AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Microbes Feast on Ancient Carbon: আন্টার্কটিকার বরফের তলায় শত শত দিঘি, সেখানেই ‘মহাভোজ’, মেনুতে কী কী?

Ancient Carbon: প্রায় ৬০০০ বছরের পুরনো C-14 রয়েছে হিমবাহের তলায় থাকা এই দিঘিতে, জলের নমুনা পরীক্ষা করে গবেষকরা জানতে পারেন এমনটাই। বাতাসে তৈরি হওয়া কার্বনকে জলে পৌঁছতে গেলে যে যে পরিস্থিতি প্রয়োজন, তা বিচার করে বিজ্ঞানীরা জানান, ৬০০০ বছর আগে আন্টার্কটিকার অধিকাংশ হিমবাহ অন্তঃস্থিত হ্রদই ছিল উন্মুক্ত।

Microbes Feast on Ancient Carbon: আন্টার্কটিকার বরফের তলায় শত শত দিঘি, সেখানেই 'মহাভোজ', মেনুতে কী কী?
| Updated on: May 20, 2023 | 4:00 PM
Share

এককোষীয় প্রাণী হোক বা জীবাণু, আন্টার্কটিকার মহাপুরু বরফের চাদরের তলায় তারা বেঁচে থাকে শতকের পর শতক! কিন্তু কীভাবে? দশকের পর দশক এই উত্তর খুঁজে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও অবশেষে যে উত্তরের কিছুটা কাছাকাছি পৌঁছনো সম্ভব হয়েছে, তার কারণ সাম্প্রতিক আবিষ্কার! আন্টার্কটিকার পশ্চিম হ্রদে জল প্রায় নেই বললেই চলে, গোটাটাই জমাট বরফ। এমন ভয়াবহ আবহাওয়ায় যেখানে যে কোনও পার্থিব প্রাণীর পক্ষেই বাঁচা দুষ্কর, সেখানে ব্যাকটেরিয়ারা বেঁচে থাকে অনায়াসে। যদিও তাদের খাদ্যের উৎস নিয়ে রয়েছে বিস্তর ধোঁয়াশা। এমতাবস্থায় আন্তর্জাতিক জার্নাল AGU Advances-এর এপ্রিল সংখ্যায় প্রকাশিত রিপোর্ট নতুন করে উস্কে দিয়েছে আলোচনা।

‘হাজার হাজার বছর আগে মহাসাগরের জল যে কার্বন রেখে গেছে, তাই ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে চলছে জীবাণুদের সংসার’, এমনটাই জানাচ্ছে রিপোর্ট। ভূতাত্বিকদের মতে, আজ থেকে ৬,০০০ বছর আগে কিছুটা হলেও গেলে যায় আন্টার্কটিকার বরফস্তর, আর তখনই মহাদেশের পশ্চিমাংশের হ্রদে সাগরের জল প্রবেশ করে, সঙ্গে ভেসে আসে জীবাণুদের আহার্য পুষ্টি!

পশ্চিম আন্টার্কটিকায় হ্রদের অন্দরে পৌঁছতে গরম জলের ড্রিল!

পশ্চিম আন্টার্কটিকায় হ্রদের অন্দরে পৌঁছতে গরম জলের ড্রিল!

ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত বার্কলের জিওক্রোনোলজি কেন্দ্রের ভূ-রসায়নবিদ গ্রেগ ব্যালকোর মতে, “বর্তমান পরিস্থিতিতে যেভাবে বরফ গলছে তাতে আন্টার্কটিকার ভবিষ্যৎ অন্ধকারে, তবে এটা স্পষ্ট যে আগেও বরফ গলছে এই মহাদেশে। সেইসময় কীভাবে লড়েছিল আন্টার্কটিকার প্রকৃতি, সেটা খতিয়ে দেখাই গবেষণার মূল লক্ষ্য।” আন্টার্কটিকার পুরু বরফের আস্তরণের নীচে রয়েছে ৬৭৫টি হ্রদ-দিঘি, এইসব অন্ধকারাচ্ছন্ন জলাশয়ে তাপমাত্রা ০ ডিগ্রির আশেপাশে, জানাচ্ছেন ভূতাত্বিকরা।

কলোরাডো স্কুল অফ মাইন্স ইন গোল্ডেনের হিমবাহ বিশেষজ্ঞ রায়ান ভেনটিউরেলির মতে, “আমি মাইক্রোব হলে এমন প্রতিকূল অন্ধকার স্থানে কখনই থাকতাম না। ওইসব অঞ্চলে আলো পৌঁছয় না, যে পরিমাণ কার্বন ওখানে আছে তা প্রাচীন এবং আমি জীবাণু হলে উপরে উঠে আসার চেষ্টা করতাম। যদিও ওখানকার জীবাণুরা হাজার হাজার বছর নিচে থাকতে থাকতে ওখানকার মতোই হয়ে গেছে, বরং উপরে এলে তাদের প্রাণ সংশয় হতে পারে!” সূত্রের খবর, ২০১৮ সালে প্রায় ৩০ জন বিজ্ঞানীর একটি দল পাড়ি দেয় আন্টার্কটিকায়। সাগর থেকে প্রায় ১৫০ কিমি দূরে অবস্থিত লেক মার্সারে খননকাজ চালান বিজ্ঞানীরা। রায়ানের নেতৃত্বাধীন সেই দল বেশ কিছু জীবাণুর নমুনা সংগ্ৰহ করেছিল বলে খবর জার্নাল সূত্রে।

মাটির উপর ঘুরে বেড়ায় এহেন নানা জীবাণু

মাটির উপর ঘুরে বেড়ায় এহেন নানা জীবাণু

সাম্প্রতিক আন্টার্কটিকা অভিযানে বিজ্ঞানীরা টানা ২৪ ঘণ্টা হট-ওয়াটার ড্রিল ব্যবহার করে খননকার্য চালান। ২০১৮ সালের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে রায়ান জানান, হিমবাহের অন্তঃস্থিত হ্রদ হিসাবে লেক মার্সারই দ্বিতীয় যেখানে বিজ্ঞানীরা সফলভাবে পৌঁছতে পেরেছেন! প্রায় ৬০০০ বছরের পুরনো C-14 রয়েছে হিমবাহের তলায় থাকা এই দিঘিতে, জলের নমুনা পরীক্ষা করে গবেষকরা জানতে পারেন এমনটাই। বাতাসে তৈরি হওয়া কার্বনকে জলে পৌঁছতে গেলে যে যে পরিস্থিতি প্রয়োজন, তা বিচার করে বিজ্ঞানীরা জানান যে, ৬০০০ বছর আগে আন্টার্কটিকার অধিকাংশ হিমবাহ অন্তঃস্থিত হ্রদই ছিল উন্মুক্ত।

প্রায় ৬০০০ বছর প্রাচীন জীবাণুরা জমে থাকা কার্বন শেষ করলেও তা আবার সৃষ্টি করছে নিজেদের নিয়মেই, এমনটাই মত বিজ্ঞানীদের। ফলত বহির্বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ না ঘটলেও এই সকল হিমবাহ অন্তঃস্থিত হ্রদের জলে কার্বনের ঘাটতি হবে না কখনই, ফলে বহাল তবিয়তে বেঁচে থাকতে পারবে কীটাণুরা। যদিও বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে যেভাবে ঘামছে আন্টার্কটিকা, তাতে তার প্রকৃতি যে কতদূর বদলে যেতে পারে, তার আন্দাজ নেই অধিকাংশ গবেষকেরই!