অশ্রাব্য ভাষায় মমতাকে আক্রমণ, প্রতিবাদ করায় নিজের ভাইকেই মারধর, কাঠগড়ায় ‘রামভক্ত’ শিক্ষক

এই ঘটনায়, জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর সুভাষ চাকী বলেন, "আমি ঘটনাটা শুনেছি। মুখ্যমন্ত্রীর নামে যে এভাবে অশ্রাব্য ভাষা প্রয়োগ করতে পারে সে যে কেমন শিক্ষক এর থেকেই স্পষ্ট হয়। আমি যতদূর শুনেছি, ওই ব্যক্তির সঙ্গে কনকদের ঝামেলা নতুন নয়। আগেও অনেকবার ওদের মধ্যে বচসা হয়েছে।"

অশ্রাব্য ভাষায় মমতাকে আক্রমণ, প্রতিবাদ করায় নিজের ভাইকেই মারধর, কাঠগড়ায় 'রামভক্ত' শিক্ষক
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 02, 2021 | 10:25 PM

দক্ষিণ দিনাজপুর: নিজের ভাইয়ের সঙ্গে বচসা। দুই পরিবারে দীর্ঘদিনের অশান্তিকে কেন্দ্র করে বিরোধ চরমে উঠতেই তৃণমূল কংগ্রেস ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কটুক্তি করার অভিযোগ উঠল এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে।  ঘটনার প্রতিবাদ করায়, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক মারধর করার হুমকিও দেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের (TMC) বুথ সভাপতি কনক চৌধুরীর, যিনি সম্পর্কে অভিযুক্তেরই খুড়তুতো দাদা। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের চকভৃগুতে।

বালুরঘাট পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল বুথ সভাপতি কনক চৌধুরীর অভিযোগ, তাঁর খুড়তুতো ভাই দেবজ্যোতি চৌধুরীর সঙ্গে দীর্ঘদিনই বিশেষ বনিবনা নেই। বিভিন্ন সময়ে দুই পরিবারে অশান্তিও হয়েছে। কিছু সময় আগে দেবজ্যোতিবাবুকে টাকা ধার দিয়েছিলেন কনক চৌধুরী। বুধবার সেই পাওনা টাকাই চাইতে যান কনকবাবু। কিন্তু, দেবজ্যোতিবাবু জানিয়ে দেন তিনি কোনও ধার বাকি রাখেননি এবং টাকা দেবেন না। অচিরেই, এই নিয়ে দুই পক্ষে শুরু হয় বচসা। সেইসময়, দেবজ্যোতিবাবু মদ্যপ অবস্থায় ছাদে ঘোরাঘুরি করছিলেন বলে অভিযোগ। কনকবাবু তাঁকে নীচে আসতে বললে তিনি পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে অশ্রাব্য কথা বলতে শুরু করেন এমনটাই অভিযোগ কনকবাবুর। প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর করারও হুমকি দেন দেবজ্যোতিবাবু এমনই অভিযোগ তৃণমূল নেতার (TMC leader)।

কনকবাবু বলেন, “দেবজ্যোতি আমার নিজের খুড়তুতো ভাই। আমি তৃণমূল করি বলে ওর খুব রাগ। বুধবার আমি টাকা চাইতে গেলে আচমকাই আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে আজেবাজে কথা বলতে শুরু করে। আমি বারণ করার পরেও ভুলভাল কথা চালিয়ে যায়। আমি বলি, একজন টিচার হয়ে ও কী করে এইধরনের কথা বলছে, কিন্তু সেসবে পাত্তা না দিয়েই ও অশ্রাব্য ভাষায় মুখ্য়মন্ত্রীর নামে গালিগালাজ করে। এমনকী আমাকে আর আমার স্ত্রীকেও মারধর করার হুমকি দেয়। বুঝতে পারি ও মদ্যপ অবস্থায় আছে। আজ প্রথম নয়, এর আগেও ও নানা সময়ে নানারকম মন্তব্য করেছে। কিন্তু কখনোই কিছু বলিনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে বাধ্য হয়ে পুলিশকে খবর দিই।” ওইদিন সন্ধ্যাতেই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় পুলিশ। অভিযুক্ত দেবজ্যোতিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বালুরঘাট থানা। গোটা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে।

এই ঘটনায়, জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর সুভাষ চাকী বলেন, “আমি ঘটনাটা শুনেছি। মুখ্যমন্ত্রীর নামে যে এভাবে অশ্রাব্য ভাষা প্রয়োগ করতে পারে সে যে কেমন শিক্ষক এর থেকেই স্পষ্ট হয়। আমি যতদূর শুনেছি, ওই ব্যক্তির সঙ্গে কনকদের ঝামেলা নতুন নয়। আগেও অনেকবার ওদের মধ্যে বচসা হয়েছে। কিন্তু, সমস্যার সমাধান হয়নি। আগেও শুনেছি দেবজ্যোতিবাবু রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে নাকি ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিতেন। বুধবারও, তাই করেছেন। আমি যতদূর জানি, উনি বিজেপির সমর্থক। আর, ‘জয় শ্রী রাম’ কাদের স্লোগান তা তো বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। আসলে এটাই ওদের রাজনীতি।” যদিও, বিজেপির (BJP) জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার বলেন, “এই ধরনের কোনও ঘটনার কথা শুনিনি। তবে, যদি হয়ে থাকে এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ, বিজেপি কখনোই উদ্দেশ্য়প্রণোদিতভাবে এই ধরনের আক্রমণ করে না। আর এখন যা পরিস্থিতি তাতে, তৃণমূলের কর্মীরাই বিজেপির উপর সন্ত্রাস চালাচ্ছেন, মিথ্যা মামলায় আমাদের কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে। গোটা জেলাতেই একই ছবি। এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।”

আরও পড়ুন: ‘দিদি আপনি কেবল তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী নন…পদক্ষেপ করুন’, কাতর অনুরোধ বিজেপি বুথ সভাপতির