‘ইয়াস’ পরবর্তী বিপর্যয়ের জের! দুই জেলায় বজ্রপাতে মৃত ৩, গুরুতর আহত ৬
উল্লেখ্য, ইয়াসের প্রভাবে ইতিমধ্যেই ছয় জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সেই তালিকায় আছে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বীরভূম, মুর্শিদাবাদে।
পশ্চিমবঙ্গ: ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ (cyclone Yaas) বঙ্গ থেকে বিদায় নিলেও তার প্রভাব রয়ে গিয়েছে বিস্তর। বৃহস্পতিবার জেলায় জেলায় হয়ে চলেছে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত। এদিন সকালে, মুর্শিদাবাদে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হল দুই কিশোরের। গুরুতর আহত ৫। পাশাপাশি নদিয়াতেও বাজের আঘাতে মারা গেলেন এক ব্যক্তি।
মুর্শিদাবাদ:
বৃহস্পতিবার সকালে, হরিহরপাড়া থানার রমনা বিলপাড়ার কাছে বজ্রাঘাতে (thunderstorm) মৃত্যু হয় দুই কিশোরের। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এদিন, মৃত তাহাবুল শেখ ও সহিদুল ইসলাম নামে দুই কিশোর মাঠে কাজ করতে যায়। তাদের সঙ্গে আরও পাঁচজন গ্রামবাসীও ছিলেন। সেইসময় আচমকা বৃষ্টি শুরু হলে সকলে বিলের পাশে একটি গাছের তলায় আশ্রয় নেয়। গাছটির উপর বাজ পড়তেই সকলে ছিটকে পড়ে যান। পরে, এলাকাবাসী তাঁদের উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, বাজ পড়ে সতেরো বছরের তাহাবুল শেখ ও ষোলো বছরের সহিদুল ইসলাম নামে দুই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। বাকি পাঁচজন ব্যক্তি গুরুতর আহত। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। অন্যদিকে, লোচনমাটি এলাকাতেও বজ্রাঘাতে জখম হন এক মহিলা।
নদিয়া:
ইয়াস পরবর্তী বিপর্যয়ের জেরে বজ্রাঘাতে (Thunderstorm) মৃত্য়ু হল এক বছর আটচল্লিশের ব্যক্তির। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সনাতন বর্মণ নামে ওই ব্যক্তি নাকাশিপাড়ার বিলকুমারী পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। মৃতের পরিবার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা নাগাদ নিজের বাড়ির জমিতে বেগুন চারা লাগাতে যান সনাতনবাবু। সেইসময় আচমকাই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। ফাঁকা মাঠ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে আসার চেষ্টা করেন সনাতনবাবু। কিন্তু তার আগেই বজ্রপাতে মারা যান তিনি। বাজের আঘাতে মারা যায় দুটি পাখিও। পরে, স্থানীয়রা মাঠের মধ্যে সনাতনবাবুর দেহটি পড়ে থাকতে দেখে সঙ্গে সঙ্গে বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক সনাতনবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, সনাতনবাবুর পরিবারে স্ত্রী ও দুই পুত্র সন্তান রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আগমনের ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে মঙ্গলবার, বাংলায় বিক্ষিপ্তভাবে দাপট দেখিয়েছে টর্নেডো। চুঁচূড়া, হালিশহর বীজপুরে টর্নেডোর দাপটে প্রাণ হারিয়েছে দুই জন। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিস্তর। হালিশহরে উড়ে গিয়েছে প্রায় ২০০ টি বাড়ির চাল। গুরুতর জখম হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ জন। অন্যদিকে, হুগলির চুঁচূড়ায় প্রায় ৪০ টি বাড়ি টর্নেডোর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেদিনই, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। চুঁচূড়া পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডে ত্রাণ বিলি করেন তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার।
উল্লেখ্য, ইয়াসের (cyclone Yaas) প্রভাবে ইতিমধ্যেই ছয় জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সেই তালিকায় আছে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বীরভূম, মুর্শিদাবাদে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে কলকাতা ও দুই মেদিনীপুরেও। বৃষ্টিপাতের সঙ্গে প্রায় ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়াও বইবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। মৌসম ভবন (IMD) সূত্রে খবর, ইয়াস ক্রমশ শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। এর প্রভাবেই মূলত ঝাড়খণ্ড ও বিহার সংলগ্ন এ রাজ্যের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি হবে।