‘আপনাকে চিঠি লিখেছিলাম, জেলাশাসককেও, উত্তর মেলেনি’, করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীকে পত্রাঘাত অধীরের

কার্যত, পরপর চিঠি লিখেও রাজ্য সরকারের তরফে কোনও উত্তর না পেয়ে মঙ্গলবার রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন অধীর। সম্প্রতি, মুর্শিদাবাদে, ৫০০ শয্য়া বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতাল তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi) চিঠি দিয়েছিলেন বহরমপুরের সাংসদ।

'আপনাকে চিঠি লিখেছিলাম, জেলাশাসককেও, উত্তর মেলেনি', করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীকে পত্রাঘাত অধীরের
'মমতাই বড় দালাল', তোপ অধীরের ফাইল ছবি
Follow Us:
| Updated on: Jun 01, 2021 | 9:06 PM

মুর্শিদাবাদ: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় এসে কোভিড মোকাবিলাই প্রাথমিক কাজ বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো মহামারী মোকাবিলায় কোমর বেঁধে মাঠেও নেমে পড়েছেন তৃণমূল বিধায়ক-কর্মীরা। কিন্তু, বঙ্গ ভোটে যে বিধানসভাগুলি হাতছাড়া হয়েছে সেখানে, সরকার ‘দুয়ারে’ আসেনি বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। সম্প্রতি, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় নন্দীগ্রাম, খেজুরি-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় জেলা প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি অভিযোগ করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন বিরোধী বিজেপি দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ বার মুর্শিদাবাদে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি করতে চেয়ে চিঠি লিখেও মুখ্যমন্ত্রী ও জেলাশাসকের তরফে উত্তর না পাওয়ার অভিযোগ করে পত্রাঘাত করলেন বহরমপুরের সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chaudhuri)।

করোনা মোকাবিলায় মুর্শিদাবাদে একটি অক্সিজেন প্লান্ট করতে চেয়ে এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) ও জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছিলেন অধীর। সে কথা স্মরণ করিয়েই মঙ্গলবার, ফের জেলাশাসক শরৎ কুমার দ্বিবেদীকে একটি চিঠি লেখেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি (Adhir Ranjan Chaudhuri)। চিঠিতে তিনি বলেন, “জেলাশাসক মহোদয়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় মুর্শিদাবাদে অক্সিজেন প্লান্ট করতে চেয়ে আগেও আপনাকে চিঠি লিখেছি। আমার সাংসদ তহবিলে বরাদ্দ অর্থ দিয়েই এই প্লান্ট তৈরি করা হোক এমনটাই আবেদন করেছি। আমি জানি, সাংসদ তহবিলে বরাদ্দ অর্থ যৎসামান্য এবং একটি অক্সিজেন প্লান্ট তৈরিতে যথেষ্ট নয়। সেক্ষেত্রে, দিল্লি থেকে এই খাতে বরাদ্দ অর্থ যাতে প্রাপ্ত হয় এবং দ্রুত কাজ শুরু করা যায়, সেজন্য আপনার অনুমতি প্রয়োজন। আমার আবেদনের ভিত্তিতে মুর্শিদাবাদে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলাপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর তরফে মুর্শিদাবাদ সদর হাসপাতালে একটি অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর তোড়জোড় চলছে। কান্দি হাসপাতালেও যাতে আরেকটি অক্সিজেন প্লান্ট বসানো যায়, সেজন্য আপনার অনুমতি প্রয়োজন। দয়া করে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করলে বাধিত হব।”

এরপর, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও এই মর্মে একটি চিঠি লেখেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা। তিনি লেখেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মহোদয়া, আমি আগেও এই মর্মে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানিয়েছিলাম, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে একটি অক্সিজেন প্লান্ট ও দুটি অক্সিজেন পরিষেবা-সহ অ্যাম্বুলেন্সের ব্য়বস্থা করতে চাই। এ বিষয়ে মাননীয় জেলাশাসককেও আমি চিঠি লিখে জানিয়েছি। কিন্তু, আপনার বা জেলাশাসক কোনও তরফেই উত্তর পাইনি। করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে চলেছে। আপনার কাছে বিনীত অনুরোধ, মানুষের অসহায় পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে এই কঠিন সময়ে বিষয়টি বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ করুন।”

অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি করতে চেয়ে এই প্রথম নয়, গত ২৮মে শুক্রবার, মুখ্যমন্ত্রীকে পত্র প্রেরণ করেন অধীর। ঠিক কী লিখেছিলেন সেই চিঠিতে? কংগ্রেস সাংসদ লেখেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, গত ৩০ এপ্রিল আমি মুর্শিদাবাদ জেলাশাসককে মুর্শিদাবাদে একটি অক্সিজেন প্লান্ট এবং দুটি অক্সিজেন পরিষেবা-সহ অ্যাম্বুলেন্সের ব্য়বস্থা করতে চেয়ে চিঠি লিখি। স্পষ্টই জানাই, আমার সাংসদ তহবিলে বরাদ্দ অর্থ এই খাতে খরচ করা হবে। জেলাপ্রশাসনের তরফে জানানো হয়, বিষয়টি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু, তারপরেও জানা যায়, স্বাস্থ্য ভবন এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। মাননীয়া, আমার আপনার অনুমোদনের প্রত্যাশী।”

কার্যত, পরপর চিঠি লিখেও রাজ্য সরকারের তরফে কোনও উত্তর না পেয়ে মঙ্গলবার রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন অধীর। যদিও, এ বিষয়ে জেলাশাসকের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। নবান্নের তরফেও কোনও উত্তর মেলেনি। সম্প্রতি, মুর্শিদাবাদে, ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতাল তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi) চিঠি দিয়েছিলেন বহরমপুরের সাংসদ। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে করোনার চিকিৎসা করাতে সাধারণ মানুষকে যাতে অসুবিধায় না পড়তে হয়, এই ছিল চিঠির মূল প্রতিপাদ্য। জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়েই মূলত প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন কংগ্রেস নেতা।

আরও পড়ুন: নতুন ভূমিকায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়! মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা হিসাবে কত বেতন পাবেন তিনি? পাবেন আর কী কী সুবিধা?