ভালসকিসের জোড়া গোল, রেড মাইনার্সের কাছে আটকে গেল মোহনতরী

চলতি আইএসএলে প্রথম হার এটিকে মোহনবাগানের। জোড়া গোল করে ম্যাচের সেরা ভালসকিস।

ভালসকিসের জোড়া গোল, রেড মাইনার্সের কাছে আটকে গেল মোহনতরী
এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় গোলের পর ভালসকিসের উচ্ছ্বাস। ছবি-আইএসএল।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 07, 2020 | 10:54 PM

গোয়াঃ তিলক ময়দানে ধাক্কা খেল পালতোলা নৌকা। ভালসকিসের জোড়া গোলে তছনছ হয়ে গেল হাবাসের স্বপ্নের দৌড়। সোমবার জামশেদপুর এফসির(jamshedpur fc) কাছে ১-২ গোলে হেরে আইএসএলে(ISL) প্রথম হারের মুখ দেখল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড(Atk Mohunbagan)। বাগানের হয় একমাত্র গোল সেই রয় কৃষ্ণার (Roy Krishna)।

কোন ছকে এদিনের দুই যুযুধান কোচের লড়াই

৩-৫-২ ছকে এদিনের ম্যাচে দল নামান এটিকে মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ। হাবাসের এটা সবচেয়ে পছন্দের ছক। সামনে রয় কৃষ্ণা-এডু গার্সিয়া।  আর বাগানের কৃষ্ণাকে আটকাতে জামশেদপুর এফসি কোচ আওয়েন কয়েলের স্ট্র্যাটেজি ছিল ৪-১-৪-১। সামনে দলের সেরা স্ট্রাইকার ভালসকিসকে রেখে আক্রমণ শানানো। আর ডিফেন্সিভ স্ক্রিন রেখে এটিকে মোহনবাগানের আক্রমনের ঢেউ মাঝমাঠ পেরোতেই আটকে দেওয়া। জোড়া ছকে এদিনের ম্যাচে বাজিমাত জামশেদপুর কোচের।

প্রথম গোল জামশেদপুর এফসির

গত তিনটি ম্যাচে মোহনবাগান শুরুতেই যে আক্রমণের পথ নিয়েছিল, আজ সেই মেজাজই খুঁজে পাওয়া গেল না হার্টলেদেের দুর্ভেদ্য ডিফেন্সে। সন্দেশ-প্রীতমদের অদম্য লড়াইয়ে বাগান বক্সে রেড মাইনার্সদের ঘনঘন আক্রমন  গোলের পথ খুঁজে পাচ্ছিল না। অবশেষে সেটপিস থেকেই এল জামশেদপুরের গোল। মনরয়ের কর্নার থেকে জোরালো হেড ভালসকিসের। এটিকে মোহনবাগান গোলরক্ষক অরিন্দমের ফিস্ট করার কোনও সুযোগই ছিলনা। ভালসকিসের করা গোলই প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় জামশেদপুর এফসি।

দ্বিতীয়ার্ধে দ্বিতীয় গোল

দ্বিতীয়ার্ধের ম্যাচ শুরুর পরেই  সমতায় ফেরার সুযোগ পায় এটিকে মোহনবাগান। বক্সের বাইরে থেকে গ্ল্যান্স মার্টিন্সের জোরালো শট দুরন্ত সেভ করে জামশেদপুর এফসিকে স্বস্তি দেন টিপি রেহনেশ। জামশেদপুরের রেহনেশ একসময় ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের গোলরক্ষক। তখন ভারতীয় ফুটবলের নবাগত নিজেকে তেমন মেলে ধরতে পারেননি লাল হলুদ জার্সিতে। তবে এদিন জামশেদপুর এফসির তিন কাঠির তলায় রেহনেশের পারফরম্যান্স দেখে অনেক প্রাক্তনই স্বীকার করছেন,  নিজেকে অনেকটাই পরিণত করে ফেলেছেন রেহনেশ।

স্বস্তি পেতেই ফের প্রথমার্ধের মেজাজে ফেরে জামশেদপুর এফসি। আবার কাউন্টার অ্যাটাক। আবার এটিকে মোহনবাগান ডিফেন্সে কাঁপুনি। ত্রাতা হয়ে উঠেছিলেন অভিজ্ঞ অরিন্দম ভট্টাচার্য। তবে ম্যাচের ৬৬ মিনিটে ফের গোল হজম হাবাসের দলের। সেই কর্নার থেকে। তবে এবার সবুজ-মেরুনের ডিফেন্সের চরম ভুলে। বক্সে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ভালসকিস ছিলেন একেবারে ‘আনমার্ক’। প্রীতম-সন্দেশদের মত অভিজ্ঞদের এই ভুল দেখে অবাক প্রাক্তনীরা। সেই মনরয়ের মাপা কর্নার। সেখান থেকে মাথা ছোঁয়ালেন মোবাশির। বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ বাগানের শুভাশিস বসু। সেখান থেকে জামশেদপুর এফসিকে গোল করে এগিয়ে দিতে ভুল করেননি ‘আনমার্ক’ ভালসকিস।

সেই কৃষ্ণা, ব্যবধান কমাল সবুজ-মেরুন

ম্যাচের বাকি তখন ১০ মিনিট। শুভাশিসের বাড়ানো বল থেকে হেড পরিবর্ত হিসেবে নামা মনবীর সিংয়ের। রয় কৃষ্ণা তখন বক্সে। অফসাইড ভেবে দাঁড়িয়ে গিয়েছে জামশেদপুর ডিফেন্স। সেখান থেকে আচমকা বল নিয়ে রেহনেশকে কাটিয়ে জামশেদপুর এফসির জালে বল জড়ান ফিজির স্ট্রাইকার। রেফারির কাছে হার্টলে-রা অফসাইডের আবেদন জানালেও, তা নাকচ করেন রেফারি। ব্যবধান কমায় এটিকে মোহনবাগান।

এরপর সবুজ-মেরুন ব্রিগেড ম্যাচে সমতায় ফেরার চেষ্টা করলেও হার্টলের নেতৃত্বাধীন জামশেদপুর ডিফেন্স আর ভাঙতে পারেনি হাবাসের দল।  আইএসএলে প্রথমবার হারের মুখ দেখল এটিকে মোহনবাগান।

 আরও পড়ুন: কোভিডের থাবায় মাঝপথেই স্থগিত ইংল্যান্ডের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর

টপ স্কোরার ভাল্সকিস, দুইয়েই রইল এটিকে 

এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে জোড়া  গোল করে এখন এফসি গোয়ার অ্যাঙ্গুলোর সঙ্গে যুগ্মভাবে টপস্কোরার ভালসকিস। আইএসএলে প্রথম ম্যাচ হারলেও দ্বিতীয় স্থানেই থাকল রয় কৃষ্ণার দল। জিতলে চলে যেত লিগ টেবিলের শীর্ষে। তবে হারের পর ৪ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট পেয়ে  দ্বিতীয় স্থানে প্রীতমরা। সমসংখ্যক পয়েন্ট পেয়ে গোলপার্থক্যে  ১ নম্বরে সেই মুম্বই সিটি এফসি।