Lionel Messi : মেসি আসছেন তাই স্বপ্ন দেখা শুরু, বাস্কেট-বেসবলকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে এমএলএস
Lionel Messi in MLS : যা পেলে করেছিলেন, যা বেকহ্যাম করেছিলেন, তা-ই এ বার মেসিকে করতে হবে। হয়তো ভুল বলা হল, মেসিকে এগিয়ে যেতে হবে আরও কয়েক ধাপ। ২০২৬ সালে বিশ্বকাপের আয়োজক আমেরিকা। তার আগে মার্কিন মুলুকে ফুটবল আইকন হতে চলেছেন মেসি।
নিউ ইয়র্ক : এতদিন রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, ব্রাজিল ছিল তাঁর প্রতিপক্ষ। এ বার বাস্কেটবল, বেসবল, রাগবির মতো প্রবল জনপ্রিয় খেলাগুলোর বিরুদ্ধে খেলতে হবে। এতদিন ইউরোপের অত্যন্ত জনপ্রিয় ক্লাব ছিল তাঁর ঠিকানা। এ বার অচেনা লিগকে পরিচিত করে তোলার গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে। লিওনেল মেসি (Lionel Messi) মেজর লিগ সকারে (Major League Soccer) পা রাখলে রাতারাতি হয়তো বদলে যাবে না সবকিছু। কিন্তু তাঁর ছোঁয়ায় পৃথিবী পাল্টাতে শুরু করবে। গ্যালারি ভরে উঠবে, টেলিভিশন দর্শকের সংখ্যা বাড়বে। আর বাড়বে মার্কেট শেয়ার। ইন্টার মায়ামির হাত ধরে নিশ্চিতভাবে আমেরিকায় আর এক দফা ফুটবল বিপ্লব শুরু হতে চলেছে। ১৯৭৫ সালে পেলে যোগ দিয়েছিলেন নিউ ইয়র্ক কসমসে। ২০০৭ সালে ডেভিড বেকহ্যাম খেলতে এসেছিলেন এলএ গ্যালাক্সিতে। যে পাস বাড়িয়েছিলেন পেলে, উইং থেকে যে বল ক্রস তুলেছিলেন বেকহ্যাম, সেই বল ধরেই এ বার গোল করতে হবে মেসিকে। বিস্তারিত রইল TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
আমেরিকান সকাল ফাউন্ডেশনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সুনীল গুলাটি বলছেন, ‘এমএলএসে মেসির যোগ দেওয়া কোনও কিছুর সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। ও সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার। বিশ্বকাপ জিতে মেসি মেজর লিগ সকারে যোগ দেবে। আমেরিকান ফুটবলের প্রসারের জন্য এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কিছু হতে পারে না। বিরাট, বিরাট প্রাপ্তি।’
৩৪ বছর বয়সে পেলে কসমসে খেলতে এসেছিলেন। বেকহ্যাম এসেছিলেন ৩২ বছর বয়সে। আর মেসি, ৩৬এ পা দিতে চলেছেন মায়ামিতে। পেলে যখন কসমসে এসেছিলেন, তখন মাত্র সাড়ে ৩ হাজার সমর্থক ছিল নর্থ আমেরিকার ওই সকার লিগের। পেলে আসার পর ৩৪ হাজার সমর্থক নিয়মিত নিউ জার্সির ইস্ট রাদারফোর্ড স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসতেন। পেলেকে সই করানো কসমসের ম্যানেজার ক্লাইভ টয় বলছেন, ‘পেলের আগে আমেরিকায় ফুটবলের অস্তিত্ব সেই অর্থে ছিল না। লোকে গুরুত্বই দিত না। পেলে সেটাই পাল্টে দিয়েছিলেন। মেসি এমন এক সময় আমেরিকায় খেলতে আসছে, যে সময় এ দেশে ফুটবল নামে একটা খেলা বেশ জনপ্রিয়। মেসি এই জনপ্রিয়তাকে যে আরও বেশ খানিকটা এগিয়ে নিয়ে যাবে তাতে সন্দেহ নেই।’
১৯৯৬ সালে মেজর লিগ সকারের জন্ম। ততদিনে বিশ্বকাপ আয়োজন করার অভিজ্ঞতা হয়ে গিয়েছে আমেরিকার। শুরুতে ১০টা টিম নিয়ে খেলা হত। এখন ২৯টা টিমের লিগ। ২৭ বছরে পা রাখতে চলা এই এমএলএসের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হতে চলেছেন মেসি নিজেই। আমেরিকায় ৩টে সবচেয়ে বড় খেলা বাস্কেটবল, রাগবি, বেসবলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে মেসিকে। আধুনিক প্রজন্মে মেসির নাম জানেন না এমন কোনও মানুষ নেই। ফলে, আমেরিকার আনাচে কানাচে ফুটবল ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ মেসি খুব সহজে করতে পারবেন। এমন বিশ্বাস করছেন আমেরিকার প্রাক্তন জাতীয় কোচ গ্রেগ বারহল্টার। ইন্টার মায়ামিতে পা দিচ্ছেন মেসি, এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই বেকহ্যামের ক্লাবের ইন্সটা ফলোয়ার্স এক ধাক্কায় দ্বিগুণ হয়ে পড়েছে। ১৮ হাজার দর্শক সম্বলিত স্টেডিয়ামের সংস্কারের কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে। নতুন স্টেডিয়ামে ৬৫ হাজার দর্শক বসতে পারবেন। টিকিট থেকে ক্লাবের আয় যে বহুগুণ বাড়বে এ নিয়ে দ্বিধা নেই। এমএলএসের শীর্ষকর্তা ডন গার্বার বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে মেজর লিগ সকার সম্পর্কে জানে না এমন লোক নেই। ২০০৭ সালে ডেভিড বেকহ্যাম যখন এলএ গ্যালাক্সিতে যোগ দিয়েছিল তখনকার পরিস্থিতি এক রকম ছিল। গ্যালাক্সির পুরো ছবিটা পাল্টে দেওয়ার ক্ষেত্রে বেকহ্যাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।’
যা পেলে করেছিলেন, যা বেকহ্যাম করেছিলেন, তা-ই এ বার মেসিকে করতে হবে। হয়তো ভুল বলা হল, মেসিকে এগিয়ে যেতে হবে আরও কয়েক ধাপ। ২০২৬ সালে বিশ্বকাপের আয়োজক আমেরিকা। তার আগে মার্কিন মুলুকে ফুটবল আইকন হতে চলেছেন মেসি।