Bankura: ভোট এলেই ওঁদের নিয়ে তরজা, আর ভোট মিটলে আদিবাসীরা কি সেই তিমিরেই?

Bankura: একই কথায় গলা মেলাচ্ছেন বাঁকুড়া লোকসভার তৃনমূল ও বিজেপি প্রার্থীরা। আর দুতরফের এই দাবি, পাল্টা দাবি ও তরজার আড়ালে এবারও কোথাও চাপা পড়ে যাচ্ছে আদিবাসীদের আসল দাবি দাওয়া গুলো।

Bankura: ভোট এলেই ওঁদের নিয়ে তরজা, আর ভোট মিটলে আদিবাসীরা কি সেই তিমিরেই?
আদিবাসীদের উন্নয়নে প্রসঙ্গে তরজাImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 17, 2024 | 2:27 PM

বাঁকুড়া: ভোট আসে ভোট যায়। আদিবাসী উন্নয়নের প্রশ্নে শাসক বিরোধী চাপানউতোরে উত্তপ্ত হয় এই বাংলার রাজনীতি। কিন্তু হাল বদলায় না জঙ্গলমহলের মানুষের জীবন ও জীবিকার। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের প্রশ্নে জঙ্গলমহলের আদিবাসী মানুষেরা থেকে যান সেই তিমিরেই। এ রাজ্যের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহলের মূল বাসিন্দা আদিবাসীরা। সাঁওতাল ছাড়াও শবর, লোধা, মুন্ডা, মাহালি সহ বিভিন্ন ভাষা গোষ্ঠীর আদিবাসী মানুষের বসবাস এই জঙ্গলমহলে। ভোট এলেই জঙ্গলমহলের এই আদিবাসী মানুষের চাওয়া পাওয়া উন্নয়ন অনুন্নয়নের বিষয় উঠে আসে খবরের কাগজে, টেলিভিশনের পর্দায়।

রাজনৈতিক নেতাদের মুখে দোষারোপ পাল্টা দোষারোপের পালা শুরু হয়। আদিবাসী উন্নয়নে প্রতিশ্রুতির বাণ ডাকে জঙ্গলমহলে। কিন্তু ভোট ফুরালেই সমস্ত প্রতিশ্রুতি ভুলে যান রাজনীতির কারবারীরা। জঙ্গলমহল থেকে যায় সেই জঙ্গলমহলেই। গত এক দশকে জঙ্গলমহলে রাস্তা ঘাটের হাল ফিরেছে অনেকটাই। কিন্তু আদিবাসী মানুষের জীবন জীবিকার ন্যূনতম চাহিদাগুলো থেকে গেছে উন্নয়নের ঢক্কা নিনাদের আড়ালে।

গত দশ বছরে একের পর এক স্কুলে আদিবাসী হস্টেল বন্ধ হয়েছে জঙ্গলমহলে। কাগজে কলমে না হলেও বাস্তবে আদিবাসীদের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে স্কুলছুটের সংখ্যা। সাঁওতালি মাধ্যমের অধিকাংশ স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক নেই। পরিকাঠামো তৈরি হয়নি সাঁওতালি মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষার। স্বাস্থ্য পরিষেবার হালও তথৈবচ। নতুন করে কাজের কোনো সুযোগ তৈরি হয়নি, উল্টে গত কয়েক বছর ধরে জঙ্গলমহলের মানুষ কাজ পাননি একশো দিনের কাজের প্রকল্পে। গত কয়েক বছর ধরে বৃষ্টির অভাব কৃষি ক্ষেত্রে কাজের সুযোগকে আরও সঙ্কুচিত করেছে।

ফলে কাতারে কাতারে মানুষকে কাজের খোঁজে ছুটতে হচ্ছে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। আবাস সহ বিভিন্ন যোজনার সুবিধা আজও পাননি একটি বড় অংশের আদিবাসী মানুষ। মানুষের সেই চাওয়া পাওয়া নিয়ে এই লোকসভা ভোটের মুখেও শুরু হয়েছে তরজা। মুখ্যমন্ত্রী যখন জঙ্গলমহলে প্রচারে গিয়ে আদিবাসীদের ঢালাও উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরছেন তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভোট প্রচারে এসে দাবি করছেন এই রাজ্যে আদিবাসীদের কোনও উন্নয়ন হয়নি। একই কথায় গলা মেলাচ্ছেন বাঁকুড়া লোকসভার তৃনমূল ও বিজেপি প্রার্থীরা। আর দুতরফের এই দাবি, পাল্টা দাবি ও তরজার আড়ালে এবারও কোথাও চাপা পড়ে যাচ্ছে আদিবাসীদের আসল দাবি দাওয়া গুলো। আদিবাসী স্কুলের শিক্ষক কার্তিম মাল বলেন. “আদিবাসী ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার বিষয়টা নিয়ে বলতে চাই। এখানকার বেশিরভাগ ছেলেমেয়েই হচ্ছে এসসি,এসটি। তাদের পড়াশোনার ভাল মাধ্যম ছিল বোর্ডিং স্কুল। কিছু কিছু স্কুলে হস্টেল সিস্টেম ভাল চলছে। তবে পুরনো যে বোর্ডিংগুলো ছিল, তাতে নজরদারির অভাবে স্কুল ছুটের সংখ্যা বাড়ছে।”

বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার বলেন, “জঙ্গলে যাঁরা বহুদিন ধরে বাস করছেন, তাঁদের পাট্টা দেওয়ার কথা। সেখানে তৃণমূলের লোক, যাঁরা জঙ্গলে থাকছে না, তাঁদের পাট্টা দিচ্ছে, তারপর বন্ধ করে দিয়েছে পাট্টা দেওয়া। তাতে আদিবাসীদের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে।” অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “আদিবাসীরা ভীষণই ভালো রয়েছে। জঙ্গলমহল এখন শান্ত। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এখন ভীষণ উচ্চ পর্যায়ে। আদিবাসীদের অভাব নেই। এই খবর প্রধানমন্ত্রীর কানে পৌঁছয় না। সুভাষ সরকারেরই আদিবাসীদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।”