Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Coal Mining Project: পাচামি-প্রকল্প নিয়ে এখনও বিতর্ক, ৯ বছর পর ফের লোবায় কয়লা শিল্পে তত্‍পর প্রশাসন

Loba Coal Mining Project: ২০১৭ সালে মাটির নীচে কয়লা তোলার বরাত পায় দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন। পরের বছর মার্চের মধ্যেই কাজ শুরু করার কথা ছিল। সে জন্য গঠিত হয় কমিটিও।

Coal Mining Project: পাচামি-প্রকল্প নিয়ে এখনও বিতর্ক, ৯ বছর পর ফের লোবায় কয়লা শিল্পে তত্‍পর প্রশাসন
লোবা কয়লা প্রকল্প, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 01, 2021 | 7:07 PM

বীরভূম: দেউচা-পাচামি প্রকল্প ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে, তখন লোবায় ফের কয়লা-প্রকল্পের কাজে তত্‍পর হল বীরভূম জেলা প্রশাসন। বুধবার, জেলাশাসকের দফতরে এ নিয়ে বৈঠকে বসে কয়লা উত্তোলনের বরাদ্দ পাওয়া ডিভিসি কর্তৃপক্ষ (DVC )। পাচামির পাশাপাশি কত দ্রুত লোবায় জয়দেব খাগড়া কয়লা শিল্প কত দ্রুত করা যায় সেদিকে নজর দিয়েছে প্রশাসন।

বুধবার জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডিভিসি কর্তৃপক্ষ, পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী এবং এসআরডিএ-র চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল। জেলাশাসক বিধান রায় এদিন জানান, জয়দেব খাগরা কয়লা শিল্প নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে নেবে রাজ্য  সরকার। যদিও, লোবার এই প্রকল্প নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি অনুব্রত মণ্ডল।

দেউচা পাচামির মতো আকারে বৃহত্‍ না হলেও জমির দিক থেকে কম কিছু নয় লোবার এই কয়লাখনি। প্রস্তাবিত খনি এলাকার মধ্যে  ফকিরবেড়া, কোটা, লোবা কালীমন্দির সংলগ্ন এলাকা, দেবীপুর, পলাশডাঙার মতো মৌজাগুলিও রয়েছে। প্রায় ৩৩৫৩ একর জমি জুড়ে থাকা এই খনিএলাকায় বসবাসকারী পরিবারগুলি আগে জমি দিতে অস্বীকার করে।  কৃষিজমি রক্ষা কমিটির আন্দোলনের জেরে ২০১২ সালে থমকে গিয়েছিল প্রস্তাবিত কয়লাখনি গড়ার কাজ। আপত্তি তোলা হয়েছিল জমি কেনার পদ্ধতি নিয়েও। খনির জন্য প্রস্তাবিত ৩ হাজার ৩৫৩ একরের জমির মধ্যে প্রায় ৭০০ একর জমি কিনে নিলেও, কাজ থেকে হাত গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয় ডিভিসি-এমটা। পরে সুপ্রিমকোর্ট যে ক’টি কোল-ব্লক বণ্টন অবৈধ বলে ঘোষণা করে, সেই তালিকায় ছিল লোবায় খাগড়া জয়দেব প্রস্তাবিত খোলামুখ কয়লাখনি।

২০১৭ সালে মাটির নীচে কয়লা তোলার বরাত পায় দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন। পরের বছর মার্চের মধ্যেই কাজ শুরু করার কথা ছিল। সে জন্য গঠিত হয় কমিটিও। কিন্তু পুর্নবাসন, ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ কী হবে সে প্রশ্ন দূরে, এলাকার জমির প্রকৃত মালিক কারা সেই সমীক্ষার প্রাথমিক কাজ শেষ হওয়া নিয়েই ধোঁয়াশা ছিল। জমি সমীক্ষার ক্ষেত্রে ‘মাঠ খসড়া’ নিয়ে ধোঁয়াশা ছড়িয়েছিল। পরে নিঃশব্দে স্ট্যাটাস রিপোর্ট তৈরি করা হয়। লোবায় খনির কাজ শুরু করার জন্য তারপরেও একাধিকবার চেষ্টা করেছে সরকার। কিন্তু, সরকারের সেই প্রয়াস আর বাস্তবায়িত হয়নি।

এদিকে, দেউচা পাচামির প্রকল্পের কাজে কোমরবেঁধে লেগেছে রাজ্য সরকার। গতকালই, ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশে দেউচা পাচামির (Deocha Pachami) একাধিক খাদান ঘুরে দেখেন রাজ্য সরকার নিয়োজিত চার সদস্যের বিশেষ প্রতিনিধি দল। এলাকায় কতটা দূষণ হচ্ছে, কয়লা খাদান হলেই বা কতটা দূষণ হতে পারে তা খতিয়ে দেখতেই মঙ্গলবার আধিকারিকরা খনি এলাকায় আসেন। যদিও তা নিয়ে প্রকাশ্যে তাঁরা বিশেষ কিছু বলতে চাননি।

দেউচা পাচামি প্রকল্প চালু হলে, মূলত খনি এলাকায় কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হবে। এরফলে আদিবাসীদের যে জমি ও বাড়ি তা সরকারের অধীনে চলে যাবে। পরিবর্তে যে পুনর্বাসনের প্যাকেজ দেওয়া হবে, তা যথাযথ ও যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন তাঁরা। পাশাপাশি, তড়িঘড়ি ওই এলাকা পরিবরর্তিত হতে পারে আসানসোল-রানিগঞ্জের মতো এক বিরাট শিল্পতালুকে। ফলে, গোটা ভৌগোলিক ও সামাজিক পরিবেশটাই বদলে যেতে পারে। সেদিক থেকে আদিবাসীরা কোথায় যাবেন এই সংশয়টাই তাঁদের কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।

উল্লেখ্য, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনির সন্ধান পাওয়ার সুবাদে বীরভূমের দেউচা পাচামি কোল ব্লক এলাকার নাম এখন অনেকেরই জানা। বীরভূমের দেউচা পাচামি কয়লা খনির কাজ শুরুর বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রায় ১২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত দেউচা পাচামি কোল ব্লক এলাকা। প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ৩০১০টি পরিবার এই খনি অঞ্চলে বসবাস করেন যার মধ্যে ১০১৩টি আদিবাসী পরিবার।

ঘোষিত সরকারি প্যাকেজে বলা হয়েছে, প্রায় ১৭ জন খাদান মালিক বাড়ির দাম ও ক্ষতিপূরণ পাবেন। ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্যাকেজের অধীনে বাড়ি দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের। ওই এলাকায় থাকা বাসিন্দা, যাঁদের বাড়ি সহ জমি রয়েছে, তাঁরা পাবেন ১০ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা। এছাড়া অন্যান্য সুবিধা দিতে আরও পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। এছাড়া বাড়ি বা জমি হারানো অথবা বর্গদাররা পরিবার পিছু জুনিয়র পুলিশ কনস্টেবল পদমর্যাদার চাকরি পাবেন। সব মিলিয়ে এই ত্রাণ পুনর্বাসন প্যাকেজের মোট আর্থিক মূল্য ১০ হাজার কোটি টাকা।

আরও পড়ুন: Sitalkuchi: সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই! শীতলকুচি গুলিকাণ্ডে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছে নিহতদের পরিবার