মনোরঞ্জন, সুধীর কর্মকারদের ইস্টবেঙ্গলে এ কোন ডিফেন্স?
আইলিগজয়ী অধিনায়ক অনীত ঘোষের মন্তব্য, " এটা ডিফেন্স? ডিফেন্ডারদের যে প্রাথমিক পাঠ থাকা দরকার, সেটারই দেখা মেলেনি এদিন ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারদের মধ্যে।" বিরক্ত অনীতের দাবি, " এই ড্যানি ফক্স ৬০ মিনিটের ফুটবলার। ওঁকে কেন পুরো ম্যাচ খেলানো হল? রয় কৃষ্ণার গতির কাছে বারবারই পর্যুদস্ত হল ড্যানি। আর আইএসএলের মঞ্চে খেলছে ফুটবলাররা, তাঁদের কি ডিফেন্সের প্রাথমিক পাঠ শেখাতে হবে?সব কি আর কোচ বলে দেবে নাকি?"
রক্তিম ঘোষ
প্রতিবেদন শুরুর আগে একটা পরিসংখ্যান দেওয়াটা খুব জরুরি। ডার্বিতে এসসি ইস্টবেঙ্গলের (SC East Bengal) যে চারজন ডিফেন্ডার রয় কৃষ্ণাদের (Roy Krishna) সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা হলেন- ড্যানি ফক্স(Dany Fox), নারায়ণ দাস, সার্থক গলুই ও রাজু গায়কোয়াড়।
রাজু গায়কোয়াড়
জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ-২৭টি
নারায়ণ দাস
জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ-২৯টি
ড্যানি ফক্স
স্কটল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ-৪টি
স্বার্থক গলুই
জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ-৪টি
ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স যাঁরা আজ সামলেছিলেন তাঁদের সম্মিলিত জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ৬৪টি। আর এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে লাল হলুদের ডিফেন্স দেখে তো মনে হল, ৬৪ কেন, ৬টি ম্যাচও এই চারমূর্তি খেলেছেন কিনা সন্দেহ! প্রথম গোলের সময় রয় কৃষ্ণা যখন চিতাবাঘের মতো গতি বাড়াচ্ছেন, তখন তারকা ডিফেন্ডার ড্যানি ফক্স যেন দু পা’দৌড়েই ছেড়ে দিলেন হাল।
ডেভিড উইলিয়ামসের গোলের সময় ডিফেন্ডারদের দেখে মনে হল, বহুতলের বাসিন্দাদের মত অবস্থা। কেউই কাউকে তেমন চেনেন না।
আর জাভি-র গোলের সময় ডিফেন্সের কঙ্কালসার চেহারাটা যেন আরও স্পষ্ট হয়ে গেল!
এই লাল হলুদ জার্সি পড়ে একসময় মাঠ কাঁপাতেন সুধীর কর্মকার, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, তরুণ দে-র মত ডিফেন্ডাররা। পরবর্তীতে অনীত ঘোষ, দেবজিত ঘোষ, দীপক মন্ডলরা দাপিয়েছেন মাঠ। বিদেশি ডিফেন্ডারদের কথা ছেড়েই দিলাম। ডগলাস, ওপারারা একসময় হয়ে উঠেছিলেন বিপক্ষের স্ট্রাইকারদের কাছে ত্রাস। সেই ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্সের এই হাল! আঁতকে উঠছেন লাল হলুদ রক্ষণের প্রাক্তনীরা।
আই লিগ জয়ী অধিনায়ক অনীত ঘোষের মন্তব্য, “এটা ডিফেন্স? ডিফেন্ডারদের যে প্রাথমিক পাঠ থাকা দরকার, সেটারই দেখা মেলেনি এদিন ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারদের মধ্যে।” বিরক্ত অনীতের দাবি, “এই ড্যানি ফক্স ৬০ মিনিটের ফুটবলার। ওঁকে কেন পুরো ম্যাচ খেলানো হল? রয় কৃষ্ণার গতির কাছে বারবারই পর্যুদস্ত হল ড্যানি। আর আইএসএলের মঞ্চে খেলছে ফুটবলাররা, তাঁদের কি ডিফেন্সের প্রাথমিক পাঠ শেখাতে হবে? সব কি আর কোচ বলে দেবে নাকি?”
শুধুমাত্র ডিফেন্ডাররাই নন, দল সাজানো নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক। দারুন ফর্মে থাকা দেবজিৎ মজুমদারকে ( Debjit Majumder) বসিয়ে কেন খেলানো হবে সুব্রত পালকে? অনীতের দাবি, “আমি মিষ্টু (সুব্রত পাল)-কে খুব পছন্দ করি। কিন্তু যে দেবজিৎ দারুণ ফর্মে রয়েছেন, তাকে বসানোর কারণ কি? এতগুলো ম্যাচ খেলেছে দেবজিৎ। মিষ্টু হায়দরাবাদ এফসি থেকে এসে কটা ম্যাচ খেলেছেন? কোচের প্রথম একাদশ ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য!”
প্রশ্ন, প্রশ্ন শুধুই প্রশ্ন। আর উত্তরে শুধুই হতাশা। রবি ফাউলারের মত সুপারস্টার কোচ আসার পর লাল হালুদ সমর্থকদের মধ্যে তো কম উৎসাহ ছিল না? কিন্তু আইএসএল শেষে চক্ষুশূল হয়ে উঠেছেন তিনি। ভাগ্যিস করোনার জেরে টুর্নামেন্ট হচ্ছে গোয়াতে। কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ম্যাচ হলে, এই ফলের পর নিজের বাড়ি কি ফিরতে পারতেন ব্রিটিশ কোচ?