মঙ্গলগ্রহে রয়েছে জলের অস্তিত্ব, যতটা ভাবা হয়েছে তার থেকে বেশি পরিমাণেই, জানাল চিনের Zhurong Rover

Zhurong Rover: গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের মে মাসে মঙ্গলের মাটি ছুঁয়েছে চিনের Rover Zhurong। আর তারপর থেকেই লালগ্রহের বিস্তৃত অংশ Utopia Planitia-তে পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে এই Robotic Rover।

মঙ্গলগ্রহে রয়েছে জলের অস্তিত্ব, যতটা ভাবা হয়েছে তার থেকে বেশি পরিমাণেই, জানাল চিনের Zhurong Rover
মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 16, 2022 | 9:31 PM

মঙ্গলগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা, সেই পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। সেই তালিকায় রয়েছে চিন। তাদের Rover মঙ্গলের বুকে জলের সন্ধান পেয়েছে। চিনের Robotic Rover লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশে Hydrated Minerals-এর হদিশ পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলগ্রহের মধ্যে একটি বিস্তৃত Basin বা অববাহিকা অংশে এই Hydrated Minerals বা জলযুক্ত খনিজ নমুনার সন্ধান পেয়েছে চিনের ওই Robotic Rover। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলগ্রহের এই Basin এলাকা অতীতের একটি সমুদ্রের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই অববাহিকা অংশে খুঁজে পাওয়া Hydrated Minerals-এর মাধ্যমে অনুমান করা হচ্ছে মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশের জলের অস্তিত্ব ছিল। আগেও এমন অনুমান করা হয়েছিল। তবে সেই সময় মঙ্গলগ্রহে যতটা পরিমাণ জল ছিল বলে মনে করা হয়েছিল, বর্তমানে চিনের বিজ্ঞানীরা মনে করছেন যে তার থেকে বেশি পরিমাণ জল ছিল লালগ্রহের বুকে।

মঙ্গলগ্রহে Rover Zhurong পাঠিয়েছিল চিন। সেই Rover-এর পাঠানো ডেটা পর্যবেক্ষণ করেই বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে মঙ্গলগ্রহের কিছু খনিজের নমুনায় জলের চিহ্ন রয়েছে। এই সমস্য খনিজের নমুনা প্রায় ৭০০ মিলিয়ন বছরের পুরনো। Science Advances নামের একটি জার্নালে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন মঙ্গলগ্রহ ৩ বিলিয়ন বছর আগেও আর্দ্র ছিল। এই সময় মঙ্গলগ্রহের দ্বিতীয় Geological Age সদ্য শেষ হয়েছে। মঙ্গলগ্রহের এই দ্বিতীয় Geological Age-কে বলা হয় Hesperian Epoch। এখন লালগ্রহে চলছে Amazonian পর্যায়। এই সময়ে মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশে কোনও জলের হদিশ পাওয়া যায়নি। জানা গিয়েছে, মঙ্গলগ্রহে চিনের পাঠানো Rover Zhurong যে নমুনা পর্যবেক্ষণ করেছে সেটি আসলে একটি মাটির ডেলা, যেখানে যুক্ত রয়েছে অনেক খনিজ পদার্থ। যে শক্ত নমুনাটি চিনের Rover Zhurong পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে অনুমান সেটি তৈরি হয়েছে ক্রমবর্ধমান ভূগর্ভস্থ জল (এক্ষেত্রে পড়ুন মঙ্গলগ্রহের অভ্যন্তর থেকে উঠে আসা জল) কিংবা গলে যাওয়া বরফে দ্বারা। এখনও বাষ্পীভূত হচ্ছে এই নমুনা। Science Advances জার্নালে এমনটাই লিখেছেন বিজ্ঞানীরা।

গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের মে মাসে মঙ্গলের মাটি ছুঁয়েছে চিনের Rover Zhurong। আর তারপর থেকেই লালগ্রহের বিস্তৃত অংশ Utopia Planitia-তে পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে এই Robotic Rover। জানা গিয়েছে, মঙ্গলগ্রহের বুকে Rover Zhurong যেখানে ল্যান্ড করেছিল তার থেকে আরও ২ কিলোমিটার এগিয়ে গিয়েছে এই Rover। মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশে এই পথ অতিক্রম করেই সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে Rover Zhurong। মঙ্গলগ্রহে অতীতে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা, কিংবা ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহ মনুষ্য বসবাসযোগ্য হতে পারে কিনা— এইসব জানতেই লালগ্রহের একের পর এক অভিযান চালাচ্ছে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী মহল। এই দলেই রয়েছে চিনও। মূলত পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনও গ্রহে প্রাণের সন্ধান করতে গেলে জলের নমুনার সন্ধান করেন বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলগ্রহের ক্ষেত্রেও তাই-ই করা হচ্ছে।