Aadhar Fraud Case: চোপড়ার গোটা গ্রাম প্রতারণার হাব! বাড়িতে বাড়িতে ‘চুরির কারখানা’

Aadhar Fraud Case: কলকাতা, শহরতলিতে নয়,  উত্তর দিনাজপুরের প্রত্যন্ত এলাকা চোপড়ার নারায়ণপুরেই নাকি এই প্রতারণার হাব! কীভাবে ফোন করে মানুষকে ফাঁদে ফেলতে হবে, সেখানে প্রত্যন্ত গ্রামেই নাকি রয়েছে তার পাঠশালা। TV9 বাংলার অন্তর্তদন্তে ইতিমধ্যেই সেই খবর সামনে এসেছে।

Aadhar Fraud Case: চোপড়ার গোটা গ্রাম প্রতারণার হাব! বাড়িতে বাড়িতে ‘চুরির কারখানা’
বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত প্রতারণার সামগ্রীImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 26, 2023 | 2:01 PM

চোপড়া: আঙুলের ছাপ চুরি। আর টাকা লুঠ। গত কয়েকদিনে মানুষের ঘুম উড়িয়েছে প্রতারকরা। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, এমনকি চাষবাস করে খাওয়া মানুষের অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হচ্ছে টাকা! কোথাও সংখ্যাটা লক্ষাধিক, কোথাও আবার দশ-বারো কিংবা বিশ হাজার টাকা। সাধারণ মানুষের কাছে রীতিমতো এটা একটা ‘থ্রেট’ হয়ে উঠেছে। তদন্তকারীদের হাতে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কলকাতা, শহরতলিতে নয়, উত্তর দিনাজপুরের প্রত্যন্ত এলাকা চোপড়ার নারায়ণপুরেই নাকি এই প্রতারণার হাব! কীভাবে ফোন করে মানুষকে ফাঁদে ফেলতে হবে, সেখানে প্রত্যন্ত গ্রামেই নাকি রয়েছে তার পাঠশালা। TV9 বাংলার অন্তর্তদন্তে ইতিমধ্যেই সেই খবর সামনে এসেছে।

প্রতারণার কুটিরশিল্প

নারায়ণপুরের ওই গ্রামে পা ফেলতেই রীতিমতো চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। নারায়ণপুরের ঘরে ঘরে টাকার লুঠের কারখানা! চোপড়ার চা বাগানের আড়ালেই জালিয়াতরা তাদের ব্যবসা ফেঁদে বসেছে। প্রত্যন্ত এলাকার ওই ঘরে ঘরে ব্রড ব্যান্ড কানেকশন। ল্যাপটপ, মনিটর, কম্পিউটার, প্রিন্টার, এমনকি আঙুলের ছাপ নকল করার মেশিন পাওয়া গিয়েছে নারায়ণপুরের একাধিক বাড়ি থেকে। এমনকি বেশ কিছু ফাইল উদ্ধার হয়েছে, যেখানে একাধিক ব্যাক্তির ব্যাঙ্কের নথি ডাউনলোড করা হয়েছিল। পুলিশ ইতিমধ্যেই ওই গ্রামের একাধিক বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। এই সব কিছু বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ডেভলপিং কেমিক্যালস, দলিলে আঙুলের ছাপের কাগজ ও প্রচুর আধার কার্ড।

কীভাবে তৈরি হত জালিয়াতদের টিম?

প্রতারকরা একটা টিম তৈরি করছে। পরিসংখ্যান বলছে, চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় এখন মোটামুটি শিক্ষিত যুবক-যুবতীর হার ভালই। চক্রের চাঁইরা তাঁদেরকেই টার্গেট করছে। মোটা টাকার প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। অনেকেই সেই ফাঁদ পা দিচ্ছেন। তাঁদের টেকনিক্যাল গোটা বিষয়টি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মূলত তাঁরা ফোন করছেন, কথার ফাঁদে ফাঁসিয়ে আধার কার্ড থেকে বায়োমেট্রিক নকল করে প্রতারণা করছেন, কখনও ক্রেডিট কার্ডের নামে ফোন করে ক্রেডেনশিয়াল জেনে নিয়ে চলছে টাকা লুঠের খেলা।

তদন্তকারীরাই বলছেন, নারায়ণপুরের এই গ্রামে কার্যত কুটিরশিল্পের মতো চলছে প্রতারণার ব্যবসা। সীমান্ত লাগোয়া এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু হয়েছে।

উদ্বিগ্ন প্রশাসন

চোপড়ার এই ঘটনা সামনে আসার পর রীতিমতো উদ্বিগ্ন পুলিশ প্রশাসন। খোদ কলকাতার বুকে তথ্য প্রযুক্তি কেন্দ্র সল্টলেকেই ইতিমধ্যে প্রচুর ভুয়ো কলসেন্টারের হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকেও ফোন করে টেক সাপোর্ট, কিংবা ডেবিট কার্ড কিংবা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করা হত। কলকাতা পুলিশের থেকে আগেই দাবি করা হয়েছিল, রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামগুলি, যেখানে এটিএম পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া এখনও সম্ভব হয়নি, সেই এলাকাগুলিকেই ‘হাব’ হিসাবে মূলত বেছে নিচ্ছে প্রতারকরা। এরকম একাধিক তথ্য তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। ব্যাঙ্ক ফ্রড সেকশন বিষয়টি দেখছেন। তদন্তকারীদের মনে করছেন, প্রত্যন্ত এলাকা, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতেই প্রতারণা চক্রের বড় ডেরা।