ফুলবদলের পথে বিজেপি বিধায়ক চন্দনা? বিষ্ণুপুরে আজই শুভেন্দু

Chandana Bauri: একা চন্দনা নন, বাঁকুড়ার আরও বেশ কিছু বিধায়ককে এমনই চাপ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর এমনই অভিযোগ তুলেছিলেন খোদ শুভেন্দু অধিকারী।

ফুলবদলের পথে বিজেপি বিধায়ক চন্দনা? বিষ্ণুপুরে আজই শুভেন্দু
চন্দনা বাউড়ি, ছবি: ফেসবুক
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2021 | 2:41 PM

বাঁকুড়া: আবারও কি ঘর ভাঙছে বিজেপির? ফুলবদল করতে পারেন শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি? সম্প্রতি, ব্যক্তিগত চাপানউতোরের জেরে চর্চায় এসেছেন চন্দনা। ঘনিষ্ঠ সূত্রে চন্দনা জানিয়েছেন, শাসক শিবিরের তরফ থেকে বিভিন্ন সময়ে চাপ  দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য। যদিও, এই অভিযোগ নতুন নয়। একা চন্দনা নন, বাঁকুড়ার আরও বেশ কিছু বিধায়ককে এমনই চাপ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি নিজেই TV9 বাংলাকে ফোন করে জানান, তিনি কোনও পরিস্থিতিতেই দলবদল করছেন না।

বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর তাঁকে ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানো হয়েছে বলে  অভিযোগ তুলেছিলেন খোদ শুভেন্দু অধিকারী। বাঁকুড়া বিজেপির সাংগঠনিক হাল-হকিকতে নজর দিতে সোমবারই বিষ্ণুপুরে আসছেন শুভেন্দু। এদিনই তাঁর বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের অনুমান ভাঙন রুখতেই রাজ্য বিজেপির তড়িঘড়ি এই পদক্ষেপ।

নিতান্ত সাদামাটা ছাপোষা বলেই বিধায়ক হয়েও তিনি মন জয় করেছিলেন অগুনতি মানুষের। বিধায়ক হওয়ার পর নিজের প্রাপ্য বেতনের অঙ্ক শুনে রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছিল শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনার। TV9 বাংলার প্রতিনিধির থেকেই তিনি জানতে চেয়েছিলেন বেতনের সেই টাকা কী করবেন! সেই শালতোড়ার গৃহবধূই জড়িয়ে পড়েন চরম বিতর্কে। না, রাজনৈতিক বিতর্ক নয়, ব্যক্তিগত বিতর্ক। চন্দনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি নিজের স্বামী-সন্তানকে ছেড়ে গাড়ির চালককে বিয়ে করে নিয়েছেন। শুরু হয় তুমুল হইচই। তারপরেই বিধায়ক ও তাঁর ‘নতুন স্বামী’র বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কৃষ্ণ কুণ্ডুর স্ত্রী রুম্পা।

যদিও চন্দনা দাবি করেন যে বিরোধীরা তাঁর নামে কুৎসা ছড়ানোর জন্যই এসব করছে। এর আগেও বিরোধীরা তাঁর নামে কুৎসা ছড়িয়েছে বলে দাবি করেন বিধায়ক। বিজেপি নেতৃত্বও গোটা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়। রাজ্য বিজেপি সহ-সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যও চন্দনার সুরেই সুর মিলিয়ে জানিয়ে দেন চন্দনার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন।

সম্প্রতি, এই ঘটনায় থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণও করেন চন্দনা। তাঁর আত্মসমর্পণের পরেই এদিন আদালতে হাজির হন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রি শেখর জানা। তিনি স্পষ্টই বলেন, “চন্দনা একজন দরিদ্র পিছিয়ে পড়া গৃহবধূ। তিনি বিধায়ক হয়েছেন এটা মানতে পারছে না শাসক দল। এমনিতেই আমাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে এমনিতেই একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেইজন্য় চন্দনাকেও একইভাবে ফাঁসানো হয়েছে। কৃষ্ণ কুণ্ডু নামে কাউকে আমরা চিনি না। ইচ্ছে করে ওঁকে ফাঁসানো হয়েছে।”

সম্প্রতি, চন্দনা বাউরিকে তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। সরাসরি পুলিশের বিরুদ্ধে  এমন অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন অধিকারী পুত্র। নন্দীগ্রামের বিধায়কের স্পষ্ট অভিযোগ, “চন্দনা বাউরিকে পুলিশ সরাসরি তৃণমূলে যোগ দিতে বলেছে। কিন্তু ভাঙা ঘরে থাকা তফসিলি পরিবারের মহিলা চন্দনা বাউরি আত্মসমর্পণ করেননি। তিনি আগেও বিজেপির সঙ্গে ছিলেন, এখনও বিজেপির সঙ্গেই রয়েছেন। চন্দনাকে পুলিশ সরাসরি বলেছে ‘৬ মাস জেল খাটুন।’ বিজেপির হাজার হাজার কর্মীরা জেলে আছেন কারণ তাঁরা এই মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বিজেপির ঝাণ্ডা ধরেছেন।”

চন্দনার এ বার দলবদলের জল্পনায় কার্যত বিপদের সিঁদুরে মেঘ দেখছে বঙ্গ বিজেপি। একের পর এক এভাবে বিধায়কদের ‘বেসুর’ হওয়ার নেপথ্য় কি কেবল শাসক শিবিরের ‘চাপ’-ই রয়েছে নাকি, এর পেছনে দায়ী বিজেপির সাংগঠনিক পরিকাঠামো? উত্তর খুঁজতে বেশ  বেগ পেতে হচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বকে। বারবার বিধায়কদের সঙ্গে এভাবে বৈঠক করার কারণ যে কিছুটা হলেও দলের অন্দরের রুটম্যাপ তৈরির প্রস্তুতি  তাও মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। আরও পড়ুন: বেতনের টাকা বিলিয়ে দেবেন? খুন্তি নাড়তে নাড়তে বিধায়ক চন্দনা বললেন…