পাবজি ফিরছে! কী ভাবছেন ‘গেমার’ বং গাই এবং ‘নন গেমার’ আরজে সোমক

ধুলোবালি খাওয়া নেই। আর আউট হলে ‘এল বি ডাবলু’র দোকান বন্ধ বলাটাও নেই। রোদে খেলে শরীরের রং কালো (যাকে এখন বলে ট্যান) তা হওয়া নেই।

পাবজি ফিরছে! কী ভাবছেন ‘গেমার’ বং গাই এবং ‘নন গেমার’ আরজে সোমক
আর জে সোমক ও বং গাই
Follow Us:
| Updated on: Dec 11, 2020 | 4:23 PM

খেলা হবে!

Bong Guy

বং গাই

‘বং গাই’  কিরণ দত্ত

দেশের বাইরে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির সিনারিও একেবারে আলাদা। গেমিং, কিন্তু হলিউড ইন্ডাস্ট্রির মতো বড়। তারা কোটি কোটি টাকা যেমন লগ্নি করে, তাদের লাভের পরিমাণও ঢের-ঢের গুণ বেশি। ভারতে দু-তিনবছর আগেও পিসি (পার্সোনাল কম্পিউটার) গেমিংয়ের কোনও কালচার ছিল না। তাই পাবজি মোবাইল গেম- নিখরচায় খেলত মানুষ। পাবজি মোবাইলের রমরমা কিন্তু এই কারণে। অনেককে বলতে শুনেছি ‘মোবাইল গেম খেলে, কেন নিজেদের গেমার্স বলেন?’— এ প্রশ্নের উত্তর আগেই দিলাম, কারণ আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন নয় যে সবাই পি.সি. অ্যাফোর্ড করতে পারে। তবে, পাবজি পি.সি গেম। কিন্তু ভারতে মোবাইল গেমিংয়েই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পাবজি ব্যান হওয়ার পরে সব থেকে সমস্যায় পড়লেন যাঁরা গেম খেলেই অর্থ উপার্জন করতেন। আমিও দু-তিনটে ভিডিও স্ট্রিম করে রোজগার করেছি। কিন্তু আমার পরিচিত অনেকে এমনও আছে যাঁরা অনলাইন স্ট্রিমিং অথবা টুর্নামেন্ট খেলে রোজগার করতেন। সেটাই তাঁদের পেশা ছিল। পাবজি বন্ধ হয়ে যাওয়া তাঁদের জীবনে এক বড় ধাক্কা এসেছে। একটা মানুষের যদি রোজগারের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে কী অবস্থা হতে পারে, ভাবতে পারছেন? আমার মনে হয় ‘ব্যান’ করে দেওয়াটা উচিৎ হয়নি। কথাবার্তা চালিয়ে যদি মিটিয়ে নেওয়া যেত সবকিছু ভাল হত। কিন্তু আজ এটা ভেবে সত্যিই ভাল লাগছে যে ভারতে আবার ফিরছে পাবজি। এটাও ঠিক পাবজি ব্যান হওয়ার পর গেমারদের যা ওয়াচিং লিস্ট ছিল তা প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। গেমারদের এখন অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। একদিকে এটাও ভাল যে গেমার্স পাবজি ব্যানের পর অন্য গেমও খেলতে শুরু করেছিল। তাই কম পরিমাণ হলেও টাকা রোজগার করতে পেরেছে।

আরেক নতুন গেমের নামও শুনছি যা একেবারে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ গেম। ‘ফৌজি’। আমার মনে হয় ‘ফৌজি’ যদি সত্যি পাবজির মতোই ভাল হয়, তাহলে আমরা তো সেটাও খেলতে পারি। কারণ ফৌজি সম্পূর্ণভাবে এ দেশের গেম। এবং ঘরের টাকা ঘরেই থাকার মতো ব্যাপার হবে। পাবজি ফিরছে বলে ‘ফৌজি’কে দূরে সরিয়ে রাখাটা অনুচিত হবে। যা-ই হোক যা বুঝছি খেলা হবে!

পাবজি ফিরুক, সঙ্গে ৫০ গ্রামের প্লাস্টিকের ক্রিকেট বলও

somak

আর জে সোমক

আর জে সোমক      

আমি একদম গেমটেম খেলি না। ইন ফ্যাক্ট আমি শেষ গেম যা খেলেছি তার নাম ছিল ‘ম্যাক্স পেন’। তার মানে বুঝতেই পারছেন গেমিংয়ে আমি কতটা আউটডেটেড। আমাদের ছোটবেলার সময় থেকে গেমিং নিয়ে আগাগোড়া এক উন্মাদনা ছিল। মনে আছে ‘রোড র‍্যাশ’ খেলতাম। সে এক বিশাল ব্যাপার। রেসিং ট্র্যাকে, এক কিকে পাশের বাইকওয়ালাকে ঠেলে ফেলে দিতাম। তারপর ‘প্রিন্স অফ পার্শিয়া’। কিংবা ‘ম্যাক্স পেন’-এ সে কী সব মারত্মক স্ট্র্যাটেজি ছিল। কিন্তু তখন বিকেলবেলায় ধুলোবালি মেখে মাঠে ক্রিকেট-ফুটবলও ছিল। নোংরা ড্রেন থেকে বল তোলা ছিল। এখন সেসব দেখতে পাই না। একটা ব্যালেন্স কোথাও হারিয়ে গিয়েছে। ‘পাবজি’ ব্যান হয়েছিল, ‘ক্যান্ডি ক্রাশ’ ছিল, মানুষ চুটিয়ে খেলেছে। তারপর এখন তো দেখি পরকীয়া নিয়ে অ্যাডাল্ট গেমও বাজারে এসেছে। আমার কিন্তু এ সব গেম নিয়ে কোনও ভুরু কোঁচকানো নেই।  কিন্তু ওই যে বল পিটিয়ে বাড়িতে দেরি করে ফেরা কিংবা ক্রিকেট-ফুটবলে যে শরীরচর্চা ছিল তা এই মোবাইল গেমিংয়ে কিস্যু নেই। ধুলোবালি খাওয়া নেই। আর আউট হলে ‘এল বি ডাবলু’র দোকান বন্ধ বলাটাও নেই। রোদে খেলে শরীরের রং কালো (যাকে এখন বলে ট্যান) তা হওয়া নেই।

পাবজি ফিরুক ক্ষতি নেই। সঙ্গে ৫০ গ্রামের প্লাস্টিকের ক্রিকেট বলও ফিরুক। আর সে বল সপাটে পায়ে লাগাার পর লাল চাকা দাগটাও ফিরুক।