Giriya Setu: ‘মরণফাঁদ’ সেতু ঠিক না হলে এবার ‘নো ভোট’…
Alipurduar: পূর্ব কাঁঠালবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের পুঁটিমারি মোড় থেকে কোচবিহারগামী জেলা পরিষদের রাস্তায় থাকা গিরিয়া সেতু প্রায় ৩০ বছর ধরে বেহাল বলে অভিযোগ এলাকার লোকজনের। বর্তমানে এই সেতু মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের এই রাস্তা দিয়ে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় কোচবিহার জেলার ঘোকসাডাঙ্গা, মাথাভাঙা, শীতলকুচি-সহ বিভিন্ন জায়গায়।
আলিপুরদুয়ার: প্রায় ৩০ বছর ধরে বেহাল দশা গিরিয়া সেতুর। ভোট এলে নেতারা আসেন, বলেন জেতালে সেতু করে দেবেন। কেউ না কেউ তো জেতেনই। কিন্তু জিতে বেমালুম ভুলে যান কী কথা দিয়েছিলেন। এবার ক্ষোভে ফুঁসছেন আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের পূর্ব কাঁঠালবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার লোকজন। সেতু না হলে এবার লোকসভা ভোট বয়কটের ডাক দেবেন বলে হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন।
পূর্ব কাঁঠালবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের পুঁটিমারি মোড় থেকে কোচবিহারগামী জেলা পরিষদের রাস্তায় থাকা গিরিয়া সেতু প্রায় ৩০ বছর ধরে বেহাল বলে অভিযোগ এলাকার লোকজনের। বর্তমানে এই সেতু মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের এই রাস্তা দিয়ে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় কোচবিহার জেলার ঘোকসাডাঙ্গা, মাথাভাঙা, শীতলকুচি-সহ বিভিন্ন জায়গায়।
অথচ সেই রাস্তার মাঝে সেতুর ভয়ঙ্কর অবস্থা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, একাধিক বার এই সেতু সংস্কার নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা। এলাকার বাসিন্দা মহেশ বর্মন বলেন, “এই ভোট আসবে, আবার রাজনৈতিক নেতারা এসে প্রতিশ্রুতি দেবেন। এর আগেও তো জন বার্লা এসে বলে গিয়েছিলেন। এক লোকসভা থেকে আরেক লোকসভা ভোট আসতে চলল। কোথায় কিছুই তো হল না। সেতু সংস্কারের কোনও উদ্যোগই নেই। আমরা আগে পথ অবরোধ পর্যন্ত করেছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ১৯৯৩ সালের বন্যায় গিরিয়া নদীর এই সেতুটির মাঝখানের পিলার বসে যায়। যার ফলে সেই সময় সেতুটি বেঁকে যায় এবং তখন থেকেই বছরের পর বছর এভাবেই চলছে যাতায়াত। বর্তমানে সেই সেতুর মাঝের অংশ খসে পড়ে তৈরি হয়েছে বিরাট গর্ত। এখানে ওখানে বেরিয়ে রয়েছে লোহার রড। ভেঙে পড়েছে সেতুর রেলিং। এক কথায় সেতু যেন তৈরি হয়েছে মৃত্যুফাঁদে।
পুঁটিমারি থেকে আসা সইদুল ইসলামের কথায়, “আমার ৩৫ বছর বয়স। তার আগে থেকে এই পরিস্থিতি। এত মানুষ যাতায়াত করেন। অথচ প্রশাসনের কোনও নজরই নেই। কোচবিহারের পুঁটিমারি থেকে ফালাকাটার দিকে যেতে হলে এই সেতুটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অথচ কৃষকরা বড় গাড়ি নিয়ে যে যাবেন ভয় করে কখন ভেঙে পড়ে। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টোটো বা অন্য ছোট গাড়ি কিছু ভাড়া করে তাতে মাল মেইন রোডে নিয়ে যেতে হয়। দমকলের গাড়ি পর্যন্ত ঢুকতে পারে না এখানে।”
কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলার সংযোগকারী এই সেতু ধরে ছোট যাত্রীবাহী গাড়িও চলাচল করেই। পণ্যবাহী ট্রাক, ট্রাক্টর, লরিও যাতায়াত করে প্রতিনিয়ত। ওই দুর্বল সেতু দিয়ে ভারী যাবাহন চলাচল বন্ধের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে সেতুর দু’পাশে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ডও লাগানো হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধান হয়নি। আর এর মাঝেই সামনে লোকসভা ভোট। সেতু না হলে এবার আর ভোট নয়, বলছেন এলাকার বাসিন্দারা।
কোচবিহার জেলার পুঁটিমারির বাসিন্দা নীরেন সরকার বলেন, “সেতুটি পড়েছে আলিপুরদুয়ার জেলায়। কিন্তু শিলবাড়িহাট বাজার ও ফালাকাটা যাতায়াতের ক্ষেত্রে এই রাস্তাই ভরসা। দুই জেলার সংযোগকারী এই রাস্তা এত বছর ধরে বেহাল। তাই আমরা দুই জেলার বাসিন্দা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা আর ভোট দেব না।”
পূর্ব কাঠালবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান বিজেপির সুপর্ণা বর্মনের বক্তব্য, “বিধানসভায় আমাদের বিধায়ক দীপকদা গিরিয়া সেতু নিয়ে কথা তুলেছেন। আসলে আমরা তো বিরোধী দল। তাই আমাদের কাজটা খুব সহজে করতে দেওয়া হয় না। আমাদের পঞ্চায়েত থেকেও প্রশাসনকে জানিয়েছি। কোনও উত্তর পাইনি।” এ নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি স্নিগ্ধা শৈব বলছেন, সেতুর জন্য ভোট বয়কট ঠিক নয়। তিনি দেখছেন যতটা তাড়াতাড়ি এই কাজ করা যায়।