সাঁতরে নদী পার, বাঘ দেখে হইহই করে উঠল যুবকের দল, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ’ বলছেন নেটিজেনরা
"পর্যটকদের আচরণ, বিশেষ করে সাফারিতে আগত পর্যটকদের ব্যবহার ভীষণ বিরক্তিকর।"
ট্রলারে চড়ে নদী পারাপার করছিলেন কয়েকজন যুবক। হঠাৎই নজরে এল একটি বাঘ। দূর থেকে দেখে প্রথমে অবশ্য স্পষ্ট বোঝা যায়নি। খানিক ঠাহর করতেই বোঝা গেল আশঙ্কা সত্যি হয়েছে। যুবকদের সন্দেহের অবসান ঘটিয়ে ক্রমশ সাঁতার কেটে এগিয়ে এল বাঘটি।
ততক্ষণে ট্রলারে থাকা যুবকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। তবে ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়ে মোটেও পিছিয়ে যায়নি তারা। বরং বাঘের ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কয়েকজন যুবক। সেই সঙ্গে ‘বাঘ বাঘ’ বলে চিৎকার করতে থাকেন কিছুজন। কেউবা বলতে শুরু করেন, জীবনে প্রথম এমন অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন। বাঘকে সাঁতরে নদী পার হতে দেখছেন। এদিকে লোকজনের চিৎকার চেঁচামেচিতে বিরক্ত হয়ে বাঘটিকেও যত দ্রুত সম্ভব সাঁতার কেটে নদী পার হয়ে জঙ্গলে ঢুকে পড়তে দেখা গিয়েছে।
Bagh…Bagh! ? This sighting of a young tiger crossing the river was undoubtedly an unusual one. However, keeping silence and safe distance is a must. See the video till end. VC:WA pic.twitter.com/NxjWyZCpw5
— Ramesh Pandey (@rameshpandeyifs) January 24, 2021
জানা গিয়েছে, এই ভিডিয়ো তোলা হয়েছে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায়। ট্রলারে থাকা যুবকদেরকে বাংলাতেই কথা বলতে শোনা গিয়েছে। এক মিনিট ২৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়ো টুইটারে শেয়ার করেছেন আইএফএস (ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিস) অফিসার রমেশ পাণ্ডে। পশুপ্রেমীদের সকলেই এই ভিডিয়োতে ওই যুবকদের কাণ্ডকারখানা দেখে যারপরনাই তিতিবিরক্ত হয়ে গিয়েছেন। নেটিজেনদেরও রোষের মুখে পড়েছে ওই যুবকের দল।
ভিডিয়ো শেয়ার করে আইএফএস অফিসার রমেশ পাণ্ডে লিখেছেন, “ছোট একটা বাঘ সাঁতার কেটে নদী পার হচ্ছে। নিঃসন্দেহে এই দৃশ্য মনোরম এবং নয়নাভিরাম। তবে সঠিক দূরত্ববিধি মেনে শান্ত থাকা প্রয়োজন।” রমেশের টুইটেরই প্রসঙ্গ টেনে জবাব দিয়েছেন আর এক আইএফএস অফিসার সুশান্ত নন্দা। তিনি লিখেছেন, “বন্যপ্রাণীদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এবং চিৎকার না করে শান্ত পরিবেশ বজায় রাখার ব্যাপারে কথা বলার জন্য তোমায় ধন্যবাদ রমেশ। গত কয়েকদিন ধরেই এ ধরণের ভিডিয়ো ভাইরাল হচ্ছে। পর্যটকদের আচরণ, বিশেষ করে সাফারিতে আগত পর্যটকদের ব্যবহার ভীষণ বিরক্তিকর।”
নেটাগরিকরাও একহাত নিয়েছেন ওই যুবকদের। কেউ বলেছেন, অবিলম্বে ওই ট্রলারের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হোক। কেউবা পর্যটকদ এবং স্থানীয়দের এ হেন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের জন্য প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। অনেকে আবার বলেছেন, “সাইলেন্স অর্থাৎ নিশ্চুপ থাকার অর্থই অনেকে জানেন না।” কেউ কেউ বলেছেন, “বন্যপ্রাণীদের তাদের মতো থাকতে দেওয়া উচিত। অযথা বিরক্ত করার কী দরকার? মানুষের উচিত আর একটু বেশি দায়িত্ববান হওয়া। বারবার একই ঘটনা ঘটছে। এরপর বড় বিপদ হলে তবে কি উচিত শিক্ষা হবে?”