একটি মেসেজেই কোভিড রোগীর বাড়ির দুয়ারে বিনামূল্যে পৌঁছবে খাবার, মা-মেয়ের নয়া উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে বারাসাতে

পেশায় হাইস্কুল শিক্ষিকা শুভ্রা ও ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠরতা তাঁর মেয়ে ঋদ্ধি দুজনে মিলে শুরু করেছেন হোম-ডেলিভারি। সাধারণত, করোনা আক্রান্ত হলে একান্তবাসে থাকতে হয় রোগী ও তার পরিবারকে। মারণভাইরাসের (Corona Virus) নাশকতার জেরে সেই পরিবারকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে না কেউ। তাহলে তাঁদের খাওয়াদাওয়া চলবে কী করে!

একটি মেসেজেই কোভিড রোগীর বাড়ির দুয়ারে বিনামূল্যে পৌঁছবে খাবার, মা-মেয়ের নয়া উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে বারাসাতে
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Updated on: May 10, 2021 | 11:43 AM

উত্তর ২৪ পরগনা: করোনাজ্বরে কাঁপছে রাজ্য। ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের পারদ ভয় ধরিয়েছে জনতার। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে জীবনের ঝুঁকি বেড়ে গিয়েছে অনেক। মিলছে না শয্যা, ওষুধ, অক্সিজেন। এমনকী কেউ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন শুনলেই সেই ব্যক্তি বা পরিবারকে  একঘরে করে দিচ্ছেন মানুষ। এই পরিস্থিতিতে, করোনা আক্রান্তদের (COVID patients) পাশে দাঁড়ালেন মা-মেয়ে। বারাসাতের নবপল্লির বাসিন্দা শুভ্রা মুখোপাধ্য়ায় ও ঋদ্ধি ভট্টাচার্য। কেউ করোনা আক্রান্ত হলেই বিনামূল্যে রোগীর বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে বাড়িতে তৈরি খাবার। আর এই খাবার পৌঁছতে হোয়াটস্যাপ (WhatsApp) বা ফোনে একটি এসএমএসই কাফি।

পেশায় হাইস্কুল শিক্ষিকা শুভ্রা ও ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠরতা তাঁর মেয়ে ঋদ্ধি দুজনে মিলে শুরু করেছেন হোম-ডেলিভারি। সাধারণত, করোনা আক্রান্ত হলে একান্তবাসে থাকতে হয় রোগী ও তার পরিবারকে। মারণভাইরাসের (Corona Virus) নাশকতার জেরে সেই পরিবারকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে না কেউ। তাহলে তাঁদের খাওয়াদাওয়া চলবে কী করে! এই চিন্তা থেকেই মা-মেয়ে সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা করোনা রোগীর বাড়ি বাড়ি খাবার (Home Delivery) পৌঁছে দেবেন তাও বিনামূল্যে। আর এই খাবার পৌঁছে দেওয়া একদিনের জন্য নয়, যতদিন সম্পূর্ণ সুস্থ না হয়ে ওঠেন করোনা রোগী ততদিন পর্যন্তই চলবে এই খাবার দেওয়া। তবে, শুধু খাবার দেওয়া নয়, প্রয়োজনে ওষুধও পৌঁছে দেবেন ঋদ্ধি শুভ্রা, এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা।

বাড়িতে তৈরি সেই খাবারের মেনুতে কী কী থাকছে? শুভ্রাদেবী জানিয়েছেন, করোনা রোগীর সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবে মেনুতে থাকছে ভাত, ডাল, উচ্ছে আলু ভাজা, শাক, আলু-পটলের তরকারি, আলু পোস্ত, ডিম,মাছ, মাংস। ইতিমধ্য়েই প্রায় জনাকুড়ি পরিবারের কাছে পৌঁছতে পেরেছেন শুভ্রা-ঋদ্ধি। তবে, শীঘ্র এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলেই আশা করছেন তাঁরা। কিন্তু, এত বৃহৎ সংখ্যক মানুষের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছনো, তার খরচ পোষাবেন কী করে? এ প্রসঙ্গে ঋদ্ধির জবাব, তাঁরা একা নন, প্রথমত, এই বৃহৎ কর্মকাণ্ডে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ঋদ্ধির বাবা প্রতীপশঙ্কর ভট্টাচার্য। এছাড়াও, পাড়ার কিছু মানুষ আত্মীয় বন্ধুরা এই কাজে সাহায্য় করছেন। বাড়ি বাড়ি খাবার দেওয়ার কাজটা আপাতত পাড়ার কিছু সহৃদয় যুবকেরাই সামলাচ্ছে। সকলের জন্য রান্নার দায়িত্বটা নিয়েছেন শুভ্রাদেবী নিজেই। সঙ্গী বলতে তাঁদের দিনরাতের কাজের মেয়ে লীলা। হাতে হাতে কাজ এগিয়ে দেওয়ার দায়িত্বটা তাঁরই।

করোনা মোকাবিলায় হয়ত কাছে থেকে রোগী সেবার সুযোগ নেই, তবে মানুষের পাশে থেকে সাহসের অক্সিজেন জোগাচ্ছেন ঋদ্ধি-শুভ্রারা। তাঁরা চান, আতঙ্কে না থেকে সতর্ক হয়ে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ করোনা রোগীদের পাশে এসে দাঁড়ান। মহামারী জয় করতে ‘বেঁধে বেঁধে থাকাই’ একমাত্র সম্বল বলেই মনে করছেন বারাসাতের মা-মেয়ে।

ঋদ্ধি ও শুভ্রাদেবীকে যোগাযোগ করবেন কীভাবে?

যোগাযোগের নম্বর: ৯১৪৩১৫৬৬৭০

হোয়াটস্যাপ নম্বর: ৮৯০২১০৫৮৯৭

আরও পড়ুন: কোভিড আক্রান্ত হলেই মিলবে বিনামূল্যে চিকিৎসা, সুস্থ হলেই ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে দিতে হবে প্লাজমা, শর্তসাপেক্ষে ‘নিজধর্ম’ পালনে রত চিকিৎসক