FIFA World Cup 2022: হারের দুঃখে ঘরে ফেরার বাস প্রায় মিস করেছিলেন রিচার্লিসন!
তিনি বলেছেন, "এটা লেখা আমার কাছে জীবনের সবচেয়ে বেশি কঠিন একটা কাজ। কোয়ার্টার ফাইনালে হার এখনও আমি মেনে নিতে পারিনি। ঘুম পর্যন্ত আসছে না। যা হয়েছে তাতে আমি এখনও দুঃখিত।"
দোহা: শুক্রবার এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে ঘটে গেল দুর্ঘটনা। গোটা ৯০ মিনিটে একটিও গোল করতে পারেনি দুই দল। সেমিফাইনালে স্থান পাকা করার লড়াইতে প্রথম গোল উপহার দেন নেইমার(Neymar)। ১০৬ মিনিটের মাথায় ব্রাজিল(Brazil) এগিয়ে যাওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন, কাতার বিশ্বকাপের(FIFA World Cup 2022) সেমিফাইনালে যাওয়ার রাস্তাটা পাকা করে ফেলেছে তিতের টিম। তবে এক গোলে এগিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হয়নি। সুযোগের সন্ধানে ছিল লুকা মদ্রিচের টিম। ১১৭ মিনিটের মাথায় ব্রুনো পেতকোভিচের গোলে সমতা ফেরে। খেলা গড়ায় এক্সট্রা টাইম, পেনাল্টি শুট আউটের দিকে।
স্পট কিক অনুশীলন করেই মাঠে নেমেছিল ক্রোয়েশিয়া। রাশিয়া বিশ্বকাপের মতোই খেলাকে নির্ধারিত সময়ের ওপারে নিয়ে যাওয়াটা এ বারেরও লক্ষ্য দালিচের টিমের। পেনাল্টি শুরু হওয়ার পরেই দেখা যায় তার ফলাফল। একে একে ব্রাজিলের জালে বল জড়াতে থাকে ভ্লাসিচ, মাজের, মদ্রিচ ও অর্সিচরা। তবে কাসেমিরো ও মার্কুইনহোস ছাড়া ক্রোয়েশিয়ার কিপার ডমিনিক লিভাকোভিচকে পরাস্ত করতে পারেনি আর কেউই। রড্রিগোর প্রথম শট মিস হয়তো মানোসিক চাপ বাড়িয়ে দিয়েছিল অনেকটা। শেষমেশ ৪-২ গোলে ক্রোয়েশিয়ার কাছে পেনাল্টিতে হেরে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যায় ব্রাজিল। কাতারের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলতে নামার আগেই নেইমার ঘোষণা করেছিলেন, কাতারেই হতে পারে তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। বলেছিলেন, আর বিশ্বকাপ খেলতে চাইছেন না তিনি। রেফারির শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে গোটা ব্রাজিল শিবির। সমর্থকদের অনবদ্য খেলা উপহার দিয়েও রক্ষা করতে পারেননি বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন।
রিচার্লিসন বলেছিলেন, তিনি জাতীয় দলে তাঁর জায়গা ছেড়ে দেবেন। অনবদ্য অ্যাক্রোব্যাটিক শটে সার্বিয়ার গোলে বল জড়ানো এখনও ভোলেনি ফুটবল বিশ্ব। তবে সেমিফাইনালের দোরগোড়ায় ব্রাজিলের ছিটকে যাওয়ার প্রভাব হয়তো সবচেয়ে বেশি পড়েছে রিচার্লিসনের উপর। দল বেশি সময় নষ্ট করেনি ঘরে ফিরতে। তবে এয়ারপোর্টগামী বাস প্রায় মিস করে ফেলেছিলেন তিনি। গোটা দল তখন বাসে উঠে গিয়েছে। তখন হোটেলের ঘরে বসে কাঁদছিলেন রিচার্লিসন। তিনি তামাম ব্রাজিল সমর্থকদের মতোই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। ক্ষমা চেয়ে নেন তাঁদের পরাজয়ের জন্য। ফলে হোটেল থেকে যে বাস ব্রাজিল টিমকে বিমানবন্দরে নিয়ে যাচ্ছিল, তা ধরতে অনেকখানি সময় লেগে যায়।
পরে সোশাল মিডিয়াতে ব্রাজিলিয়ানদের কাছে ক্ষমা চান রিচার্লিসন। তিনি বলেছেন, “এটা লেখা আমার কাছে জীবনের সবচেয়ে বেশি কঠিন একটা কাজ। কোয়ার্টার ফাইনালে হার এখনও আমি মেনে নিতে পারিনি। ঘুম পর্যন্ত আসছে না। যা হয়েছে তাতে আমি এখনও দুঃখিত।”
বিশ্বকাপের প্রথম থেকেই ব্রাজিল ছিল একাধিক ফুটবলপ্রেমীর প্রিয় দল। এ বারের দলটিতে ভারসাম্য ছিল অনেক বেশি। নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের গতি এবং বেশ কিছু সিনিয়রের অভিজ্ঞতা দিয়ে টিম তৈরী করেছিলেন তিতে। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। টটেনহ্যাম ফরোয়ার্ড রিচার্লিসন সোশাল মিডিয়ায় আরও বলেন, “এই ক্ষত চিরকাল দগদগে থাকবে। কারণ, আমরা সবাই জানি এ বার বিশ্বকাপ জেতার দারুণ সুযোগ ছিল আমাদের সামনে। সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারিনি।” বাসে ওঠার আগে রিচার্লিসন মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন।