AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Kali Puja 2021: উলঙ্গ হয়ে কাঁটার আসনে বসে এই শ্মশানকালীর আরাধনা করেন বৈষ্ণব পুরোহিত

Birbhum: মৃৎশিল্পী তন্ময় দাস বৈষ্ণব জানান, প্রায় সাড়ে তিনশো বছর ধরে শ্মশানকালীর পুজো চলে আসছে।  একসময় এই এলাকা ঘন জঙ্গল এবং শ্মশান ছিল, যা থেকেই এই কালীর নাম হয়েছে শ্মশানকালী।

Kali Puja 2021: উলঙ্গ হয়ে কাঁটার আসনে বসে এই শ্মশানকালীর আরাধনা করেন বৈষ্ণব পুরোহিত
বীরভূমের সেই শ্মশানকালী, নিজস্ব চিত্র
| Edited By: | Updated on: Nov 02, 2021 | 11:26 PM
Share

বীরভূম: বৈষ্ণব হলেও শাক্তমতেই পূজিতা হন এই দেবী (Kali Puja)। অন্ধকার ঘরে কাঁটার আসনে উলঙ্গ হয়ে বসে পুজো দেন পুরোহিত। সেই পুজো দেখার অনুমতি নেই কারোর। অবাক হচ্ছেন? পাহাড়েশ্বরের শ্মশানকালীর পুজোর নিয়ম খানিক এমনই।

অন্যান্য কালীপুজোর মতো এই কালীরও পুজো হয় অমাবস্যায়। এই কালীমূর্তি সারা বছর মন্দিরে থাকেন, বিসর্জন দুর্গা পুজোর পরের একাদশীতে। মা কালীর নাম শ্মশানকালী হওয়ার নেপথ্যে এলাকায় শ্মশানের অস্তিত্বকেই বোঝায়।

এই দেবীর পুরোহিত তথা মৃৎশিল্পী তন্ময় দাস বৈষ্ণব জানান, প্রায় সাড়ে তিনশো বছর ধরে শ্মশানকালীর পুজো চলে আসছে।  একসময় এই এলাকা ঘন জঙ্গল এবং শ্মশান ছিল, যা থেকেই এই কালীর নাম হয়েছে শ্মশানকালী। ৩৫০-৪০০ বছর আগে হারাধন চক্রবর্তী সুদূর কামাক্ষ্যা  থেকে নিয়ে এসেছিলেন এই কালীমূর্তি। তারপর থেকে বংশপরম্পরায় তারাই পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন। পরবর্তীকালে, ওই হারাধন চক্রবর্তীর পরিবার বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হন। কিন্তু, শাক্তমতেই পুজো হয় দেবীর।

এই দেবীর পুজো যাঁরা করেন তাঁরাই দেবী মূর্তি তৈরি করেন। মূর্তি তৈরি করতে শ্মশান থেকে আনা হয় কাঠ, অঙ্গার, হাড়-সহ অন্যান্য দ্রব্যাদি। মায়ের মূর্তি শুকোনোর জন্য ব্যবহার করা হয় শ্মশানের পোড়া অবশিষ্ট কাঠের জ্বালানি, মায়ের অঙ্গরাগ থেকে শুরু করে যাবতীয় সমস্ত কিছু শ্মশানের সামগ্রী দিয়ে সাজানো হয়।

মায়ের মূর্তির অষ্ট অঙ্গে শ্মশানের হাড় দিয়ে তৈরি করা হয়। এখানে মায়ের প্রতিমার পাশাপাশি থাকেন মায়ের দুই সঙ্গী ডাকিনী ও যোগিনী। বর্তমানে এলাকায় জনবসতি বেড়ে যাওয়ায় শ্মশান সরে গিয়েছে। কালীপুজোর রাতে পুজোর সময় যে  আসন ব্যবহার করা হয় তা আসলে কাঁটার আসন। যিনি পুজো করেন তিনি ওই কাঁটার আসনে বসে থাকেন। অন্ধকার ঘরে মায়ের হোমযজ্ঞ দেখতে পেলেও পুজো দেখার অনুমতি নেই কারোর। বংশপরম্পরাতেই এই রীতি চলে আসছে।

বৈষ্ণব হলেও যেহেতু তন্ত্র মতে পুজো হয়, তাই এর উপাচারও তন্ত্রমতেই পালিত হয়। দেবীর ভোগের জন্য নিবেদিত হয় চ্যাং মাছ পোড়া  ও কারণবারি অর্থাত্‍ মদ। মন্দিরের পাশেই রয়েছে একটি জলকুণ্ড। পাহাড়ি-পাথরময় পরিবেশে ওই কুণ্ডের কাছে দুই ফুট মাটি খোঁড়া হলেই জল পাওয়া যায়। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে মায়ের মূর্তি তৈরি হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই জল শুকিয়ে যায়।

পুজোর দায়িত্ব এলাকার ওই বৈষ্ণব পরিবার থাকলেও বিসর্জনের দায়িত্বে থাকেন এলাকার দাস পরিবাররা। শ্মশান কালী বিসর্জন হয় দুর্গাপুজোর দশমীর পরের দিন অর্থাৎ একাদশীর দিন। বিসর্জন ঘিরে একাদশীর দিন এলাকার দাস পরিবারের মধ্যে দেখা যায় আলাদা উৎসাহ-উদ্দীপনা, বাড়িতে বাড়িতে ভিড় জমান আত্মীয় স্বজনেরা। তবে একাদশীতেই একমাত্র দাস পরিবার মায়ের বিসর্জনের অনুমতি পান। তাই এই দিনটি তাঁদের কাছে আলাদা আনন্দের।

আরও পড়ুন: Kali Puja 2021: এখানে মশাল জ্বালিয়ে আসেন পুরোহিত, স্বহস্তে এই কালীর পুজো দিতেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র