AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Haunted Village: ভয়ে পালিয়েছেন সকলে! শুধু ভূত চতুর্দশীতে নয়, সারা বছরই গা ছমছম করে বাঁকুড়ার পরিত্যক্ত এই গ্রামে

Haunted Places of Bankura: জানতে ইচ্ছে করছে কোথায় এই গ্রাম? বেশি দূর যেতে হবে না এই ভূতুড়ে গ্রাম দেখতে হলে। বাঁকুড়াতেই রয়েছে এই গ্রাম। বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানা এলাকার চালিবাড়িরডিহি। গোটা গ্রামে যেন বিরাজ করছে শ্মশানের শূন্যতা।

Haunted Village: ভয়ে পালিয়েছেন সকলে! শুধু ভূত চতুর্দশীতে নয়, সারা বছরই গা ছমছম করে বাঁকুড়ার পরিত্যক্ত এই গ্রামে
প্রতীকী ছবি
| Edited By: | Updated on: Oct 23, 2022 | 2:27 PM
Share

বাঁকুড়া: রাজস্থানের কুলধারা গ্রামের কথা হয়ত অনেকেই শুনেছেন। পরিত্যক্ত একটি গ্রাম। অনেক ভূতুড়ে গল্প ছড়িয়ে রয়েছে এই পরিত্যক্ত গ্রামের আনাচে কানাচে। তবে জানেন কি? এমন ভূতুড়ে পরিত্যক্ত গ্রাম (Haunted Village) এই বাংলাতেও রয়েছে। রাত হলেই নাকি শোনা যায় শিশুর আর্তনাদ। কখনও আবার চিল চিৎকার। হঠাৎ হঠাৎ ভেসে আসে শিশুর কান্না। আশপাশের এলাকার লোকেরা এই গ্রামকে ভূতের গ্রাম বলেই চেনে। প্রায় জনশূন্য। খাঁ খাঁ করছে চারিদিক। গোটা গ্রামে মাত্র দু’টি পরিবারের বাস। ভূতের ভয়ে নাকি এই গ্রামে আর কেউ থাকতে আসেন না। বাড়ি-ঘর রয়েছে। কিন্তু লোক জন নেই। সবাই ভূতের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে গিয়েছেন। জানতে ইচ্ছে করছে কোথায় এই গ্রাম? বেশি দূর যেতে হবে না এই ভূতুড়ে গ্রাম দেখতে হলে। বাঁকুড়াতেই রয়েছে এই গ্রাম। বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানা এলাকার চালিবাড়িরডিহি। গোটা গ্রামে যেন বিরাজ করছে শ্মশানের শূন্যতা।

ভূত আছে কী নেই, তা নিয়ে অনেকেই অনেক সময়ে তর্ক বিতর্ক করেন। গ্রামে ভূতের অস্তিত্ব রয়েছে, এমন ভয় থেকে আস্ত একটা গ্রাম ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। ভিটেমাটি ছেড়ে গ্রামবাসীরা আশ্রয় নিয়েছিল পাশের গ্রামে। গ্রামের মানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছিল পাশের গ্রামে। কী হয়েছিল এই গ্রামে জানেন? বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানা এলাকাতেই রয়েছে বড়জুড়ি গ্রাম। এই গ্রামে জনসংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকায় একসময় গ্রাম ছেড়ে পাশেই একটি উঁচু জমিতে বসতি গড়ে উঠেছিল। সেই উঁচু জমির নাম হয় চালিবাড়িরডিহি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই চালিবাড়িরডিহিতে বসতিও বাড়তে থাকে। বছর ছয়েক আগে চালিবাড়িরডিহিতে প্রায় ১৬ টি পরিবারের বাস ছিল। আর তখনই ঘটে গিয়েছিল এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। তারপর থেকেই নাকি ভূতুড়ে কাণ্ডকারখানা শুরু হয় গ্রামে।

কী হয়েছিল বছর ছয়েক আগে? শোনা যায়, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে পরিণতি দিতে গ্রামেরই এক গৃহবধূ ঘর ছেড়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় বাঁধ সেধেছিল তাঁর ছোট্ট সন্তান। মাকে আঁকড়ে ধরে যেতে বাধা দেয়। কিন্তু ওই গৃহবধূ নাকি সেই সময় গ্রামেরই অদূরে নিজে হাতে ওই শিশুকে কুপিয়ে খুন করে চম্পট দিয়েছিলেন প্রেমিকের সঙ্গে। গ্রামবাসীদের দাবি, ওই নৃশংস ঘটনার পর থেকেই চালিবাড়িরডিহি গ্রামে বিভিন্ন ভৌতিক কাণ্ডকারখানা হতে থাকে। প্রায়দিনই নিশুতি রাতে গ্রামবাসীরা নাকি এক শিশুর আর্তনাদ শুনতে পেতেন। কখনও কখনও আবার চিল চিৎকার, শিশুর কান্নার শব্দ। কিছুদিন এভাবে চলেছিল, কিন্তু তারপর সময় যত এগোয়, ততই আতঙ্ক বাড়তে থাকে গ্রামবাসীদের। ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতেন গ্রামবাসীরা। আর ঝুঁকি নিতে পারেননি চালিবাড়িরডিহি গ্রামের মানুষরা। ভিটেমাটি ছেড়ে আবার তাঁরা ফিরে যান পুরনো বড়জুড়ি গ্রামে।

এদিকে পরিত্যক্ত ওই বাড়ি-ঘরগুলি যেন আরও ভূতুড়ে রূপ নিতে শুরু করে। ঝোপ-ঝাড় আর জঙ্গলে ভরে যায় চারিদিক। শ্মশানের শূন্যতা চারিদিকে। বিষয়টি জানাজানি হতেই স্থানীয় ব্লক ও পুলিশ প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়। ভয় কাটিয়ে গ্রামবাসীদের চালিবাড়িরডিহি গ্রামে ফেরানোর চেষ্টা শুরু করে প্রশাসন। প্রশাসনের তৎপরতায় এতদিনে দু’টি পরিবার ফিরেছে বটে, কিন্তু বাকিরা কেউই আর ওই গ্রামে ফিরে আসেননি। যাঁরা ফিরেছেন, তাঁদের মন থেকেও ভয় পুরোপুরি কাটেনি। রাতের অন্ধকার নামলে তাঁরাও সিঁটিয়ে যান আতঙ্কে।

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক জয়দেব চন্দ অবশ্য বলছেন, “ওই গ্রামের মানুষদের দীর্ঘদিন ধরে মনে গেঁথে যাওয়া অন্ধবিশ্বাস সরাতে লাগাতার যুক্তিবাদী মন তৈরি করার কর্মসূচি প্রয়োজন। এই ব্যাপারে আমরা দ্রুত হস্তক্ষেপ করব । বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে, সেখানে এই ধরনের ঘটনা লজ্জাকর। আমরা আমাদের কাজ করব। তবে ওই গ্রামকে স্বনির্ভর, পরিপূর্ণ ও স্বাভাবিক করতে ওই গ্রামের কর্মসংস্থান,স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং খাদ্য ইত্যাদি লৌকিক ও মৌলিক বিষয়গুলি গড়ে তুলতে হবে সরকার এবং স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতকে। সবটা হলেই জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হবে।”