ইসির গোপনীয়তা ফাঁস! প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত সদস্যকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ বিশ্বভারতীর

VBU: শুক্রবার, বিশ্বভারতী (VBU) কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে দুলালবাবুকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ও বিভিন্ন আন্দোলনে যেমন পেনশনভোগীদের আন্দোলনে সামিল হওয়ার মতো নানা ঘটনায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন অভিযুক্ত কর্মসমিতির সদস্য।

ইসির গোপনীয়তা ফাঁস! প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত সদস্যকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ  বিশ্বভারতীর
অলঙ্করণ : অভিজিত্‍ বিশ্বাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 27, 2021 | 6:52 PM

বীরভূম: ফের নয়া বিতর্কে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (VBU)। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি তথা এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য় হয়ে সংবাদমাধ্যমে ‘মুখ খোলা’ ও পেনশনভোগীদের আন্দোলনে সামিল হওয়ার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মনোনীত সদস্য দুলাল চন্দ্র ঘোষকে চিঠি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। অভিযোগ, দুলালবাবু কর্মসমিতির গোপনীয়তা নষ্ট করেছেন।

শুক্রবার, বিশ্বভারতী (VBU) কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে দুলালবাবুকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ও বিভিন্ন আন্দোলনে যেমন পেনশনভোগীদের আন্দোলনে সামিল হওয়ার মতো নানা ঘটনায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন অভিযুক্ত কর্মসমিতির সদস্য। ফলে কর্মসমিতির গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হয়েছে। ফলে, কর্মসমিতির গুরুত্ব নষ্ট হয়েছে। তাই দুলালবাবুকে পরবর্তী কর্মসমিতির বৈঠকে ক্ষমা চাইতে হবে। নয়ত,তাঁকে আর বৈঠকে থাকতে দেওয়া হবে না।

পাল্টা, প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত কর্মসমিতির সদস্য দুলাল চন্দ্র ঘোষ বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত সদস্য। আমাকে এভাবে চিঠি পাঠানো কতটা আইনসম্মত সেটা ভাবার বিষয়। এমনিতেও, চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত কর্মসমিতির সদস্য়ের মেয়াদ রয়েছে আমার। তবে উপাচার্যের এই তিরস্কার আমার কাছে পুরস্কারের সমান। ওঁর বিরুদ্ধে কথা বললেই ওঁ এইধরনের পদক্ষেপ করে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থে আমি উপাচার্যের পক্ষপাতিত্ব মেনে নিইনি। তাই আমার এই শাস্তি। তবে এই চিঠি কর্তৃপক্ষ আমায় দিতে পারেন না। এটি সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। আমি এই চিঠির উত্তর প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনকে জানাবো।”

সম্প্রতি, কর্মসমিতির বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন দুলালচন্দ্র ঘোষ। অনুপস্থিতির কারণ নিজেই জানিয়ে বলেছিলেন, “ইসি বৈঠকে উপাচার্য কারোর কথাই শোনেন না। নিজের মতো বৈঠক নিয়ন্ত্রণ করেন ও সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। উপাচার্যের স্বৈরতন্ত্র মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।” কর্মসমিতির বৈঠকে উপাচার্যের ‘স্বৈরতন্ত্রের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার পরেই কার্যত .তাঁকে এই চিঠি দেওয়া হয়। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এ হেন পদক্ষেপ নতুন কিছু নয়। বিরুদ্ধস্বর হলেই অধ্যাপক-পড়ুয়াদের সাময়িক বরখাস্ত বা শো-কজ নোটিস দিয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্বভারতীর তিন ছাত্রছাত্রীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে ক্রমেই তীব্র হচ্ছে আন্দোলন। নিন্দায় সরব হচ্ছেন রাজ্যের শিক্ষক-ছাত্র মহলের বড় অংশ। যাদবপুর, উত্তরবঙ্গ, কল্যাণী, প্রেসিডেন্সি-সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও অধ্যাপক সংগঠনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা ও পড়ুয়াদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। পড়ুয়াদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা)। পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, ‘‘আমরা মনে করি ছাত্রদের বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র প্রতিহিংসামূলক আচরণ নয়, এর মধ্যে স্বাধীন মুক্ত চিন্তার স্বরকে ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্রও রয়েছে। অবিলম্বে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বাতিল করে সমস্ত পড়ুয়াদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”

ইতিমধ্যেই এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ ও ধিক্কার কর্মসূচি পালন করেছে এসএফআই। খোদ বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নিদান উপাচার্য বিদ্যুত্‍ চক্রবর্তীকে তিনদিন ঘেরাও করা হবে। সেখানে, অধ্যাপক-পড়ুয়াদের সঙ্গে থাকবে তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরাও। যদিও সম্পূর্ণ ঘটনায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। আরও পড়ুন: ‘দার্জিলিঙের গর্ব বিক্রি করতে চলেছে বিজেপি সরকার’, টয় ট্রেন নিয়েই পথে অনীত