২ আইনজীবীর মৃত্যু, আক্রান্ত ৭, হাওড়া জেলা আদালতে কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত

গত সপ্তাহে হাসমান শিকারী (৩৪) ও তন্ময় দত্ত (৪০) নামে হাওড়া আদালতের দুই নবীন আইনজীবীর করোনায় মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৭ জন আইনজীবী।

২ আইনজীবীর মৃত্যু, আক্রান্ত ৭, হাওড়া জেলা আদালতে কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Apr 27, 2021 | 10:39 PM

হাওড়া: করোনার (Corona) গ্রাফ উর্ধমুখী। রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে বুধবার থেকে আগামী ৭ মে পর্যন্ত হাওড়া আদালতের সমস্ত কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন আইনজীবীরা।

গত সপ্তাহে হাসমান শিকারী (৩৪) ও তন্ময় দত্ত (৪০) নামে হাওড়া আদালতের দুই নবীন আইনজীবীর করোনায় মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৭ জন আইনজীবী। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার হাওড়া আদালতের আইনজীবীরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেন আপাতত কাজ বন্ধ রাখবেন তাঁরা। আগামী ৭ মে-র পরে এ নিয়ে আবার বৈঠকে বসবেন। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।

এদিন বার সংগঠনের তরফে জানানো হয়, বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের স্বার্থেই আদালতের কাজকর্ম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। ক্রিমিন্যাল কোর্ট বার লাইব্রেরির সভাপতি সমীর বসু রায়চৌধুরী বলেন, “সম্প্রতি হাওড়া আদালতের দু’জন তরুণ আইনজীবীর করোনায় মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৭ আইনজীবী। হাওড়া আদালতে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবী মিলিয়ে প্রত্যেকদিন বহু মানুষের সমাগম হয়। কোভিড পরিস্থিতিতে যা বিশেষ চিন্তার বিষয়। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে হাওড়া আদালতের ক্রিমিন্যাল কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন, ক্রিমিন্যাল কোর্ট বার লাইব্রেরি ও হাওড়া বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা মিলে বৈঠক করেন। বৈঠকেই সংক্রমণ ঠেকাতে আদালতের কাজকর্ম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

আইনজীবীরা তাঁদের এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জেলা বিচারককে ইতিমধ্য়েই জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি পত্রপাঠ তাতে মান্যতা দেন বলে আইনজীবী মহল সূত্রে খবর। এছাড়াও জেলা বিচারকের কাছে আইনজীবীরা দাবি করেছেন, অবিলম্বে হাওড়া আদালতের সমস্ত কোর্টরুম যথাযথভাবে জীবাণু-মুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি আদালতে বহিরাগতরা যাতে কেউ প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারেও জেলা বিচারকের কাছে তাঁরা দাবি তুলেছেন।

উল্লেখ্য, ময়দান চত্বরে দশ বিঘা জমির উপর হাওড়া আদালত অবস্থিত। এই আদালতে আছে ৭টি সিভিল জাজ জুনিয়র ডিভিশন, ৩টি সিভিল জাজ সিনিয়র ডিভিশন, ৮টি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট, একটি মিউনিসিপালিটি কোর্ট, ৫টি এডিজে, ৩টি ফাস্ট ট্রাক কোর্ট, একটি সিজিএম ও একটি ডিস্ট্রিক্ট জাজের কোর্ট। এই আদালতে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার আইনজীবী ও কর্মী কাজ করেন।

আরও পড়ুন: ভোটের আগে হাওড়ায় করোনা সংক্রমণ দমনে নয়া উদ্যোগ প্রশাসনের 

এছাড়াও প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মানুষ হাওড়া আদালতে আসেন। এত বিপুল সংখ্যক মানুষের আনাগোনায় আদালতে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যায়। সে দিকে খেয়াল রেখেই সাময়িক ভাবে আদালতের কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।