Mamata in Bankura: ‘কৃষকরা চাল নিয়ে এলে আপনারা কম ওজন করেন?’ কিষান মান্ডিতে ওজন মেশিনের ‘ভুলে’ বেজায় বিরক্ত মমতা
Mamata Banerjee: মমতা বলেন, "আপনারা খবরগুলি রাখেন? কৃষকরা যখন চাল দিতে আসে, তখন আপনারা কম ওজন করেন, আপনার ওজন মেশিন ভুল। ওজন মেশিন ভুল থাকলে আপনি জানেন তো যদি আরটিআই করে অভিযোগ করে, জেল পর্যন্ত হয়ে যায়।"
বাঁকুড়া : বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে কিষান মান্ডির সমস্যা নিয়ে বেজায় বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কাছে অভিযোগপত্র জমা পড়েছে। কিষান মান্ডিতে ওজন মেশিনে ভুল মাপ দেখায়। মমতার কাছে এমনই অভিযোগ এসেছে। কৃষকরা যখন ধান বিক্রি করতে আসেন, তখন সেই ওজন মেশিনে কম ওজন দেখানো হয় বলে অভিযোগ। জমা পড়া সেই অভিযোগ, ভরা প্রশাসনিক সভার মধ্যেই পড়ে শোনালেন মমতা। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সতর্ক করে দিলেন, ওজন মেশিন ভুল থাকলে, যদি আরটিআই করে অভিযোগ করা হয়, তাহলে জেল পর্যন্ত হতে পারে। যে কিষান মান্ডির ঘটনা নিয়ে এমন অভিযোগ, সেটি বাসুদেবপুরের কিষান মান্ডির। এই নিয়ে সভায় উপস্থিত জেলার সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে কিছুটা ধমকও দেন মমতা।
প্রথমেই প্রশ্ন করেন, এখানে কিষান মান্ডি কে দেখেন? আর তারপরই শুরু হয় ধমকের পালা। বলেন, “আপনারা খবরগুলি রাখেন? কৃষকরা যখন চাল দিতে আসে, তখন আপনারা কম ওজন করেন, আপনার ওজন মেশিন ভুল। ওজন মেশিন ভুল থাকলে আপনি জানেন তো যদি আরটিআই করে অভিযোগ করে, জেল পর্যন্ত হয়ে যায়।”
ছাতনা বিধানসভা এলাকার ইন্দপুর ব্লকের পায়রাচালি গ্রামের এক কৃষক পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছিল। ৭৫ বছর বয়সি অশ্বিনী পূজারু। ছেলে সোমনাথ পূজারুর একটি ছোট চায়ের দোকান রয়েছে। গতবছর ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে ৪০ কুইন্টাল ধান হয়েছিল। বিগত ৪-৫ মাসে বার বার কৃষক মান্ডিতে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু একটুও ধান কেনেনি কিষান মান্ডি। শুধু বলে, ফোন নম্বর দিয়ে যান, জানাব। বাধ্য হয়ে পাড়ার আড়তদারকে ১০ কুইন্টাল ধান ১১০০-১২০০ টাকা প্রতি কুইন্টাল দরে বিক্রি করে দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে মান্ডিতে ধানের দাম ১৯৮০ টাকা প্রতি কুইন্টাল। এলাকার আরও অনেক কৃষকের একই অভিযোগ।
আধিকারিকদের বক্তব্য, যাতে কিষান মান্ডি থেকে বেশি দাম (আড়তদারদের থেকে বেশি) পাওয়া যায়, তাই সবাই একসঙ্গে ধান বিক্রি করতে চায়। কিন্তু, সবার একসঙ্গে নেওয়ার মতো পরিকাঠামো নেই কিষান মান্ডিতে। তাই সবাইকে তারিখ দেওয়া হয়।
এই সমস্যা দূর করতে পথও বাতলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লাল-হলুদ-সবুজ খাতা করার নির্দেশ দেন তিনি। লাল খাতায় তালিকাভুক্ত করতে হবে, যাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে তাদের নাম। পরিকাঠামোগত সমস্যার জন্য যাঁদের থেকে ধান নেওয়া যাচ্ছে না, তাদের নাম, কোন দিন তাঁদের ধান নেওয়া হবে… সেই সব তালিকাভুক্ত করতে হবে ওই লাল খাতায়। এরপর যখন তাঁদের সেই ধান নেওয়া হয়ে যাবে, তখন তা সবুজ খাতায় তুলে দিতে হবে। আর হলুদ খাতায় থাকবে, যে সব আড়তদাররা চাষিদের ঠকিয়ে কম দামে ধান দিতে বাধ্য করছে, তাদের নাম।