকেট মনে রাখে নায়ককে, ক্রিকেট মনে রাখে ম্যাচ উইনারদের, ক্রিকেট মনে রাখে ফিনিশারদের। ধোনিকে যদি হৃদয়ে জায়গা দেয় ক্রিকেট, জাডেজাকেও কাছে টানবে।

Ravindra Jadeja: একেই বলে কর্মফল! ম্যাচ জিতিয়ে ধোনির কোলে জাডেজা
Image Credit source: twitter
Follow Us:
| Updated on: May 30, 2023 | 2:23 AM

প্লট ওয়ান- নাম কা ওয়াস্তে ক্যাপ্টেন! আসল লোক তো অন্য কেউ। এই সামান্য কটা কথা কি সম্পর্কে চিড় ধরিয়ে দিতে পারে? নিশ্চয়ই পারে। না হলে, তল্পি গুটিয়ে সরাসরি বাড়ি ফিরে যেতেন না। কে আর মুখের বদলে মুখোশ হতে চায়! এই প্লটের ওপর কী দুরন্ত গল্পই না লেখালেখি হয়েছে। সবচেয়ে কাছের মানুষই নাকি ডুবিয়েছে তাঁকে। এই গল্পের শিরা-উপশিরায় আসলে যে কী ছিল, আজও জানা যায়নি। আশ্চর্য নীরবতা পালন করেছেন দু-পক্ষই।

প্লট টু- যার যা কর্মফল, তাকেই ভোগ করতে হবে। এই কয়েক শব্দের টুইট নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। লক্ষ্য কে? কেন? ঘটনা আসলে কী? এমন হাজারো প্রশ্ন ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে এসেছে তাঁর দিকে, তাঁদের দিকে।

টিমে ওই একটাই পোস্ট, বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট। অর্থাৎ, তাঁকে দিয়েই শুরু, তাঁকে দিয়েই শেষ। বাকি যাঁরা আছেন, তাঁরা স্রেফ সহযোগী। সাইডরোলের ভূমিকায়। নায়ক হওয়ার সুযোগ তাঁরা কখনও পাবেন না। মুশকিল হচ্ছে, দূর থেকে সবকিছুই বড্ড ঘন মনে হয়। যে কোনও সামান্য ঘটনা বিতর্ক বলে মনে হয়। আর তখনই দূরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন না জেনে, না বুঝে কত কী যে বলেন, তার ইয়ত্তা নেই।

প্লট তিন- ওই দৌড় যে একেবারে কোলে উঠে থামাবেন কে জানতো! এতদিনের এত জটিলতা, সূক্ষ্ণ ফারাক কি তবে ছিল না? হয়তো ছিল, থাকলেই বা কী! এক সংসারে থাকলে ঠোকাঠুকি লাগতেই পারে। তাতে ভরসা নষ্ট হয় না, তাতে সম্পর্কও শেষ হয় না। বরং বন্ধুত্ব গাঢ়ই হন। তিনি ছুটে কোলে উঠে পড়তে এক গাল হাসলেন বিয়াল্লিশের ওই তরুণ। সত্যিই তো তিনি পারেননি। তাঁর সতীর্থ যদি না পারতেন শেষ বেলায় এই আইপিএলটা কি আসতো?

এই গল্প মহেন্দ্র সিং ধোনির। এই কাহিনি রবীন্দ্র জাডেজার। দুই বন্ধু কিংবা দাদা-ভাইয়ের অম্লমধুর সম্পর্ক নিয়ে কম কথা হয়নি। এমনও বলা হচ্ছে, এই আইপিএল যেমন ধোনির শেষ, জাডেজারও। হলুদ জার্সিতে নাকি আর কখনও খেলবেন না বাঁ হাতি অলরাউন্ডার। তাঁর সঙ্গে অনেক বঞ্চনা করেছেন ধোনি। নেতৃত্ব দিয়েও দেননি। চলতি মরসুমে মাঠেই সরাসরি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। ঠিক যেমন জুনিয়রদের ক্ষেত্রে করেন। ধোনি যেমন এই মরসুমে খেলার উর্ধ্বে বাস করেছেন, খোদ ক্রিকেটকেই নিজের কিট ব্যাগে নিয়ে ঘুরেছেন, আইপিএলে শেষ ম্যাচে জাডেজাও অতিমানবিক হয়ে উঠলেন। যেন মাহি ভাইয়ের ‘ফিনিশার’ শব্দটা নিজের জন্য তুলে নিলেন।

১৪.৪ ওভার। স্কোরবোর্ড বলছে চেন্নাই সুপার কিংসকে যদি ট্রফি জিততে হয় শেষ দু বলে ১০ রান করতে হবে। রান আপে মোহিত শর্মা। তিন উইকেট নিয়ে সিএসকের মেরুদণ্ড ভেঙেছেন। মাপা লেন্থ, নিখুঁত ইয়র্কার, ভেবলে দেওয়া স্লোয়ারে রীতিমতো কাঁপছে হলুদ জার্সি। তবু রবীন্দ্র জাডেজাকে স্ট্রাইক নিতে দেখে টেনশনের মধ্যেও স্বপ্ন দেখছিল চেন্নাই। ইচ্ছে হলে স্যার জাডেজা সব করতে পারেন। হলও তাই। পঞ্চম বলে ৬, ষষ্ঠ বলে চার।

এ যেন অনেকটা কাতারি ছবি। ঠিক যেমন লিওনেল মেসির হাতে ৯ থেকে ৯০ বিশ্বকাপ দেখতে চেয়েছিল। ৩৫-এর মেসি আর কখনও বিশ্বকাপ খেলবেন কী না, কে জানে! যাওয়ার আগে কাপটা যোগ্য হাতে থাকুক। ৪২-এর ধোনিও যেন মেসিরই মতো। যেমন চেন্নাই চেয়েছে, যেমন আইপিএল চেয়েছে, যেমন ধোনি ভক্তরা চেয়েছেন, তেমনই ক্রিকেট দুনিয়াও চেয়েছিল, চলে যাওয়ার পথে যেন কাপের আলো থাকে। চেয়েছিলেন রবীন্দ্র জাডেজাও। এত দিনের সম্পর্ক। এই কাপটা ধোনিকে উৎসর্গ করবেন না, হয় নাকি!

ক্রিকেট কখনও ঝুট-ঝামেলা মনে রাখে না। ক্রিকেট মনে রাখে নায়ককে, ক্রিকেট মনে রাখে ম্যাচ উইনারদের, ক্রিকেট মনে রাখে ফিনিশারদের। ধোনিকে যদি হৃদয়ে জায়গা দেয় ক্রিকেট, জাডেজাকেও কাছে টানবে।