Bankura: সন্তান অন্য কারও, সন্দেহ করত বর… এরপর স্বামীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাচ্চাটার যা অবস্থা করল মা

Bankura: আদালত এই ঘটনাকে বিরল ঘটনা হিসাবেই দেখেছে। নিছক সন্দেহ, ভুল বোঝাবুঝির জেরে এভাবে কেউ সন্তানকে মেরে ফেলতে পারেন, অবাক করে আদালতকেও।

Bankura: সন্তান অন্য কারও, সন্দেহ করত বর... এরপর স্বামীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাচ্চাটার যা অবস্থা করল মা
আইনজীবী অরুণ চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 18, 2022 | 7:21 PM

বাঁকুড়া: এ এক চরম নৃশংসতার কাহিনী। পুত্রসন্তানের জন্ম দেন বড়জোড়া থানা এলাকার মোহনপুরের সুতিকা মণ্ডল ও সুজিত মণ্ডল। ঘটা করে ছেলের নাম রাখেন সরগম। মা-বাবার জীবনে নতুন ছন্দ নিয়ে আসে এই একরত্তি। অভিযোগ, কয়েকদিন যেতে না যেতেই সন্তান নিয়ে সুজিতের মনে নানারকম প্রশ্ন তৈরি হয়। সুজিতের মনে হয়, এই সন্তান তাঁর নয়। স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্কের জেরেই সরগমের জন্ম। এরপরই শুরু হয় সংসারে বিবাদ। অভিযোগ, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে যাতে কোনও ভুল বোঝাবুঝি না থাকে, সে কারণে সরগমকে মেরে ফেলেন তাঁরা। ভয়াবহ এই ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২০ সালে। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। শুরু হয় মামলা। সোমবার সেই মামলার রায়দান ছিল। বাঁকুড়া জেলা আদালতের চতুর্থ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।

আদালত এই ঘটনাকে বিরল ঘটনা হিসাবেই দেখেছে। নিছক সন্দেহ, ভুল বোঝাবুঝির জেরে এভাবে কেউ সন্তানকে মেরে ফেলতে পারেন, অবাক করে আদালতকেও। ২০২০ সালের ৩ মে। বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার মোহনপুর গ্রামে নিজের বাড়িতেই খুন করা হয় সরগম মণ্ডলকে। তখন তার বয়স সাড়ে ৪ বছর। এই ঘটনায় সুজিতের ভাইপো থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। নিছক সন্দেহের বশে এই ঘটনা বলে অভিযোগ করেন তিনি। জানা যায়, দাম্পত্যকলহ থেকে মুক্তি পেতে ওই শিশুকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলেন মা-বাবা। পুলিশের জেলায় সে কথা স্বীকারও করেন তাঁরা।

এরপর শুরু হয় মামলা। বাঁকুড়া জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী অরুণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সুজিত ও সুতিকা বড়জোড়ার মোহনপুরের বাসিন্দা। তাঁদের এক ছেলে হয়। সেই সন্তান নিয়েই শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ। সুজিত স্ত্রীকে গালাগালি করতেন। বলতেন এই ছেলেটা তাঁর নয়। এই নিয়ে ঝামেলা। ২০২০ সালের ৪ মে মা-বাবা সন্তান নিয়ে ঘরেই ছিলেন। পরদিন সকালে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। আত্মীয়রা ঘটনা জানতে চাইলে তাঁরা জানান, ‘ছেলেটাকে আমরা মেরে দিয়েছি’। সুজিতের ভাইপো বড়জোড়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। বড়জোড়া থানায় খবর দেয়। ভাইপো বিশ্বজিৎই থানায় লিখিত জানান।”

শিশুর মৃতদেহের ময়নাতদন্তেও শ্বাসরোধ করে খুনের প্রমাণ মেলে। এরপরই বাঁকুড়া জেলা আদালতে খুনের মামলা শুরু হয়। দু’ বছর ধরে মোট ১৭ জনের সাক্ষ্যপ্রমাণ গ্রহণ করে আদালত। স্বামী-স্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করে। বাঁকুড়া জেলা আদলতের চতুর্থ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।