AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

MS Dhoni : ধোনি কাঁদলেন, ধোনি হাসলেন

CSK vs GT, IPL 2023 : ডাগ আউটে গিয়ে যখন বসেছেন, ক্যামেরা প্যান করেছে তাঁকে। স্পষ্টতই চোখ লাল। খানিকটা বাষ্প জমেছে যেন। ধোনি কি কাঁদছিলেন?

MS Dhoni : ধোনি কাঁদলেন, ধোনি হাসলেন
Image Credit: Twitter
| Updated on: May 30, 2023 | 1:55 AM
Share

জীবনের শেষ বলটা খেলার সময় নাকি চোখে জল এসে গিয়েছিল। তাই বল দেখতে পাননি। সেই কারণেই বোল্ড হয়ে যান। ক্রিকেটের খবর যাঁরা রাখেন, তাঁরা ডন ব্র্যাডম্যানের জীবনের শেষ ইনিংসে শূন্য রানের ফেরার ওই মিথ সম্পর্কে কখনও না কখনও শুনেছেন। আমেদাবাদের গভীর রাত কি এমনই কোনও মিথের জন্ম দিয়ে গেল? বোলারের নাম মোহিত শর্মা। স্লোয়ার বুঝতে পারেননি সিএসকে ক্যাপ্টেন। শর্ট একস্ট্রা কভারে দাঁড়িয়ে থাকা ডেভিড মিলারের হাতে লোপ্পায় ক্যাচ দিয়ে ফেললেন। ৪২ বছরের মহেন্দ্র সিং ধোনির এই ম্যাচ যদি জীবনের শেষ ইনিংস হয়, তাহলে মেয়াদ ছিল মাত্র এক বল। ডাগ আউটে গিয়ে যখন বসেছেন, ক্যামেরা প্যান করেছে তাঁকে। স্পষ্টতই চোখ লাল। খানিকটা বাষ্প জমেছে যেন। ধোনি কি কাঁদছিলেন? হয়তো হ্যাঁ, হয়তো না। কিন্তু একথা সত্যি ধোনিকে এমন মুহ্যমান আর কখনও দেখেনি ক্রিকেট দুনিয়া।

সেই ২০১১-র মতো ময়দানে নামলেন তিনি। অম্বাতি রায়াডু আউট হতেই মাঠে ঢুকলেন। মোতেরার গ্যালারিতে তখন তুমুল আলোড়ন। সারা স্টেডিয়াম উঠে দাঁড়িয়েছেন স্বাগত জানিয়েছেন মাহিকে। এমনই পরিস্থিতি তো দরকার ছিল নায়কের জন্য। জীবনের শেষ ম্যাচ একাই জিতিয়ে দেবেন টিমকে। ক্রিজ পর্যন্ত আসার সময় ধোনিকে দেখে বদ্ধপরিকর মনে হচ্ছিল। যেন ২০১১-র সেই ওয়াংখেড়ের রাত ফেরাবেন। সে বার করেছিলেন দেশের জন্য, এবার সিএসকের জন্য। তিরিশের তারুণ্য আর ৪২-এর বুড়োর মধ্যে ফারাক অনেক। ধোনি পারলেন না।

আউট হয়ে ডাগ আউটে ফেরার পর থেকে টুকরো টুকরো দৃশ্য ফুটে উঠছিল। দ্রুত হাতে প্যাড খুলছেন তিনি। নিজের উপর ভয়ঙ্কর বিরক্ত। ক্যাপ্টেন হিসেবে উইনিং শট নিতে পারলেন না, এর থেকে বড় আক্ষেপ আর কি হতে পারে। মাঠে তখন অবিশ্বাস্য ম্যাচ জেতাচ্ছেন রবীন্দ্র জাডেজা। ধোনির সেদিকে চোখই নেই। তিনি বসে রয়েছেন মাথা নীচু করে। অব্যক্ত যন্ত্রণা ফুটে উঠেছে মুখে। খেলা যাই হোক না কেন, চ্যাম্পিয়নদের এই এক অদ্ভুত রসায়ন। মহাতারকা শেষমুহূর্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে রাখতে চান মায়াজাল। যেদিন পারেন না, সেদিন সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় তাঁরই।

ধোনি পারলেন না। সত্যিই কি তাই? বরং বলা উচিত, ধোনি পারলেন। ক্রিকেট নিয়ম, হিসেব, বয়সের উর্ধ্বে নয়। কেউ কেউ পারেন এই নিয়ম, হিসেব আর বয়সের বেড়াজাল ভেঙে ফেলতে। হাঁটুর চোট বারবার তাঁকে বিব্রত করেছে। তবু উইকেটের পিছনেই দাঁড়িয়েছেন তিনি। নির্দ্বিধায় নিয়েছেন ডিআরএস, পলকে উড়িয়েছেন স্টাম্প, কিছু বোঝার আগেই বিপক্ষ জেনেছে, ম্যাচ আর তাঁদের নয়। ঠিক ফাইনালটা যেমন।

ধোনি পারলেন। ধোনিই পারলেন। ৪২-এও খুব সহজেই একটা টিমকে চ্যাম্পিয়ন যে করা যায়, ধোনি দেখিয়ে গেলেন। মোতেরা ভারতীয় ক্রিকেট মহল, বিশ্ব ক্রিকেট— চিরকাল মনে রাখবে রাঁচির তস্য গলির এক যুবককে। যাঁর আবির্ভাব হয়েছিল লম্বা চুল নিয়ে। যাঁর প্রস্থান হল বিয়াল্লিশে। মাঝের এই সময়টুকু যিনি শুনিয়ে গেলেন একরাশ সত্যি স্বপ্নের গল্প। তাতে যেমন দুটো বিশ্বকাপ রয়েছে, তেমনই রয়েছে পাঁচটা আইপিএল।

ধন্যবাদ ধোনি। স্বপ্নে মোড়া এমন এক আশ্চর্য পৃথিবী উপহার দেওয়ার জন্য। আপনি খেলুন আর নাই খেলুন, ক্রিকেট আপনাকে ভুলবে না।