IPL 2021: পন্থের দিল্লিকে হারিয়ে ফাইনালে কেকেআর

সাত বছর পর আবার ফাইনালে কেকেআর (KKR)। তৃতীয় বার নাইটদের ট্রফি জয়ের সামনে এখন একটাই কাঁটা মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস (CSK)। ইয়েলোব্রিগেডকে ফাইনালে হারানোটাই বেগুনি শিবিরের এখন মূল লক্ষ্য।

IPL 2021: পন্থের দিল্লিকে হারিয়ে ফাইনালে কেকেআর
IPL 2021: পন্থের দিল্লিকে হারিয়ে ফাইনালে কেকেআর
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 13, 2021 | 11:37 PM

দিল্লি ক্যাপিটালস ১৩৫-৫ (২০ ওভার) কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৩৬-৩ (১৯.৫ ওভার) ৩ উইকেটে জয়ী কেকেআর

শারজা: কলকাতা নাইট রাইডার্সের (Kolkata Knight Riders) কাপ আর ঠোঁটের মাঝে দূরত্ব আর মাত্র এক ম্যাচ। সাত বছর পর আবার ফাইনালে কেকেআর (KKR)। তৃতীয় বার নাইটদের ট্রফি জয়ের সামনে এখন একটাই কাঁটা মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস (CSK)। ইয়েলোব্রিগেডকে ফাইনালে হারানোটাই বেগুনি শিবিরের এখন মূল লক্ষ্য। লিগ টেবলের এক নম্বরে থেকে চেন্নাইয়ের কাছে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারাটা দিল্লির কাছে বড় ধাক্কা ছিল। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারল না দিল্লি ক্যাপিটালস (Delhi Capitals)। পন্থের ক্যাপ্টেন্সিতে এ বারের আইপিএলে শুরু থেকে ভালো পারফর্ম করেও ট্রফি সেই অধরাই রইলো।

টসে জিতে শারজায় শুরুতে পন্থের দিল্লিকে ব্যাটিং করতে পাঠান কেকেআর ক্যাপ্টেন ইওন মর্গ্যান। নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে রাজধানীর দল তোলে ১০০ রান। দিল্লির ওপেনিং জুটিকে আজ ভয়ঙ্কর হতে দেননি বরুণ। বড় রানের পার্টনারশিপ (৩২ রান) গড়ার আগেই পৃথ্বী-শিখর জুটি ভাঙেনআর্কিটেক্ট বরুণ। ১৮ রান করেই সাজঘরে ফেরেন দিল্লির ওপেনার পৃথ্বী শ। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে তিন নম্বরে নামেন মার্কাস স্টোইনিস। পৃথ্বীর পর ধাওয়ানের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন স্টোইনিস। বড় শটের উদ্দেশ্যে শিবম মাভির বল মারতে গিয়ে বোল্ড আউট হয়ে বসেন মার্কাস। ২৩ বলে ১৮ রান করে মাঠ ছাড়েন স্টোইনিস।

আজ, চার নম্বরে নেমেছিলেন শ্রেয়স আইয়ার। ধাওয়ানের সঙ্গে জমাট জুটি গড়ার আগেই ফের দিল্লিকে ধাক্কা দেন বরুণ চক্রবর্তী। ১৫ ওভারের প্রথম বলে ধাওয়ানের উইকেট তুলে নিয়ে কেকেআরকে স্বস্তি এনে দেন বরুণ চক্রবর্তী। ৩৯ বলে ৩৬ রান করে সাকিব আল হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন দিল্লির ওপেনার। ফাইনালের হাতছানি সামনে থাকলেও দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলেন না ঋষভ পন্থ। মাত্র ৬ রান করে লকি ফার্গুসনের গতির কাছে হার মানলেন পন্থ। এক প্রান্ত থেকে দিল্লির নেতা ফিরে গেলেও অপর প্রান্তে ছিলেন দিল্লির পুরনো নেতা। পন্থ ফেরার পর শিমরন হেটমায়ারের সঙ্গে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন শ্রেয়স। এরই মাঝে ১৬.৩ ওভারে শিমরন হেটমায়ারের দুরন্ত ক্যাচ নেন শুভমন গিল। কিন্তু বরুণ চক্রবর্তীর ওই ডেলিভারি নো বল থাকার দরুণ ফের ক্রিজে ফেরেন হেটমায়ার। কিন্তু বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। নামের পাশে ১৭ রান নিয়ে রান আউট হন হেটমায়ার। তিনি ফিরলে নামেন অক্ষর প্যাটেল। শেষ পর্যন্ত অক্ষরের সঙ্গে শ্রেয়স ৯ বলে ১৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। শিবম মাভি-বরুণ চক্রবর্তী-লকি ফার্গুসনের দাপটে ১৩৫ রানে থেমে যায় রাজধানীর দল।

