Plastic Pollution: বমির মধ্যেও ছড়িয়ে প্লাস্টিকের টুকরো, দ্রুত বিলুপ্তির পথে সামুদ্রিক পরিযায়ী পাখির দল
Plastic Pollution Effects: কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি দল দেখেছে, প্লাস্টিক দূষণ সামুদ্রিক পরিযায়ী পাখিদের স্বাস্থ্যের অবনতির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ কারণে তারা পরিবেশে টিকে থাকতে পারছে না।
Pollution Effects On Marine Migratory Birds: জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে যতই একের পর এক ভীতিকর ঘটনা সামনে আসুক না কেন, মানুষ সচেতন হওয়ার নয়। বিজ্ঞানীরা তাদের বিভিন্ন গবেষণায় প্রায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ‘প্রাণহানির আশঙ্কা’-র কথা তুলে ধরেন। বিজ্ঞানীদের মতে, ক্রমাগত বেড়ে চলা তাপমাত্রা সমগ্র বিশ্বে ইতিমধ্যেই বিরাট বিপদ ডেকে এনেছে। এখন যে প্রভাব বিভিন্ন প্রাণীদের মধ্যে পড়ছে, তা আর এখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। মানুষও তার কবলে পড়বে খুব শীঘ্রই। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছেন প্লাস্টিক দূষণেও এক নতুন বিপজ্জনক প্রভাব দেখা দিয়েছে। পেট্রেল নামের সামুদ্রিক পরিযায়ী পাখির দল এই প্লাস্টিক দূষণের কবলে পড়েছে। শুধুই এই প্রজাতি নয়, রয়েছে আরও অনেক প্রজাতি। যেমন- নর্দার্ন ফলমার, ইউরোপিয়ান স্টর্ম-পেট্রেল। বিজ্ঞানীদের মতে, এই প্রজাতির সামুদ্রিক পরিযায়ী পাখিরা মহাসাগরের খাদ্য তরঙ্গ (food web of the oceans) বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু এখন তাদের ওপরও প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব দেখা দিচ্ছে।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি দল গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছেন, প্লাস্টিক দূষণ পেট্রেল প্রজাতির পাখিদের স্বাস্থ্যের উপর বিরাট বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ কারণে তারা পরিবেশে টিকে থাকতে পারছে না। গবেষকরা 7,137টি পাখির কার্যকলাপ পরীক্ষা করেছেন। তাদের অবস্থান, খাদ্য তালিকা, সব কিছুতেই তারা প্লাস্টিক দূষণের সম্মুখীন হচ্ছে।
আগে একের পর এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সমুদ্রে প্লাস্টিকের পরিমাণ যে হারে বাড়ছে, তাতে গভীর সমুদ্রে থাকা প্রাণীরা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এবার সামুদ্রিক পরিযায়ী পাখিরাও তা থেকে রেহাই পেল না। বিজ্ঞানীদের মতে, এই বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকের বেশিরভাগটাই আসে জাহাজ থেকে। তারপর তালিকায় রয়েছে বড় বড় শিল্পাঞ্চল থেকে নির্গত বর্জ্য পদার্থ।
কীভাবে তাদের উপর এই বিরাট প্রভাব পড়ছে?
সামুদ্রিক প্রাণীরা প্রায়শই প্লাস্টিকের ছোট ছোট টুকরোকে খাবার হিসেবে খেয়ে ফেলে। এর ফলে তাদের মধ্যে বিষের বিস্তার হয়। শুধু তাই নয় সামুদ্রিক প্রাণীরা প্লাস্টিকের জালে জড়িয়ে যায়। প্রজনন সময়কালে তারা এভাবে প্লাস্টিক খেয়ে ফেলে। ফলে তাদের ঠিকভাবে প্রজনন হয় না। এমনকি ছোট সামুদ্রিক প্রাণীরাও তা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। তাদের শরীরে এমন ধরনের বিষক্রিয়া দেখা দিচ্ছে যে, তাদের দেহ থেকে বমির আকারে প্লাস্টিকের টুকরো বেরিয়ে আসছে।
এত গেল সমুদ্রের গভীরে থাকা সামুদ্রিক প্রাণীদের কথা। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, প্লাস্টিক দূষণের কারণে অনেক প্রজাতির সামুদ্রিক পাখি ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যে অনেকগুলিই বিপন্ন। ভূমধ্যসাগরের বারলারিক শিয়ারওয়াটার ইতিমধ্যেই বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে। যেমন নিউয়েল শিয়ারওয়াটার এবং হাওয়াইতে পাওয়া পেট্রেল। একইভাবে, ভূমধ্যসাগরের ইয়েলোকন শিয়ারওয়াটার, নিউজিল্যান্ডের কুকের পেট্রেল এবং স্পেকট্যাক্লড পেট্রেলও তালিকায় রয়েছে। সামগ্রিকভাবে, প্লাস্টিক দূষণ সামুদ্রিক পাখিদের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠছে। তারা যখনই জলে শিকার করতে যাচ্ছে, তখনই তারা বিষাক্ত জলের সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে তাদের খাদ্য তালিকায় বিরাট পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এভাবে চলতে থাকলে, এই সামুদ্রিক পরিযায়ী পাখিগুলির হারিয়ে যেতে আর বেশিদিন সময় লাগবে না।