Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Dhruv Jurel: সোনার চেন বিক্রি করে মা কিনে দিয়েছিলেন ক্রিকেট কিট, টেস্ট টিমে ডাক ধ্রুব জুরেলের

উত্তরপ্রদেশের হয়ে ২০২২ সালে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক হয়েছিল ধ্রুব জুরেলের। প্রথম বার জাতীয় দলে ডাক পেয়ে আবেগে ভাসছেন ধ্রুব। দৈনিক জাগরণকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ধ্রুব জানান, ছেলেবেলা থেকেই গলি ক্রিকেট খেলতেন তিনি। বাবাকে জানিয়েছিলেন ক্রিকেট খেলতে চান। কিন্তু সেই সময় তাঁর বাবা বলেছিলেন, ক্রিকেটের পিছনে না দৌড়ে একটি সরকারি চাকরি করতে।

Dhruv Jurel: সোনার চেন বিক্রি করে মা কিনে দিয়েছিলেন ক্রিকেট কিট, টেস্ট টিমে ডাক ধ্রুব জুরেলের
জাতীয় দলে প্রথম বার ডাক পেলেন উত্তরপ্রদেশের ধ্রুব জুরেল।
Follow Us:
| Updated on: Jan 13, 2024 | 3:43 PM

কলকাতা: দেশের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা তাঁর রয়েছে। কিন্তু সিনিয়র টিমের হয়ে এখনও খেলেননি। এই প্রথম বার জাতীয় দলে ডাক পেলেন উত্তরপ্রদেশের বছর ২২ এর ধ্রুব জুরেল (Dhruv Jurel)। ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে নামটা একেবারেই অপরিচিত নয়। আইপিএলের মঞ্চে রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে তাঁকে খেলতে দেখা গিয়েছে। ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও তিনি খেলেছেন। চলতি জানুয়ারির শেষের দিকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের (India vs England) ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হবে। তার প্রথম দুই টেস্টের জন্য ১৬ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বোর্ড। তাতে নাম রয়েছে ধ্রুব জুরেলের। এর পর থেকে ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীরা ধ্রুব জুরেলের ব্যাপারে জানতে আরও আগ্রহী হয়ে পড়েছে।

উত্তরপ্রদেশের হয়ে ২০২২ সালে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক হয়েছিল ধ্রুব জুরেলের। প্রথম বার জাতীয় দলে ডাক পেয়ে আবেগে ভাসছেন উইকেটকিপার ব্যাটার ধ্রুব। দৈনিক জাগরণকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ধ্রুব জানান, ছেলেবেলা থেকেই গলি ক্রিকেট খেলতেন তিনি। বাবাকে জানিয়েছিলেন ক্রিকেট খেলতে চান। কিন্তু সেই সময় তাঁর বাবা বলেছিলেন, ক্রিকেটের পিছনে না দৌড়ে একটি সরকারি চাকরি করতে। ধ্রুব জুরেলের বাবা সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। ধ্রুব জানান, ছেলেবেলায় তিনি যখন দেখতেন তাঁর বাবা সেনাবাহিনীর সিনিয়র অফিসারদের স্যালুট করতেন তাঁর ভালো লাগত না। তখন তিনি ভাবতেন তিনি বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে বড় অফিসার হবেন। ধ্রুবের কথায় তাঁর ছেলেবেলায় পারিবারিক অবস্থা স্বচ্ছল ছিল না। তিনি আর্মি স্কুলে পড়াশুনা করতেন।

স্কুলের ছুটিতে আগ্রার একলব্য স্টেডিয়ামে সাঁতার শিখতে গিয়েছিলেন ধ্রুব। সেখানে অন্য বাচ্চারা ক্রিকেট খেলতে আসত। তা দেখে তিনিও লুকিয়ে ক্রিকেট খেলার ফর্ম পূরণ করেন। তাও বাবাকে লুকিয়ে। পরবর্তীতে তাঁর বাবা এই বিষয়ে জানতে পেরে তাঁকে বেশ বকাঝকা দেন। অবশ্য পরে তাঁকে ক্রিকেট খেলতে দেন। ধ্রুব জানান, তাঁর বাবা কারও কাছ থেকে ৮০০ টাকা ধার করে তাঁর জন্য ব্যাট কিনে দিয়েছিল। তার দু’সপ্তাহ পর একটি টুর্নামেন্ট ছিল বলে তিনি বাবাকে একটি ক্রিকেট কিট কিনে দিতে বলেন। তাঁর বাবা জিজ্ঞাসা করেন ক্রিকেট কিটের দাম কত। যখন ধ্রুব জানান, ছয়-সাত হাজার টাকা লাগবে একটি ক্রিকেট কিট কিনতে। তা শুনে অবাক হয়ে তাঁর বাবা তাঁকে ক্রিকেট খেলতে নিষেধ করে। এরপর ধ্রুব তাঁর মায়ের কাছে ক্রিকেট কিটের আবদার করেন। মা তাঁর সোনার চেন বিক্রি করে তাঁকে প্রথম ক্রিকেট কিট কিনে দেন।

ধ্রুব তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ারে যতটুকু সাফল্য পেয়েছেন, তাতে তাঁর মা-বাবার অবদানের কথা এবং আত্মত্যাগের কথা সব সময় উল্লেখ করেছেন। ধ্রুব জানান, তিনি অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬ দলে খেলেছেন। উত্তরপ্রদেশ বোর্ড তাঁকে যে সাহায্য করেছেন, সে কথাও স্বীকার করেছেন ধ্রুব।

বন্ধুদের মারফত ধ্রুব জানতে পারেন তিনি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ডাক পেয়েছেন। তিনি জানান, এই খবর পেয়ে খুব খুশি হয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘বন্ধুরা ফোন করে জানায় আমি ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে সুযোগ পেয়েছি। এই খবর পেয়ে ভালো লাগছে। আমি ইন্ডিয়া-এ এর হয়ে ভালো পারফর্ম করেছি। এ ছাড়া অনুশীলন ম্যাচেও ভালো পারফর্ম করেছি। উইকেটকিপিংও ভালো করছিলাম। নির্বাচন নিয়ে অবশ্য ভাবিনি। আমি শুধু পারফরম্যান্সে মনোযোগ দিয়েছি।’

ধ্রুবের বাবাও তাঁর জাতীয় দলে প্রথম বার ডাক পাওয়ার খবর পেয়ে খুশি। তিনি বলেন, ‘আমি বাবাকে যখন জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবর জানাই, তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কোন ভারতীয় দলে আমি সুযোগ পেয়েছি। আমি তাঁকে বলেছি, যেখানে রোহিত ভাই, বিরাট ভাই রয়েছে। আমার পুরো পরিবারের জন্য এই মুহূর্তটা খুব আবেগপ্রবণ।’

সিনিয়র টিমে সুযোগ পাওয়ার পর যেন একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছেন ধ্রুব। তাঁর কথায়, ‘আমি বুঝতে পারছি না কী বলব। আমি আমার হিরোদের সঙ্গে ড্রেসিংরুমে শেয়ার করব, যাঁদের আমি টেলিভিশনে দেখেছি। এটা একটা আলাদা অনুভূতি হতে চলেছে। আমি যতটা সম্ভব সকলের থেকে শেখার চেষ্টা করব।’