Bankura: UPSC-তে সপ্তম, ‘টুয়েলভথ ফেল’র চম্বলের মনোজের পর জঙ্গলমহলের পার্থও উঠে আসবে বায়োপিকে!
Bankura: ছোট বেলাতেই বাবা পেশায় অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক শিখিয়েছিলেন একটা ব্যর্থতা আগামীর সফলতার পথ তৈরি করে দেয়। পিছন ফিরে না দেখে এগিয়ে চলো। সেই এগিয়ে চলা থামাননি রাইপুর ব্লকের মাড়োশোলের বাসিন্দা পার্থ।
বাঁকুড়া:
গৌরী ভাইয়া চেয়েছিলেন আইপিএস হতে। অনেক পরিশ্রম করে চারবারের চেষ্টাতেও ব্যর্থ হতে হয়েছিল তাঁকে। যদিও চতুর্থ বারের চেষ্টায় গৌরী ভাইয়ার স্বপ্ন পূরণ করেছিল মনোজ। বিধু বিনোদ চোপড়ার সিনেমা ‘টুয়েলভথ ফেইল-রিস্টার্ট ‘ এখন মানুষের মনে দাগ কেটে দিয়েছে। কিন্তু এ তো চম্বলের মনোজের গল্প! তবে জানেন কি বাংলার জঙ্গলমহলেও রয়েছেন এরকমই এক জন। পার্থ! প্রত্যন্ত সারেঙ্গা ব্লকের মাড়োশোল গ্রাম থেকে ইউপিএসসির জিও সায়েন্টিস্ট পরীক্ষায় সারা দেশে সপ্তম স্থান দখল করার রাস্তাটা ছিল বেশ শক্ত। কিন্তু তিনি পেরেছেন। বলছেন কঠিন হলেও কিছুই অসম্ভব নয়।
ছোট বেলাতেই বাবা পেশায় অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক শিখিয়েছিলেন একটা ব্যর্থতা আগামীর সফলতার পথ তৈরি করে দেয়। পিছন ফিরে না দেখে এগিয়ে চলো। সেই এগিয়ে চলা থামাননি রাইপুর ব্লকের মাড়োশোলের বাসিন্দা পার্থ। মাড়োশোলে নিজের প্রাথমিকের পাঠ চুকিয়ে তিনি চলে এসেছিলেন সারেঙ্গায়। সারেঙ্গা মাহাত্মাজী স্মৃতি বিদ্যাপীঠ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে পদার্থ বিদ্যা নিয়ে স্নাতক হন। আইআইটি জ্যাম পরীক্ষা দিয়ে গুয়াহাটি আইআইটি থেকে স্নাতকোত্তর করে পিএইচডি করার জন্য পাড়ি দেন দিল্লি।
দিল্লিতে গিয়েই বদলে যায় জীবনের লক্ষ। যেনতেন প্রকারেণ ইউপিএসসি ক্র্যাক করার ভাবনা মাথায় চেপে বসে। শুরু হয় লড়াই। পরপর চার বছর আইএএস, আইপিএস হওয়ার চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন তিনি। কিন্তু হাল ছাড়েননি পার্থ। শুরু হয় ইউপিএসসি র জিও সায়েন্টিস্ট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি। প্রথমবার ২০২২ সালে সেখানেও ব্যর্থতা আসে। দমে যাননি। ফের টুয়েলভথ ফেইল সিনেমার মতো ‘রিস্টার্ট’ বলে শুরু করেন পড়াশোনা। শেষ পর্যন্ত ইউপিএসসি ২০২৩ এ সাফল্য ধরা দেয় গোড়া থেকে বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করা পার্থর হাতে।
প্রিলিমস, মেইন ও ইন্টারভিউ তিন ধাপ ডিঙিয়ে পার্থ করন জানতে পারেন তিনি ওই পরীক্ষায় সারা দেশের সপ্তম স্থানাধিকারী। দেশের প্রতি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ইউপিএসসি যাদের লক্ষ আগামীতে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চান পার্থ। পার্থর এই সাফল্যে গর্বিত তাঁর পরিবার, স্কুল এমনকি গোটা সারেঙ্গা গ্রাম। পার্থ বললেন, “রিস্টার্ট সিনেমাটা দেখেছি। ভীষণভাবে অর্থবহ একটি সিনেমা। প্রত্যেকের শেখা উচিত। আমিও রিস্টার্ট বলেই শুরু করেছিলাম। আজ সফল। পথটা কঠিন, কিন্তু সেই পথ ঠান্ডা মাথায় অতিক্রম করতে হবে। হতাশ হলে চলবে না।” স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমাদের গর্ব। আমরা মনে করি, একদিন জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রামের এই ছেলের কাহিনীও সিনেমার পর্দায় উঠে আসবে। “