Kajol Sheikh: কেষ্টহীন বীরভূমে জয়ের ব্যবধান বেড়েছে তৃণমূলের, কাজল শেখের গুরুত্ব কি বাড়ল?
Kajol Sheikh: এই প্রথম অনুব্রত মণ্ডলকে ছাড়াই বীরভূমে ভোট ময়দানে নেমেছিল তৃণমূল। কেষ্টর গুড় বাতাসা, চড়াম চড়াম ভোট ময়দানে গুরুত্ব পেত। এবার এসব কিছুই শোনা যায়নি। তবে কোথাও কোথাও দেওয়াল লিখনে কেষ্টর ছবি আঁকা হয়েছিল। তিহাড় থেকে খেলা হবে লেখা হয়েছিল।

বীরভূম: তিনি তিহাড়ে। নির্বাচনী প্রচারে অবশ্য ঘুরেফিরে তাঁর নাম উঠে এসেছে। এমনকি, দেওয়াল লিখনেও তাঁর ছবি দেখা গিয়েছে। যেখানে লেখা ছিল, তিহাড়ে বসেই খেলা হবে। বীরভূমের সেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতেও জেলায় ঘাসফুলের জয়জয়কার। জেলার দুটি লোকসভা আসনই জিতেছে তৃণমূল। জয়ের ব্যবধানও বেড়েছে। বিরোধীরা তেমনভাবে কামড় দিতে পারেনি। অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে কি তৃণমূলে আরও গুরুত্ব বাড়ছে কাজল শেখের? যিনি এই মুহূর্তে বীরভূম জেলা পরিষদের জেলা সভাধিপতি। দলের জয়ের পর কী বলছেন তিনি?
বীরভূম জেলায় দুটি লোকসভা আসন। বীরভূম ও বোলপুর। তার মধ্যে বীরভূম আসন ২০০৯ সাল থেকে তৃণমূলের দখলে। আর বোলপুর আসনটি ২০১৪ সাল থেকে দখলে রেখেছে রাজ্যের বর্তমান শাসকদল। কিন্তু, এই প্রথম অনুব্রত মণ্ডলকে ছাড়াই বীরভূমে ভোট ময়দানে নেমেছিল তৃণমূল। কেষ্টর গুড় বাতাসা, চড়াম চড়াম ভোট ময়দানে গুরুত্ব পেত। এবার এসব কিছুই শোনা যায়নি। তবে কোথাও কোথাও দেওয়াল লিখনে কেষ্টর ছবি আঁকা হয়েছিল। তিহাড় থেকে খেলা হবে লেখা হয়েছিল।
ভোটের ফল কী বলছে?
বোলপুর আসনে এবারও জিতেছেন অসিত কুমার মাল। তিনি ৮ লক্ষ ৫৫ হাজার ৬৩৩ ভোট পেয়েছেন। জয়ের ব্যবধান ৩ লক্ষ ২৭ হাজারের বেশি। উনিশের নির্বাচনে অসিত কুমার মালের জয়ের ব্যবধান ছিল ১ লক্ষ ৬ হাজারের মতো।
বীরভূম আসনে ২০০৯ সাল থেকে সাংসদ শতাব্দী রায়। এই প্রথম বীরভূমে কেষ্টকে ছাড়া ভোট ময়দানে নেমেছিল তৃণমূল। চব্বিশের নির্বাচনে শতাব্দী পেয়েছেন ৭ লক্ষ ১৭ হাজার ৯৬১ ভোট। জয়ের ব্যবধান ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৬৫০। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে ৯০ হাজারের মতো ব্যবধানে জিতেছিলেন শতাব্দী। দেখা যাচ্ছে, দুই কেন্দ্রেই উনিশের লোকসভা নির্বাচনের থেকে জয়ের ব্যবধান বেড়েছে তৃণমূলের।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে বীরভূমে তৃণমূলের কোর কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কমিটিতে প্রথমে স্থান পাননি কাজল শেখ। পরে তাঁকে কমিটিতে আনা হয়।
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, বীরভূমে তৃণমূলের ভাল ফলের পিছনে কাজলের বড় ভূমিকা রয়েছে। দলের দুই প্রার্থীকে জেতাতে কোমর বেঁধে নেমেছিলেন তিনি। এবার ভোটে এই জেলায় হিংসার বড় কোনও ঘটনা ঘটেনি।
বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় বলছেন, এবার দলের কর্মীরা সজাগ ছিলেন। কোনও উত্তেজনার মুহূর্তে পা দেননি। তাই কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করতে তিনি তিহাড়ে যাবেন বলেও জানালেন।
কী বলছেন কাজল শেখ?
নিজের অবদানের কথা নিজমুখে স্বীকার করতে চাইলেন না কাজল শেখ। বরং তিনি তুলে ধরলেন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা। আর শোনা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। বীরভূমের জেলা সভাধিপতি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের উন্নয়ন করে চলেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, খেটে খাওয়া মানুষকে ভোটের লাইনে দাঁড় করিয়ে দিও, তারা আমাদের ভোট দেবেন। সেটাই হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা তুলে ধরতে বলেছিলেন। সেটাই আমরা করেছি। কাউকে যদি কৃতিত্ব দিতে হয়, তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিতে হবে।” কেষ্ট মণ্ডলের অনুপস্থিতি নিয়ে কোনও কথা না বললেও কাজল শেখ অবশ্য বলছেন, মিথ্যা মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে জেলে রাখা হয়েছে।