রান তাড়া করতে নেমে নাইটদের শুরু থেকেই স্বস্তি দিতে থাকেন শুভমন গিল ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার। দিল্লির বোলারদের কোনও প্রতিরোধ গড়ার সুযোগই দেননি গিল-আইয়ার জুটি। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে স্কোর বোর্ডে ৫১ রান তুলে দেয় নাইটদের ওপেনিং জুটি। কেকেআরের জমাট জুটিকে ভাঙতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় দিল্লির বোলারদের। কেকেআরের হয়ে এবারের আইপিএলে সুযোগ পেয়ে এই নিয়ে তিনটি হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেছেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। দিল্লির বিরুদ্ধে আজ শারজায় নর্টজে-অশ্বিনদের সামলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। কিন্তু হাফসেঞ্চুরির পর আর বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি ভেঙ্কি। অবশেষে ১৩ ওভারে দিল্লিকে প্রথম সাফল্য এনে দেন কাগিসো রাবাডা। ৪১ বলে ৫৫ রানের ইনিংস নাইটদের নতুন তারা ভেঙ্কটেশ সাজিয়েছিলেম ৪টি চার ও ৩টি ছয় দিয়ে।

ভেঙ্কটেশের পর গিলকে সঙ্গ দিতে আসেন নীতিশ রানা। গিল-রানা জুটি ম্যাচের হাল ধরেন। তবে ১৫.৬ ওভারে এনরিক নর্টজে ওই জুটিতে ভাঙন ধরান। ১২ বলে ১৩ রান করে শিমরন হেটমায়ারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন নীতিশ রানা। জয়ের সামনে থাকা কেকেআরকে লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য ক্রিজে আসেন রাহুল ত্রিপাঠী। শেষ বেলায় (১৬.৪ ওভার) রানার পর শুভমন গিলের উইকেট হারায় নাইটরা। আবেশ খানের বলে ক্যাপ্টেন পন্থকে ক্যাচ দিয়ে, হাফসেঞ্চুরি হাতছাড়া করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন পঞ্জাব তনয় গিল। দলকে কাঙ্খিত জয় এনে দেওয়ার দায়িত্ব রাহুল ত্রিপাঠী-দীনেশ কার্তিকের কাঁধে এসে পড়ে। রাবাডা এই জুটিকে গড়ার আগেই ভেঙে দেন। নামের পাশে শূন্য রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন দীনেশ কার্তিক। সেই সময় দলকে উদ্ধার করতে নাইট ক্যাপ্টেন আসেন। কিন্তু নাইটদের মরণ-বাঁচন ম্যাচে ব্যাট হাতে ফের ব্যর্থ মর্গ্যান। ৩ বল খেলে কোনও রান না করে ১৯ ওভারে এনরিক নর্টজের শেষ বলে আউট হন মর্গ্যান।

এমন সময় এক প্রান্তে রাহুল ত্রিপাঠী যেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন শেষের দিকে দিল্লির বোলিং দাপট। একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে নাইটরা। কেকেআরের স্কোর বোর্ডের দিকে তাকালে দেখা যায় ওপেনার গিল-আইয়ার এবং রানা-ত্রিপাঠী ছাড়া ৪ জন শূন্য রানে আউট। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে সাকিব আল হাসানের উইকেট তুলে নেওয়ার পর, সুনীল নারিনের উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের সামনে থাকা কেকেআরকে ক্ষণিকের জন্য থমকে দিয়েছিলেন অশ্বিন। কিন্তু ১ বল বাকি থাকতেই ছয় মেরে দলকে ফাইনালে পৌঁছে দিলেন রাহুল ত্রিপাঠী। ১২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন ত্রিপাঠী। রাহুলের ওই ছয় কলকাতার সমর্থকদের দুর্গাপুজার অষ্টমীর খুশিতে দ্বিগুণ মাত্রা যোগ করল। ১৫ ই অক্টোবর, দুর্গাপুজোর দশমীর দিন আইপিএল ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের মুখে নামবে কলকাতা নাইট রাইডার্স।