ইয়ে করার জায়গা, বেসিন, বাথটব— সোনায় মোড়া সবকিছু! তদন্তে নেমে চোখ কপালে অফিসারদের!
বাথটব, বেসিন, কোমোড, আয়না সবকিছু ছিল খাঁটি সোনায় মোড়া! রূপকথার রাজপ্রাসাদে যেমনটি হয়, ঠিক তেমনটি! মোটকথা মানুষের লোভ ও বিলাসব্যসনের চূড়ান্ত উদাহরণ ছিল বাড়িটি। কিন্তু কে এই বাড়ির স্বত্বাধিকারী?
সম্প্রতি ইন্টারনেটে এক অদ্ভূত ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন পুলিশ অফিসার তদন্তে নেমেছেন। তাঁরা যেখানে তদন্ত করছেন সেটি একটি প্রাসাদোপম বাড়ি। প্রাসাদে মজুত রয়েছে আমোদপ্রমোদের সকল উপকরণ। প্রাসাদের প্রতিটি কোণা থেকে ঠিকরে বেরচ্ছে জৌলুস। প্রাসাদের প্রথম তল থেকে দ্বিতীয় তলে ওঠার সিঁড়ির গ্রিল পর্যন্ত বাঁধানো রয়েছে সোনায়। এমনকী ঘরের দেওয়াল পর্যন্ত ঢাকা ছিল সোনার জরির কাজ করা ওয়ালপেপারে!
জানালা, পর্দা, মার্বেল পাথরে তৈরি ঘরের মেঝে ও সিলিং থেকে ঝুলে থাকা ঝাড়বাতিতে আঁকা সূক্ষ্ম নকশায় ছিল বৈভব ও নিলর্জ্জ ঔদ্ধত্যের ছাপ! তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছিল ওই প্রাসাদের মতো বাড়িটির টয়লেট! সেখানে ঢোকার পর আক্ষরিক অর্থেই চোখ ধাঁধিয়ে যায় তদন্তকারী অফিসারদের! কী দেখেছিলেন তাঁরা? বাথটব, বেসিন, কোমোড, আয়না সবকিছু ছিল খাঁটি সোনায় মোড়া! রূপকথার রাজপ্রাসাদে যেমনটি হয়, ঠিক তেমনটি! মোটকথা মানুষের লোভ ও বিলাসব্যসনের চূড়ান্ত উদাহরণ ছিল বাড়িটি। কিন্তু কে এই বাড়ির স্বত্বাধিকারী? কেনই বা তদন্তকারী অফিসারের নেমেছিলেন তদন্তে?
ভিডিওটি প্রথমে রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। তারপরেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। জানা গিয়েছে, প্রাসাদোপম বাড়িটির মালিক আলেক্সি সাফোনভ। আলেক্সি ছিলেন সিনিয়র পদমর্যাদার ট্র্যাফিক পুলিশ অফিসার। বয়স ৪৫। এই বয়সেই দক্ষিণ স্টাভ্রোপোল এলাকায় ট্র্যাফিক পুলিশের প্রধান হয়ে বসেছিলেন। সেই অ্যালেক্সির বিরুদ্ধে ভয়াবহ রকমের দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে তাকে গ্রেফতার করে রাশিয়ার পুলিশ। আলেক্সিকে ট্র্যাফিক পুলিশের প্রধানের পদ থেকেও বরখাস্ত করা হয়। তার সঙ্গে মিলিতভাবে দুষ্কর্ম চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও ছয় অফিসারকে। এই ছয়জনের মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টরও।
শোনা যাচ্ছে দপ্তরের ৩৫ জন অফিসারকে নিয়ে প্রায় মাফিয়া গ্যাং-এর আদলে দীর্ঘদিন ধরেই দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছিলেন আলেক্সি। মূলত প্রচুর অর্থের বিনিময়ে ভুয়ো নম্বর প্লেট, বেআইনি কার্গো পারমিট দেওয়ার মতো দুষ্কর্ম করতেন আলেক্সি। সেই ঘুষের টাকায় বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছিলেন আলেক্সি। অসৎ পথে উপার্জিত অর্থে বানিয়ে ছিলেন প্রসাদোপম বাড়ি। সেখানে রাজা-বাদশার মতো জীবনযাপন করতেন আলেক্সি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তদন্তে উঠে এসেছে মারাত্মক সব প্রমাণ। ইনভেস্টিগেটিভ অফিসাররা তদন্ত নেমে যা দেখেছেন তাতে তাঁদের চোখ ছানাবড়া হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ৮০টি জায়গায় চিরুনি তল্লাশি চালানো হয়েছিল। সেখান থেকে পাওয়া সম্পত্তির মূল্য প্রায় কয়েকশো কোটি। ফলে দোষীদের ছাড় পাওয়ার আশা নেই। নিশ্চিতভাবে অন্তত এক যুগের বেশি সময় কারদণ্ড ভোগ করবেন দুর্নীতিবাজ অফিসারেরা।
আরও পড়ুন: কাঠপুতলি-ডোকরা কোন কোন রাজ্য়ের জনপ্রিয় হস্তশিল্প! জানেন?