Durga Puja 2023: প্রকৃতির জাদুতেই মৃন্ময়ী দুর্গা আজ চিন্ময়ী, বাহারি খড়েই নয়া রূপ পাচ্ছেন উমা
Durga Puja 2023: নিজে নিজেই একসময় ছবি আঁকতে শিখেছিলেন মালিয়াড়ার সমরেন্দ্রনাথ মিশ্র। বছর চল্লিশ আগে তাঁর হাতেই জন্ম নেয় খড় দিয়ে তৈরি বিশেষ একধরনের শিল্পকলা। নিরন্তর গবেষণা, লাগাতার পর্যবেক্ষণ ও কঠোর অধ্যাবসায়, নিজের হাতযশের মাধ্যমে একেবারে আনকোরা সেই শিল্পকে নিজের করায়ত্ত করেন সমরেন্দ্রবাবু।
বাঁকুড়া: কৃত্রিম রঙে নয়, প্রাকৃতিক বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ধানের খড়ে যে রং ধরে সেই রংকে কাজে লাগিয়েই খড়ের দুর্গা প্রতিমা (Durga Idol) ও মণ্ডপের অলঙ্করণ তৈরি করে তাক লাগাচ্ছেন বাঁকুড়ার (Bankura) মালিয়াড়া গ্রামের শিল্পী সমরেন্দ্রনাথ মিশ্র। একেবারে ভিন্ন ধরনের এই শিল্প। এবার তা স্থান পাবে বাঁকুড়া শহরের প্রাচীন একটি দুর্গা মণ্ডপে। শিল্পীর আশা দুর্গাপুর, কলকাতা, মুম্বই, রাঁচির পর তাঁর এই ভিন্নধর্মী শিল্পকর্ম নজর কাড়বে বাঁকুড়ার পুজো মণ্ডপেও।
নিজে নিজেই একসময় ছবি আঁকতে শিখেছিলেন মালিয়াড়ার সমরেন্দ্রনাথ মিশ্র। বছর চল্লিশ আগে তাঁর হাতেই জন্ম নেয় খড় দিয়ে তৈরি বিশেষ একধরনের শিল্পকলা। নিরন্তর গবেষণা, লাগাতার পর্যবেক্ষণ ও কঠোর অধ্যাবসায়, নিজের হাতযশের মাধ্যমে একেবারে আনকোরা সেই শিল্পকে নিজের করায়ত্ত করেন সমরেন্দ্রবাবু। এই শিল্পের মূল বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে কোনও রঙের ব্যবহার নেই। প্রজাতি ভেদে ও জমির মাটি ভেদে ধানের খড়ের রং আলাদা আলাদা হয়। সেই খড় বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে আলাদা আলাদা রং ধারণ করে। নানা রং বেরঙের সেই খড় সংগ্রহ করে তা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয় আঁশ। সেই আঁশকে ইস্ত্রি করে সোজা করে নেওয়া হয়। এরপর প্রয়োজনমতো তা চিটিয়ে দেওয়া হয় কাগজে।
কাঠের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি বিশেষ একধরনের মণ্ড দিয়ে প্রতিমা গড়ে তার উপর একে একে চিটিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন রঙের এই খড়ের আবরণ। আর তাতেই একেবারে প্রাকৃতিক রূপ পায় মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তি। বছরের পর বছর ধরে মালিয়াড়া গ্রামে নিজের ওয়ার্কশপে সেই শিল্পেরই চর্চা করে এসেছেন সমরেন্দ্রনাথ মিশ্র। তাঁর এই শিল্প ইতিমধ্যেই রীতিমত প্রশংসা কুড়িয়েছে দুর্গাপুর, কলকাতা, মুম্বই, রাঁচি সহ ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন শহরের পুজো মণ্ডপে। এবার বরাত মিলেছে বাঁকুড়া শহরের পাঠক পাড়া সর্বজনীনে।
প্রতিমা থেকে মণ্ডপের অলঙ্করণ তৈরি করতে গিয়ে এখন দম ফেলার ফুরসৎ নেই শিল্পী সমরেন্দ্রনাথ মিশ্র ও তাঁর সহযোগীদের। রাতদিন জেগে চলছে প্রতিমা ও মণ্ডপের অলঙ্করণ তৈরির কাজ। শিল্পীর বক্তব্য, এবার তাঁর কাজ আরও নিখুঁত হচ্ছে। গত চার মাস ধরে তৈরি এই শিল্পকর্ম তিনি সংরক্ষণও করে রাখতে চান। একইসঙ্গে তাঁর ইচ্ছা, নতুন প্রজন্ম আরও বেশি করে এগিয়ে আসুক। শিখুক এই শিল্পকলা। তাতেই বাঁচবে শিল্প।